শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডে নয়া মোড়। দিল্লি পুলিশের হাতে এসেছে আরও নতুন তথ্য। আফতাব আমিন পুনাওয়ালে সঙ্গে নিয়ে নিহতের দেহের সন্ধানে জঙ্গলে ঘুরছে পুলিস।
শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ডের তদন্ত যত এগিয়ে যাচ্ছে ততই হামসে আসছে হাড়হিম করা তথ্য। একদিকে আফতাব আমিনের সহবাসের সঙ্গী শ্রদ্ধার দেহ যখন গরে পড়ে রয়েছে তখনই তাঁর দিল্লির মেহরাউল্লির ফ্ল্যাটে এসেছেন তাঁর নতুন বান্ধবী। পুলিশ জানিয়েছেন একদিকে দিকে শ্রদ্ধার টুকরো টুকরো দেহ হিমায়িত হচ্ছে ফ্রিজে। তখন অন্য বান্ধবীকে নিজের ফ্ল্যাটে এনে তার সঙ্গে প্রেমালাপ করেছে আফতাব আমিন। কিন্তু এই অবস্থায় বাড়িতে অন্য বান্ধবী বা মেয়েদের নিয়ে আসার পিছনে আমিনের কোনও অসৎ উদ্দেশ্য ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুবলিশ।
দিল্লি পুলিশ আরও জানিয়েছে, আফতাব আর শ্রদ্ধা একসঙ্গে টানা তিন বছর লিভ-ইন করেছেন। তবে শ্রদ্ধাকে হত্যার মাত্র দিন ১৫ আগে একটি ডেটিং অ্যাপের মধ্যমে আফতাব আরও একটি তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছি। সেই তরুণীর সঙ্গে বেশ কয়েকবার দেখাও করেছিল। সেই মহিলাকেই নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে এসেছিল তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মহিলা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্তকিনা তাও দেখা হচ্ছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, শ্রদ্ধা-হত্যাকাণ্ড লুকিয়ে রাখার জন্য আফতাব শ্রদ্ধার ইনস্টাগ্রাম-সহ একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করত। শ্রদ্ধার হয়ে তার বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করত।
অন্যদিকে মঙ্গলবার শ্রদ্ধার হত্যাকারী আফতাবকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লি পুলিশ মেহরাউল্লির জঙ্গলে হানা দেয়। এখনও পর্যন্ত ১২টি দেহাংশ উদ্ধার হয়েছে। সেগুলি শ্রদ্ধার কিনা তা জানতে ফরেন্সিক তদন্তের জন্য পাঠান হয়েছে। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, অবশেষে ১২টি দেহাংশ উদ্ধার হয়েছে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের কাছে দেহের অংশগুলি পাঠান হয়েছে। শ্রদ্ধার বাবার ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে। সবদিক খতিয়ে দেখা হবেয তবে এখনও পর্যন্ত শ্রদ্ধার মুণ্ড উদ্ধার হয়নি।
অন্যদিকে সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর সঙ্গে কথা বলার সময় শ্রদ্ধার বাবা বলেন, এটি লাভ-জিহাদ কিনা তা নিয়েও তাঁর মনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। তাঁর মেয়ে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। তাতেই আফতাব তাঁর মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। গোটা ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে আভিযুক্তের কঠোর সাজার দাবিও তিনি করেছেন। তিনি আরও বলেতেন মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক থাকলেও তিনি আফতাবকে পছন্দ করতে না। হত্যাকারীর সঙ্গে কোনও দিন কথাও বলেননি।
শ্রদ্ধা মুম্বইয়ের বাসিন্দা ছিলেন। আফতাবও সেখানেই থাকতেন। একটি ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে পরিচয়। তারপর প্রেম। পরিবারের অমতেই প্রেমিক-প্রেমিকা দিল্লি চলে আসেন। সেখানে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে লিভ-ইন সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে থাকতে শুরু করেন। দীর্ঘ তিন বছর একসঙ্গে থাকেছিলেন। পুলিশের কথায় বিয়ের জন্য চাপ দেওয়াতেই শ্রদ্ধাকে খুন করে তারও প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। শনিবার তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুনঃ
সহবাসের সঙ্গীকে খুনের পরেও মাথা ঠান্ডা রেখেছিল প্রেমিক, পরিকল্পনা করেই লোপাট করেছিল প্রমাণ
নতুন ফ্রিজ কিনে সহবাস সঙ্গীর দেহের ৩৫টি টুকরো রেখেছিল প্রেমিক, ১৮ দিন ধরে রাত ২টোয় লোপাট হত প্রমাণ