'গোটা দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ', পয়গম্বর বিতর্কে কড়া ধমক নূপুর শর্মাকে

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেছেন, 'আমরা দেখেছি যে কীভাবে তাঁকে উসকানি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি যেভাবে এই সব বলেছেন ও বারবার বলেছেন তারজন্য তাঁর পুরো দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ।' 

Saborni Mitra | Published : Jul 1, 2022 7:10 AM IST

নবী মহম্মদ বিতর্ক নিয়ে দেশ জুড়ে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল তারজন্য সুপ্রিম কোর্ট বিজেপির সাসপেন্ড হওয়ার মুখপাত্র নূপুর শর্মাকেই দায়ি করেছেন। তিনি বলেছেন পুরো দেশের কাছে এই মন্তব্যের জন্য নূপুর শর্মার ক্ষমা চাওয়া উচিৎ। বিচারক বলেছেন, 'যেভাবে এই মহিলা সারাদেশে আবেগের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন তার জন্য তিনি একাই দায়ি।'

জুন মাসের শুরুকে টিভিতে একটি বিতর্কের সময় নূপুর শর্মার  পয়গম্বর নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। যার প্রভাব পড়ে গোটা দেশে। একটি সম্প্রদায় তীব্র প্রতিবাদ জানায়। কখনও সেই প্রতিবাদ হিংসার রূপ নেয়। পয়গম্বর নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকটি উপসাগরীয় দেশ ভারতীয় কূটনীতিকদের তলব করে তিরস্কার করেছে। 

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেছেন, 'আমরা দেখেছি যে কীভাবে তাঁকে উসকানি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি যেভাবে এই সব বলেছেন ও বারবার বলেছেন তারজন্য তাঁর পুরো দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ।' তিনি আরও বলেন নূপুর শর্মা একজন আইনজীবী- তারপরেও তাঁর এজাতীয় মন্তব্য খুবই লজ্জাজনক। 

অন্যদিকে এই মন্তব্যের জন্য নূপুর শর্মা তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়ার একাধিক এফআইআর দিল্লিতে স্থানান্তরিত করার জন্য আদালতকে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি এই পিটিশন প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে বিচারকরা কটাক্ষ করে বলেছেন, 'তিনি হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। কিন্তু তিনি নিজেই নিরাপত্তার জন্য একটি হুমকি স্বরূপ।' আদালত "সম আচরণ" এবং "কোন বৈষম্য নয়" বিষয়ে নূপুর শর্মার যুক্তি খারিজ করে দিয়েছে। বিচারকরা আরও বলেছন নূপুর শর্মাকে লক্ষ্যে করে, যে তিনি যখন অন্যের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন তখন তারা দ্রুত গ্রেফতার হয়ে যায়। কিন্তু এটি যখন তাঁর বিরুদ্ধে হয় তখন পুরোপুরি উল্টো হয়। নূপুর শর্মাকে স্পর্শ করার সহস কেউ পায়না বলেও জানিয়েছে আদালন। আদালত এটাই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, নূপুর শর্মা যদি মনে করেন তিনি ক্ষমতাসীন দলের মুখপাত্র হয়ে এজাতীয় মন্তব্য করতেই পারেন - দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা না রেখে- তা মেনে নেওয়া হবে না। 

অন্যদিকে নূপুর শর্মার আইনজীহী জানিয়েছেন, টিভি বিতর্কের সময় সঞ্চালকের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন তাঁর মক্কেল। তারপরিপ্রেক্ষিতে আদালত জানিয়েছেন নূপুর শর্মা বিতর্কিত মন্তব্য না করে টিভি চ্যালেনের সঞ্চালকের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারতেন। আদালত জানিয়েছে গণতন্ত্রে প্রত্যেকের কথা বলার অধিকার রয়েছে। গণতন্তের ঘাস জন্মানোর যেমন অধিকার রয়েছে তেমনই গাধারও ঘাস খাওয়ার অধিকার রয়েছে। 

আদালত আরও জানিয়েছে, নূপুর শর্মার মন্তব্য পুরোপুরি দায়িত্বজ্ঞানহীন। কোনও প্রভাব পরিণতির কথা চিন্তা না করেই এজাতীয় মন্তব্য করেছেন তিনি। তাই সাংবাদিকের আচরণের সঙ্গে এক করে তাঁকে দেখা যাবে না। 
 

Read more Articles on
Share this article
click me!