সুদানের পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রধাননন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আটকে পড়া তিন হাজার ভারতীয়কে উদ্ধারে জোর।
হিংসায় উন্মত্ত সুদানের পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন প্রধাননন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই বৈঠকের পরই মোদী সুদানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়তে সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর মূল্যায়নও করেছেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সুদানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন তিনি। বৈঠকে ছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, সুদানে ভারতের রাষ্ট্রদূত ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
বৈঠকের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী সুদানের সাম্প্রতিকতম উন্নয়নগুলি মূল্যালয়ন করেছেন। বর্তমানে সুদানে রয়েছে প্রায় ৩ হাজার ভারতীয়। যাদের নিরাপত্তা নিয়েই এদিন মূল আলোচনা হয়। সুদানের অস্থিরতা তৈরি হওয়ার পর এটাই ছিল ভারতের প্রথম বৈঠক। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বর্তমানে গয়ানা সফরে রয়েছেন। সেখান থেকেই তিনি বৈঠকে যোগ দান করেন।
ভারত জানিয়েছে, সুদানের পরিস্থিতি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ। ভারত বর্তমানে এই দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তার দিকে মনোনিবেশ করেছে। দ্রুত তাদের সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ যাতে শুরু করা যায় তার দিকে জোর দেওয়া হচ্ছে। গত সপ্তাহেই সুদানে দুই পক্ষের গুলির লড়াইয়ে মাঝে পড়ে এক ভারতীয় মৃত্যু হয়েছিল। ভারতীয় মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
প্রধানমন্ত্রী সমস্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। গোট পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ করতে এবং সুদানে ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তার ক্রমাগত মূল্যায়ন করতে এবং তাদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা করতে পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, দ্রুত ভারতীয়দের সরিয়ে নিয়ে আসার জন্য কী কী পদক্ষেপ জরুরি তা নিয়ে একটি ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করতে। পাশাপাশি বিকল্প পথেরও সন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সুদানের প্রতিবেশী দেশদগুলির মাধ্যমেও ভারতীয় নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
এই বৈঠকের আগেই বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও দুতেরেসের সঙ্গে সুদানের ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, সুদানের পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ। সেই দেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের সরিয়ে নেওয়ার ওপরেও তিনি জোর দিয়েছেন।
অন্যদিকে ইতিমধ্যেই সুদানের যুদ্ধের কারণে নিহত হয়েছে প্রায় ৩০০ জন। রমজানের কারেই কিছুদিনের জন্য যুদ্ধ বিরতিতে রাজি হয়েছে মার্কিন সেনা। সায় দিয়েছে প্রতিপক্ষ সুদানের নেতাও। সুদানের রাজধানী খার্তুম ঘনবসতিপূর্ণ জেলাগুলিতে বিমান হানার শুরু হয়েছে। ট্যাঙ্ক থেকেও অবিরত গুলিবর্ষণ হচ্ছে। সুদানের বেশিরভাগ এলাকাই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে খাদ্য ও পাণীয় জলের। ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। স্বাস্থ্য পরিষেবাও বিপর্যস্ত । সুদানের বেশ কিছু হাসপাতালে ক্রসফায়ার শুরু হয়েছে। খার্তুম ও প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে ৭০ শতাংশ হাসপাতালে পরিষেবা বিপর্যস্ত।