পালঘরে সাধুবাবা হত্যায় নেই কোনও মুসলিম যোগ , তথ্য দিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি মন্ত্রীর

  • পালঘরে গণহত্যার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার ১০১
  • ধৃতদের মধ্যে কোনও মুসলিম ধর্মাবলম্বী নেই
  • নাম প্রকাশ করে দাবি করল মহারাষ্ট্র সরকার
  • ঘটনার তদন্তে নেমেছে  সিআইডির অপরাধ দমন শাখা

Asianet News Bangla | Published : Apr 22, 2020 9:40 AM IST / Updated: Apr 22 2020, 03:14 PM IST

করোনা আতঙ্কের মধ্যেই সম্প্রতি একটি ঘটনা দেশজুড়ে আলোড়ন তুলেছে।  গত সপ্তাহে মহারাষ্ট্রের পালঘরে গণহত্যায় মৃত্যু হয় ৩ জনের। এঁদের মধ্যে ২জন ছিলেন সাধু এবং একজন তাঁদের গাড়ির চালক। নিহত  সাধুদের মধ্যে একজনের বয়স ছিল ৭০ বছর। বিষয়টি সামনে আসতেই কড়া প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। 

পালঘর গণহত্যার একাধিক ভিডিও ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ন্যাক্কারজনক এই ঘটনা দেখে আতঙ্কে  শিউরে উঠছেন সকলেই। জানা যায়, ছেলেধরা ও কিডনি পাচারকারী সন্দেহে দুই সাধু ও তাঁদের গাড়ি চালকে রীতিমত পিটিয়ে মেরে ফেলে গ্রামবাসী। বিষয়টি নিয়ে তৎপর হয়ে ওঠে কেন্দ্রীয় সরকারও। খোদ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের কাছে রিপোর্ট তলব করেন। অনেকেই আবার এই ঘটনায় ধর্মীয় বিদ্বেশের রূপ দেখছিলেন। অভিযোগ ওঠে, সাধুদের পিটিয়ে মারার পিছনে থাকতে পারে মুসলিমদের হাতও। কিন্তু বুধবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ স্পষ্ট করে দেন এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ধৃতদের মধ্যে কোনও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ নেই।

আরও পড়ুন: ফের কোরনা যোদ্ধাদের উপর হামলা, পুলিশ বাহিনীর দিকে ইঁট ছুঁড়ল উন্মত্ত জনতা, দেখুন ভিডিও

পালঘর গণহত্যার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১০১ জনকে গ্রেফতার করেছে মহারাষ্ট্র পুলিশ। তাঁদের মধ্যে কেউই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ নন বলেই জানান মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। উল্টে অনিল দেশমুখ দাবি করেন, ঘটনায় যাঁরা মারা গিয়েছেন এবং যাঁরা সেদিন আক্রমণ চালিয়েছিলেন, সকলেই একই ধর্মাবলম্বী। তাই এই ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রঙ দেওয়া উচিত নয়। 

 

 

দেশের মধ্যে এখনও পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সংক্রমণের শিকার ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। এই অবস্থায় রাজনীতি না করে সম্মিলিতভাবে করোনাভাইরাসের মোকাবিলা করার কথাও বলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। 

গত ১৬ এপ্রিল রাতে মুম্বই থেকে ধাবাড়ি-খানবেল হাইওয়ের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় আদিবাসী গ্রাম গড়চিঞ্চোলের মানুষ একটি গাড়িকে আটকায়। গাড়িটিতে ছেলেধরা রয়েছে, এই সন্দেহের বশে আরোহী তিন জনকে টেনেহিঁচড়ে বের করে এনে বেধড়ক মারধর করা হয়। ছলে ইট ও পাথর বৃষ্টি। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদেরও আক্রমণের শিকার হতে হয়। 

আরও পড়ুন: আক্রান্ত্রের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়েছে, দেশবাসীর খোঁজ নিতে এবার সরাসরি ফোন করবে কেন্দ্র

গণপিটুনির ঘটনায় মারা যান ৭০ বছরের মহন্ত চিকনে মহারাজ ও ৩৫ বছরের সাধু সুশীলগিরি মহারাজ এবং তাঁদের গাড়ির চালক ৩০ বছরের নীলেশ তেলগাদে। তারপর থেকে রাজ্যে বিরোধী আসনে বসা বিজেপি মহারাষ্ট্র সরকারকে চাপে রাখার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সিআইডির বিশেষ দল। 

এর আগেও  অবশ্য গড়চিঞ্চোলের বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে একাধিকবার হামলার অভিযোগ উঠেছে। একবার এখানে  এক মেডিক্যাল ক্যাম্প করে ফেরার সময় চার পুলিশকর্মীকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়েছিল। লকডাউনের সময়ে খাবার দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন সমাজকর্মী ড. বিশ্বাস বলভি। তাঁর টিমকে বাঁচাতে আক্রান্ত হয় পুলিশও। শুধু তাই নয়, এপ্রিলের শুরুতেই দাদরা ও নগরহাভেলি থেকে ফেরার পথে গড়চিঞ্চোলেই গ্রামে আক্রান্ত হয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের গাড়ি।

Share this article
click me!