সংক্ষিপ্ত
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, আফতাব শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। কিন্তু খুনের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য শ্রদ্ধার দেহ ৩৫টি টুকরো করেছিল। তা রাখার জন্য একটি ফ্রিজারও কিনেছিল।
দিল্লিতে সহবাসের সঙ্গীকে হত্যায় চাঞ্চল্যকর তথ্য পুলিশের হাতে। প্রেমিক আফতার আমিন পুনাওয়ালা তাঁর প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়াকারকে হত্যা করেছিল। খুনের প্রমাণ লোপাটের জন্য গুগল সার্চ করেছিল। সেখান থেকেই সে পেয়েছিল কী করে ঘর বা অন্য কোনও স্থান থেকে রক্তের দাগ মুছে ফেলতে হয়। পাশাপাশি কী রাসায়নিক ব্যবহার করা যায় - তা নিয়ও গুগল সার্চ করেছিল। তেমনই দাবি করেছে দিল্লি পুলিশ।
শনিবার আফতাব আমিনকে হত্যা করা হয়েছে। আর সোমবারের মধ্যেই রহস্যের কিনারা করা গেছে। আফতাবের সমস্ত ইলেকট্রনিক্স গেজেট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেগুলির পরীক্ষা করা হবে। আফতাবের গুগল ইস্ট্রিও সার্চ করা হয়েছে। ৬ মাস পুরনো হত্যাকাণ্ডের কিনারা করতে দিল্লি পুলিশ আরও কতগুলি বিষয় খোঁজ খবর নিচ্ছে। অন্যদিকে আফতাবকে পাঁচ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতেও নিয়েছে।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, আফতাব শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। কিন্তু খুনের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য শ্রদ্ধার দেহ ৩৫টি টুকরো করেছিল। তা রাখার জন্য একটি ফ্রিজারও কিনেছিল। তবে শ্রদ্ধার দেহ কাটার সময় রক্তপাত হয়। সেই রক্তের দাগ পরিষ্কার করা আর প্রমান নিশ্চিহ্ন করার জন্য রাসায়নিক সম্পর্কে জানতে চেয়ে গুগল সার্চ করেছিল। দিল্লি পুলিশ আরও বলেছিল খুনের পর ঠান্ডা মাথায় সবকিছু পরিকল্পনা করেছিল। শ্রদ্ধাকে খুনের পর লাশ বাথরুমে রেখে দিয়েছিল। তারপর দোকানে গিয়ে ফ্রিজ কিনে এনেছিল। তারপকই শ্রদ্ধার দেহ টুকরো টুকরো করে কেটেছিল।
শ্রদ্ধার শেষ অবস্থান জানতে দিল্লি পুলিশ তার মোবাইল লোকেশনও ট্র্যাক করে। জানতে পারে দিল্লিতেই ছিল ১৮ মে পর্যন্ত। তারপর আর শ্রদ্ধার কোনও সন্ধান পায়নি। সবকিছু দেখেই ১০ নভেম্বর দিল্লি পুলিশ এফআইর করে। তারপরই গ্রেফতার করে আফতাবকে। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, মুম্বইয়ের ডেটিং অ্যাপে প্রথম পরিচয়। তারপর প্রেম। পরিবারের অমতে দুজনেই চলে আসে দিল্লি। কিন্তু বিয়ে নিয়ে নিজেদের মধ্যে সমস্যা তৈরি হয়। তারপরই শ্রদ্ধাকে খুন করে আফতাব।
আরও জেরার পর খুনের কথা স্বীকার করে নেয় আমিন পুনাওয়ালা। জানিয়েছে পুরো ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে কিছু দেহাংশা। যেগুলি ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য পাঠান হয়েছে। খুনের অস্ত্র হিসেবে যে ছুরি ব্যবহার করা হয়েছে সেটিও উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ছুরিটি কোনও একজন প্রশিক্ষিত শেফের বলেও পুলিশের অনুমান। আর সেই কারণে সেই শেফের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি। পুলিশের অনুমান আমিন একা নয়- শ্রদ্ধাকে খুনের সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন জড়িয়ে রয়েছে। তাই ঘটনার আরও তদন্তের প্রয়োজন।
যাইহোক শ্রদ্ধার ফোন মে মাস থেকেই বন্ধ ছিল। তাতেই সন্দেহ হয় তার ভাইয়ের। শ্রদ্ধার ভাই পরিবারের মধ্যে একজন যে দিদির সঙ্গে টানা সম্পর্ক রেখে গিয়েছিল। দিদির ফোন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকাতেই তার সন্দেহ হয়। কারণ যে জানতে দিদির লিভ - ইন পাটনার আমিন শ্রদ্ধাকে মারধর করত। শ্রদ্ধার ভাইই পরিবারের সদস্যদের সব কথা খুলে বলে। সবশুনে গত ৪ নভেম্বর শ্রদ্ধার বাবা বিকাশ মদনওয়াকার মেয়েকে দেখতে বা খোঁজ খবর নিতে দিল্লিতে আসেন। কিন্তু মেহরাউলির যে ফ্ল্যাটের ঠিকানা তার কাছে ছিল সেখানে গিয়ে দেখেন দরজায় তালা ঝুলছে। তারপরই তিনি দেরি না করে পুলিশের দ্বারস্থ হন। মেহরাউলি পুলিশে শ্রদ্ধার নিখোঁজ এমন ডায়েরি করেন।