
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। ভারত স্পষ্ট করে জানিয়েছে জঙ্গি হামলা বরদাস্ত করা হবে না। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ করেছে।
ভারত পাকিস্তান দুই দেশই সীমান্তে চরম সতর্কতা জারি করেছে। পহেলগাঁও হামলার পর থেকে পাকিস্তান টানা সীমন্তে যুদ্ধ বিরতি লঙ্ঘন করে উস্কানি ছাড়াই গুলি চালাচ্ছে। পাল্টা জবাব দিয়েছে ভারতও।
এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দফায় দফায় সেনা প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কথা বলছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে। এই অবস্থায় দেখেনিন পাকিস্তানের থেকে অস্ত্রের সংখ্যয় ভারত ঠিক কতটা এগিয়ে।
পরমাণু অস্ত্রের ভাণ্ডারে ভারত এগিয়ে রয়েছে পাকিস্তানের থেকে । বিশ্বে ভারতের স্থান সপ্তমে। আর পাকিস্তান রয়েছে অষ্টমে।
ভারতীয় নৌবাহিনী যথেষ্ট শক্তিশালী। রাশিয়ান উৎপত্তি আইএনএস বিক্রমাদিত্য এবং দেশীয়ভাবে নির্মিত আইএনএস বিক্রান্ত - দুটি কার্যকরী বিমানবাহী জাহাজের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে ভারত সামুদ্রিক আধিপত্য দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করেছে। পাকিস্তানের হাতে নেই এমন কোনও রণতরী।
ভারতের সাবমেরিন বহরে বর্তমানে প্রায় ১৮টি কার্যকরী জাহাজ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে পারমাণবিক শক্তিচালিত অরিহন্ত-শ্রেণীর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সাবমেরিন, কৌশলগত পারমাণবিক প্রতিরোধের জন্য তিনটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সাবমেরিন দ্বারা পরিপূরক, যা পাকিস্তানের সম্পূর্ণরূপে অভাবিত সক্ষমতা তুলে ধরে। পাকিস্তানের হাতে আছে ৫টি।
ভারতের হাতে রয়েছে ১৫০টি জাহাজ। রয়েছে ১৩টি উন্নত গাইডেড-ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী, বিশেষ করে ব্রহ্মোস ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সজ্জিত বিশাখাপত্তনম-শ্রেণীর জাহাজ এবং ১৪টি ফ্রিগেট, যার মধ্যে নীলগিরি-শ্রেণীর নতুন কমিশন করা স্টিলথ ফ্রিগেট আইএনএস নীলগিরি (প্রকল্প ১৭এ) অন্তর্ভুক্ত।
এটি পাকিস্তানের ৯টি ফ্রিগেট এবং কোনও কার্যকরী ডেস্ট্রয়ারের বহরের সংখ্যাকে উল্লেখযোগ্যভাবে ছাড়িয়ে গেছে। পাকিস্তানের নৌ সম্পদের মধ্যে রয়েছে চারটি চীনা-নির্মিত তুঘরিল-শ্রেণীর ফ্রিগেট, যা পুরোনো প্ল্যাটফর্ম দ্বারা সমর্থিত, যা প্রযুক্তিগত পরিশীলিততার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বৈষম্যকে প্রতিফলিত করে।
ভারতের স্থল যুদ্ধের ক্ষমতায় প্রায় ৪,২০১টি প্রধান যুদ্ধ ট্যাঙ্ক (এমবিটি) রয়েছে, বিশেষ করে টি-৯০ ভীষ্ম। পাকিস্তান প্রায় ২,৬২৭টি ট্যাঙ্ক মজুত করে, যার মধ্যে প্রধানত চীনা-উত্পাদিত ভিটি-৪ হায়দার রূপ। ভারতের স্থল বাহিনীর আধুনিকীকরণে আর্টিলারি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারত উন্নত হাউইটজার মোতায়েন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে দেশীয় প্ল্যাটফর্ম এবং আধুনিকীকৃত আর্টিলারি সিস্টেম।
এই সিস্টেমগুলি হল - K-9 বজ্র, একটি স্ব-চালিত হাউইটজার, M777 আল্ট্রা-লাইট হাউইটজার, 72-কিমি বর্ধিত পাল্লার পিনাকা রকেট।
পাকিস্তান সম্প্রতি চীনের তৈরি SH-15 155 মিমি স্ব-চালিত হাউইটজার অন্তর্ভুক্ত করেছে, যা তাদের আর্টিলারি গতিশীলতা বৃদ্ধি করেছে।
ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডারে রয়েছে পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম অগ্নি ক্ষেপণাস্ত্র এবং সুপারসনিক ব্রহ্মোস ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের মতো উন্নত ব্যবস্থা।
পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে সীমিত এবং চীনা প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল, সমতুল্য পরিশীলিততা এবং প্রমাণিত কার্যকারিতার অভাব রয়েছে।
ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেটও পাকিস্তানের থেকে বেশি। ভারত স্থল, নৌ, বায়ু সেনার মধ্যে কৌশলগত একটি আঞ্চলিক ভারসাম্য তৈরি করেছে। ভারত প্রতিরক্ষায় আত্মনির্ভর।
ভারতের তুলনায় পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাজেট অনেকটাই কম। পাকিস্তান আত্মনির্ভর নয়। বরং অনেকটাই নির্ভর করে চিনের ওপর। অন্যান্য দেশের থেকে চিনের ওপরই আস্থা বেশি পাকিস্তানের।