কাশ্মীরে লাগাতার জঙ্গি দমন অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় সেনা। আত অংশ হিসাবে এদিনও নিকেশ হয়েছে একাধিক জঙ্গি। যখন উপত্যকায় বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলি কিছুটা ব্যাকফুটে বলে মনে করা হচ্ছে তখন আচমকাই হুরিয়ত কনফারেন্সের চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিলেন সৈয়দ আলি শাহ গিলানি।
৯০ বছর বয়সি গিলানি একটি সংক্ষিপ্ত অডিও বার্তায় তাঁর ইস্তফার কথা জানিয়েছেন৷ যদিও প্রবীণ এই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার আতমকাই এমন সিদ্ধান্তে অনেকেই অবাক৷ বর্তমানে রাজ্যে হুরিয়ত কনফারেন্সের যা অবস্থা সেকথা বিবেচনা করেই তিনি দল থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কট্টরপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী এই নেতা। তবে বেশ কিছু দিন ধরেই তাঁর শারীরিক অবস্থা ভাল যাচ্ছিল না৷
আরও পড়ুন: ফের উপত্যকায় বড়সড় সাফল্য বাহিনীর, সাতসকালে অনন্তনাগে এনকাউন্টারে খতম ৩ জঙ্গি
২০০৩ সালে হুরিয়ত কনফারেন্সের আমৃত্যু চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত করা হয়েছিল সৈয়দ আলি শাহ গিলানিকে। উপত্যকাকে অশান্ত করার পিছনে হুরিয়তের হাত ছিল বলে একাধিকবার অভিযোগ উঠেছে। তাই দীর্ঘদিন ধরেই হুরিয়ত নেতা ছিলেন নজরবন্দিতে। সোমবার প্রকাশিত অডিও বার্তায় গিলানিকে বলতে শোনা গিয়েছে, 'বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করে আমি হুরিয়ত ছাড়ার কথা ঘোষণা করছি৷' অডিও বার্তার পাশাপাশি দু' পাতার ইস্তফাপত্রও প্রকাশ করেছেন এই হুরিয়ত নেতা৷
বরাবরই পাকিস্তানের সমর্থক গিলানি হুরিয়তের কট্টরপন্থী অংশের নেতৃত্ব দিতেন৷ অন্যদিকে মধ্যপন্থায় বিশ্বাসী অংশের নেতৃত্বে ছিলেন মীরওয়াইজ ওমর ফারুক৷ ২০০৪ সালে তেহরিক-ই-হুরিয়ত নামে একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী দল গঠন করেছিলেন গিলানি৷ জামাত-এ-ইসলামির সঙ্গে মতবিরোধের পর ওই দল গঠন করেন গিলানি৷ তবে ২০১৮ সালে তেহরিকের চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে দিয়ে পুরোপুরি হুরিয়তে মনোনিবেশ করেছিলেন তিনি৷ গিলানির পরে তেহরিক-ই-ইসলামির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন তাঁর ঘনিষ্ঠ আসরফ সেহরাই৷ এবার গিলানি হুরিয়ত ছাড়ার পরেও সেই সেহরাইকেই তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে৷
তবে সৈয়দ আলি শাহ গিলানির দল থেকে পদত্যাগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল। কারণ, কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপ করার পর থেকেই উপত্যকাকে জঙ্গি মুক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে সেনাবাহিনী। সোমবারই ডোডা জেলাকে জঙ্গিমুক্ত ঘোষণা করেছে সেনা। তারপরেই গিলানির এই পদত্যাগ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। এর ফলে কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনও অনেকটাই ধাক্কা খাবে বলে মনে করা হচ্ছে।