দাবি ছিল, গত অগস্টে কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদ নিয়ে যত আবেদন জমা পড়েছিল, সেগুলির একত্রে শুনানি হোক সুপ্রিম কোর্টের বৃহত্তর সাংবিধানিক বেঞ্চে। কিন্তু এদিন সেই দাবি খারিজ করে দিয়ে শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিল, এখন যে বেঞ্চে শুনানি চলছে, সেই বেঞ্চেই চলবে এই সংক্রান্ত যাবতীয় মামলার শুনানি।
এই মুহূর্তে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে চলছে এই মামলার শুনানি। যার নেতৃত্বে রয়েছেন বিচারপতি এনভি রামান্না। প্রসঙ্গত, গত অগস্ট মাসে কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদ করা হয়েছিল। যাকে অসাংবিধানিক আখ্য়া দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন একাধিক সংগঠন ও ব্য়ক্তি। এদের মধ্য়ে মানবাধিকার সংস্থা পিউপিল ইউনিয়ন অব সিভিল লিবার্টিজ, জম্মু অ্য়ান্ড কাশ্মীর হাইকোর্ট বার অ্য়াসোশিয়েশনের দাবি ছিল, মামলাটি শুনানির জন্য় বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করা হোক। কিন্তু এদিন সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে এনভি রামান্নার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্য়ের বেঞ্চ।
গত বছরের অগস্ট মাসে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা খারিজ করা হয়। তুলে নেওয়া হয় ৩৭০ ধারা। নজরবন্দি করা হয় উপত্য়কার দুই প্রাক্তন মুখ্য়মন্ত্রীকে। পরে যাদের জননিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করা হয়। দেশের বাকি অংশের সঙ্গে আক্ষরিক অর্থেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে কাশ্মীর। সেখানে বন্ধ করে দেওয়া হয় টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট ব্য়বস্থা। স্থানীয় সংবাদপত্রগুলি হয় নিয়মিত তাদের সংস্করণ প্রকাশ করতে পারে না, নয়তো একেবারেই বন্ধ করে দেয় সংস্করণ। উপত্য়কায় তখন মানবাধিকার লঙ্ঘনের একাধিক অভিযোগ ওঠে। যা অবশ্য় অস্বীকার করে ভারতীয় সেনাবাহিনী। পরে টেলিযোগাযোগ ব্য়বস্থা ফেরানো হলেও ইন্টারনেট বন্ধ থাকে দীর্ঘদিন। সরকার পক্ষের যুক্তি ছিল ইন্টারনেট চালু থাকলে জঙ্গি কার্যকলাপ বাড়বে উপত্য়কায়। যদিও পরে কার্যত আদালতের হস্তক্ষেপে ধাপে ধাপে ফিরে আসে নেট যোগাযোগ। সুপ্রিম কোর্ট কড়া ভাষায় সরকারকে জানিয়ে দেয়, ইন্টারনেট বন্ধ থাকা মানুষের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ।
এমতাবস্থায়, ৩৭০ ধারা রদকে অসাংবিধানিক আখ্য়া দিয়ে আদালতে মামলা করেন বেশ কিছু ব্য়ক্তি ও সংগঠন। সমস্ত মামলাকে এক করে নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুরু হয় শুনানি। পাঁচ সদস্য়ের বেঞ্চ থেকে এই শুনানি যাতে সংবিধানের বৃহত্তর বেঞ্চে যায়, সেই আবেদনই রাখা হয়েছিল। এদিন তা খারিজ করে দেওয়া হল।