
ফের স্কুল পড়ুয়ার আত্মহত্যা
কয়েকদিন আগেই স্কুলে ক্রমাগত হেনস্থার শিকার হয়ে মেট্রোরেলের লাইনে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এক পড়ুয়া। এবার জয়পুরে নীরজা মোদী স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির এক পড়ুয়া স্কুলের পঞ্চম তল থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এই পড়ুয়াও স্কুলে হেনস্থার শিকার হয়ে জীবন শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় স্কুলকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠিয়েছে সিবিএসই।
স্কুলেই হেনস্থার শিকার পড়ুয়ারা
১ নভেম্বর জয়পুরের এই স্কুলে পড়ুয়ার আত্মহত্যার পর ৩ নভেম্বর স্কুল পরিদর্শনে যায় সিবিএসই-র দুই সদস্যের কমিটি। এই কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, স্কুলে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গলদ রয়েছে। পড়ুয়াদের উপর নজরদারিও ঠিকমতো হয় না। স্কুলে পড়ুয়াদের হেনস্থা রোখার জন্যও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেই। এমনকী, শিক্ষক-শিক্ষিকারাও অনেক সময় পড়ুয়াদের হেনস্থা করেন, অন্য কেউ হেনস্থা করলে বাধা দেন না।
স্কুলে হেনস্থা বাড়ছে
প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল পর্যন্ত সব স্তরেই পড়াশোনার চাপ বাড়ছে। ভালো ফলের জন্য ছোটবেলা থেকেই পড়ুয়াদের উপর চাপ, পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা বাড়ছে। এরই মধ্যে সুযোগ পেলেই কাউকে হেনস্থা করার প্রবণতাও বাড়ছে। শুধু পড়ুয়াদের মধ্যেই নয়, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যেও হেনস্থা করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। অনেক সময় শিক্ষক-শিক্ষিকারাই পড়ুয়াদের হেনস্থা করছেন বা হেনস্থায় প্রশ্রয় দিচ্ছেন।
স্কুলে মানসিক স্বাস্থ্য অবহেলিত
সিবিএসই ও সিআইএসসিই স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখার জন্য পূর্ণ সময়ের কাউন্সেলর, ওয়েলনেস টিচার রাখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু বাস্তবে তা দেখা যায় না। অনেক স্কুলেই কাউন্সেলর, ওয়েলনেস টিচার নেহাতই খাতায়-কলমে। কোনও পড়ুয়ার মৃত্যু হলে কয়েকদিন হইচই হয়, তারপর আবার আগের মতোই মানসিক স্বাস্থ্য অবহেলিত হতে থাকে।
পড়ুয়াদের আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২০২৩ সালে সারা দেশে পড়ুয়াদের নথিভুক্ত আত্মহত্যার সংখ্যা ১৩,৮৯২। যা মোট আত্মহত্যার ৮.১ শতাংশ। এই রিপোর্টেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। এর অন্যতম কারণ হল মানসিক সমস্যা ও হেনস্থার শিকার হওয়া।
পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্য অবহেলিত
সিবিএসই-র পরিদর্শক কমিটির রিপোর্টে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, স্কুল কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার দিকে নজর দিচ্ছে না। স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যকে কোনওরকম গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। অনেক স্কুলেই শারীরিক, মানসিক ও আর্থিকভাবে দুর্বল পরিবারের পড়ুয়াদের হেনস্থার শিকার হতে হয়। অনেক সময় শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রকাশ্যে পড়ুয়াদের হেনস্থা ও অপমান করেন। এই অপমান ও হেনস্থা মেনে নিতে না পেরেই অনেক সময় পড়ুয়ারা আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে।