বুধবার ৮৫ বছর পূর্ণ করলেন ভারতের অন্যতম বিখ্যাত শিল্পপতি রতন টাটা। জন্মদিনে অসংখ্য মানুষ শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ।
দেশের অন্যতম সফল শিল্পপতি রতন টাটা। কয়েক দশক ধরে তিনি বহু চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করেছেন। কিন্তু কোন ঘটনাটিকে তিনি ব্যবসায়িক জীবনের সবচেয়ে সফল মুহূর্ত বলে মনে করেন? এক সাক্ষাৎকারে রতন টাটা জানিয়েছেন, 'আমার জীবনে অনেক কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল জাগুয়ার, ল্যান্ডরোভার অধিগ্রহণ করা। আমরা এই অধিগ্রহণ সম্পূর্ণ করার পরেই ইউরোপের অর্থনীতিতে ধস নামে। তখন আমাদের অনেকেই বলেন, বোকার মতো কাজ করেছি। ফোর্ড সংস্থা ৮ বছর ধরে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও সফল হতে পারেনি। আপনারা ভারতীয় অটোমাবাইল সংস্থা কী করবেন? কভেন্ট্রিতে যেখানে কারখানা, সেখানে রটে গিয়েছিল, আমরা এই কারখানা বন্ধ করে দিয়ে সেটিকে তন্দুরি চিকেন রেস্তোরাঁয় বদলে দেব। ইংল্যান্ডে সেই সময় এরকম গুজব রটে গিয়েছিল। আমি বুঝতে পারছিলাম না কী করব। কীভাবে এই সমস্যার মোকাবিলা করব বুঝতে পারছিলাম না।'
নতুন অধিগ্রহণ করা সংস্থার কর্মীদের সঙ্গে প্রথম দিনের বৈঠক প্রসঙ্গে রতন টাটা জানিয়েছেন, ‘আমি প্রথম যেদিন জাগুয়ারের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করতে যাই, তখন টাউন হলে সব কর্মীকে আসতে বলি। তাঁদের যত প্রশ্ন ছিল, সবকিছুর জবাব দেওয়ার জন্য তৈরি ছিলাম। সবারই প্রশ্ন ছিল, আপনারা কী করতে চলেছেন? আপনারা কি কারখানা বন্ধ করে দেবেন? কয়েক হাজার কর্মীর ভবিষ্যৎ কী? সেই সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন গর্ডন ব্রাউন। তিনি আমাদের সাহায্য করতে তৈরি ছিলেন। কিন্তু ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যরা জাগুয়ার, ল্যান্ডরোভার সংস্থার ব্রিটিশ কর্মীদের চাকরি সুরক্ষিত রাখা ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে ভাবছিলেন না। তাঁরা যে নিজেদের অর্থনীতিরই ক্ষতি করছিলেন, সেটা ভাবছিলেন না। যাই হোক, প্রথম দিন জাগুয়ারের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রশ্নবাণের মুখে আমি জানাই, আমাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসঙ্গে এই ব্র্যান্ডকে পুরনো গৌরবময় জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমার সেই কথা শুনে সবাই একসঙ্গে কাজ শুরু করেন এবং সংস্থাকে নিজের পায়ে দাঁড় করান। আমি শুধু কর্মীদের আত্মবিশ্বাস দিয়েছিলাম।’
রতন টাটা আরও জানিয়েছেন, প্রাথমিক সাফল্যের পর ফের সমস্যায় পড়তে হয়েছে জাগুয়ার-ল্যান্ডরোভারকে। ব্রিটিশ সরকার যখন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, সেই সময়ও কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয়। কিন্তু সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারাই তাঁর কাছে সবচেয়ে সন্তোষজনক ব্যাপার।
আরও পড়ুন-
সোনা ও রূপোর দাম বাড়ল না কমল,দোকানে কিনতে যাওয়ার আগে জানুন কলকাতার দর