সাধারণ মানুষ হিসেবেই রাহুল গান্ধী ওয়েনাড যেতে পারেন আগামী মঙ্গলবার। কথা বলবেন স্থানীয়দের সঙ্গে। রাহুলের সফর নিয়ে মুখে কুপুল স্থানীয় কংগ্রেসের।
সুরাট আদালতের রায়ের পরই চলে গেছে তাঁর সাংসদ পদ। এখন আর সাংসদ নন রাহুল গান্ধী। কিন্তু তাঁরই পুরনো লোকসভা কেন্দ্র কেরলের ওয়েনাডের মানুষদের তিনি যে ভোলেননি তা আরও একবার প্রমাণ করতে সাধারণ মানুষ হিসেবেই তাঁদের সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কংগ্রেকস নেতা রাহুল গান্ধী। কংগ্রেস সূত্রের খবর আগামী ১১ এপ্রিল অর্থাৎ আগামী মঙ্গলবার রাহুল গান্ধী ওয়েনাড যাবেন।
গত ২৩ মার্চ সুরাটের আদালতের রায়ে চার বছরের পুরনো মানহানি মামলায় রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তারপর তাঁর সাংসদ পদ খারিজ হয়ে যায়। রায় ঘোষণার মাত্র এক দিন পরেই রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ হয়ে গেছে জানিয়েছে পার্লামেন্টের সচিবালয় থেকে বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরই মধ্যে অবশ্য যমুনা থেকে অনেক জল বয়ে গেছে। কারণ সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার পরেই রাহুল গান্ধীকে সাংসদ কোটা থেকে পাওয়া তাঁর বাসভবন ছাড়তে নোটিশ পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। যাইহোক এই অবস্থায় গুজরাটের সুরাটের সেশন কোর্টে নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে দ্বারস্থ হয়েছেন রাহুল। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৩ এপ্রিল। অর্থাৎ তার আগেই কেরলের ওয়েনাড সফর করবেন রাহুল।
কংগ্রেস সূত্রের খবর রাহুল গান্ধী সম্ভবত ১১ এপ্রিল ওয়েনাড যাবেন। জেলা কংগ্রেস রাহুলের সফরসূচি চূড়ান্ত করবে। রাহুল কোথায় থাকবে তারও ব্যবস্থা করবে জেলা কংগ্রেস। যদিও জেলা কংগ্রেসের সদস্যরা এই বিষয়ে এখনও মুখ খুলতে রাজি নন। সূত্রের খবর মাত্র এক দিনের জন্যই রাহুল গান্ধী ওয়েনাড যাবেন। সেখানে তিনি স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলতে পারেন বলেও সূত্রের খবর। পাশাপাশি এলাকার কংগ্রেসের নেতা কর্মীদের সঙ্গেও তিনি বৈঠক করবেন বলে সূত্রের খবর।
যদিও রাহুল গান্ধী তাঁর সাংসদ পদ খারিজ হয়ে যাওয়ার পরে বলেছিলেন ওয়েনাডের মানুষ তাঁর পরম আত্মীয়ের মত। তিমি সর্বদাই তাদের পাশে থাকবেন। রাহুল গান্ধী বলেছিলেন যে কোনও পরিস্থিতিতে তিনি ওয়েনাডের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। এবার নিজের প্রতিশ্রুতি পুরণ করেতেই আগামী মঙ্গলবার রাহুল গান্ধী ওয়েনাড যেতে পারেন বলেও সূত্রের খবর।
চার বছরের পুরনো মানহানি মামলায় গতকাল অর্থাৎ সোমবার সুরাটের দায়রা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাহুল। আদালত জামিন মঞ্জুর করেছে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর। এদিন তিনি সুরাটের আদালতে সশরীরে উপস্থিত হয়েছিলেন। আদালত থেকে বেরিয়েই রাহুল গান্ধী তোপ দাগেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে। তিনি মোদীর নাম না করেই বলেন, 'গণতন্ত্র বাঁচাতে মিত্রকালের বিরুদ্ধে এই লড়াই।' এখানেই থেমে থাকেননি রাহুল গান্ধী তিনি বলেনস গণতন্ত্র বাঁচাতে তাঁর হাতিয়ার হল সত্য। সোমবার আদালত থেকে বেরিয়ে গিয়ে রাহুল গান্ধী একটি টুইট করেন। সেখানেই তিনি নাম না করে নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। কেন্দ্রীয় সরকার স্বাধীনতার 'অমৃতকাল' পালন করছে। কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য এনডিএ জমানায় দেশের অগ্রগতি হয়েছে। যা মানতে নারাজ কংগ্রেস। তাই রাহুলের এই 'মিত্রকাল' মন্তব্য বলেও মনে করছেন অনেকে। সুরাট আদালতের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাহুল গান্ধী তাঁর বোন প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে আদালত কক্ষে প্রবেশ করেছিলেন। যেখানেই তাঁর আবেদনের শুনানি হচ্ছিল। আগামী ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত তাঁর জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। এই মমলার পরবর্তী শুনানিও ১৩ এপ্রিল।