ফাঁসি ২২ জানুয়ারি, নির্ভয়ার মা বললেন সেদিন তাঁর 'বড়দিন'

Published : Jan 07, 2020, 06:51 PM ISTUpdated : Jan 07, 2020, 07:42 PM IST
ফাঁসি ২২ জানুয়ারি, নির্ভয়ার মা বললেন সেদিন তাঁর 'বড়দিন'

সংক্ষিপ্ত

নির্ভয়াকাণ্ডে দোষীদের মৃত্যু পরোয়ানা জারি ফাঁসি হতে চলেছে ২২ জানুয়ারি নির্ভয়ার মা বললেন,সেদিন তাঁর কাছে বড়দিন ২০১২ থেকে কীভাবে এগুলো বিচার

সাতবছর এক মাস পরে ফাঁসি হতে চলেছে নির্ভয়াকাণ্ডে দোষীদের। এদিন পাতিয়ালা হাউস কোর্ট দোষী সাব্যস্ত চারজনের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করল। আদালতের নির্দেশে আগামী ২২ জানুয়ারি সকাল সাতটায় ফাঁসি দেওয়া হবে ওই চারজনকে। যদিও ফাঁসির হুকুম হয়ে গিয়েছিল অনেক আগেই। কিন্তু দোষীরা প্রাণভিক্ষে করে কখনও রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানায়। কখনও সু্প্রিম কোর্টের কাছে আবেদন জানায়। তাই সেই প্রক্রিয়া বেশ কিছুটা পিছিয়ে যায়।

এদিকে ফাঁসির আদেশ স্থগিত করা নিয়ে যখন নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত আবেদন নিবেদন চলছে, ঠিক তখনই ফাঁসুরে খুঁজে পেতে হিমশিম খেয়ে যেতে হয় তিহার জেল কর্তৃপক্ষকে। কলকাতা থেকে  তখন ধনঞ্জয়ের ফাঁসি দেওয়া নাটা মল্লিকের ছেলের নাম প্রস্তাব করা হয়। নিজের হাতে ফাঁসি দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে দেশবিদেশ থেকে অসংখ্য আবেদন জমা পড়তে থাকে তিহারে, যাঁদের কেউই প্রায় পেশাদার ফাঁসুরে নন। বরং বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত। আবেগ তথা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ যখন তুঙ্গে তখনই ঠিক হয়ে গেল ফাঁসির দিনক্ষণ। নির্ভয়ার মা বললেন, "২২ জানুয়ারি আমার কাছে কাছে বড়দিন।"

কী ঘটেছিল সেই রাতে?

২০১২-র ১৬ ডিসেম্বর একটু রাতের দিকে দিল্লির মুনিরকা এলাকায় জনৈক ফিজিয়োথেরাপিস্ট যুবতী তাঁর বন্ধুর সঙ্গে একটি বাসে ওঠেন। ওই বাসের চালক-সহ ছজন প্রত্যেকেই ধর্ষণ করে ওই যুবতীকে। যাদের মধ্যে একজন ছিল নাবালক। জান যায়, ধর্ষণের আগে বীভৎস অত্যাচার চালানো হয় ওই যুবতীর ওপর। প্রচণ্ড মারধর করা হয় ওই যুবতী ও তার বন্ধুকে। তারপর চলন্ত বাসের এক কোণে নিয়ে গিয়ে পালা করে ধর্ষণ করে প্রত্যেকে। চালক প্রথম দফায় গাড়ি চালাতে থাকে। পরে চালক এসে ধর্ষণ শুরু করলে খালাসি গাড়ি চালাতে শুরু করে। ধর্ষণের পর যৌনাঙ্গে লোহার রড গুঁজে দেওয়া হয় প্রবল জোরে! যার ফলে ক্ষুদ্রান্ত ছিন্নভিন্ন হয়ে যোনী শরীরের বাইরে বেরিয়ে আসার জোগাড় হয়। ঘটনার পর রাস্তা থেকে অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় ওই যুবতী ও তাঁর বন্ধুকে উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁদের সফদরজং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার অভিঘাতে উত্তাল হয় গোটা দেশ। বিদেশেও আলোড়ন পড়ে। কেন্দ্রে তখন ইউপিএ-২ সরকার। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। কংগ্রেস সভানেত্রী তথা ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধি। সরকারের উদ্যোগে ক্ষতবিক্ষত ওই যুবতীকে বিশেষ বিমানে করে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য যদিও শেষ অবধি আর বাঁচানো যায় না তাঁকে। এই ঘটনাটিই 'নির্ভয়াকাণ্ড' বলে পরিচিত হয় গোটা দেশে।

এর কিছুদিনের মধ্যেই গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তদের। বিচারে ছজনকেই দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। এদের মধ্যে একজন নাবালক হওয়ায়, সর্বোচ্চ সাজা তিনবছরের জেল খেটে ছাড়া পেয়ে যায় সে। শোনা যায় ঘটনার দিন নির্ভয়াকে সবচেয়ে বেশি অত্যাচার করেছিল সে। বাকিদের মধ্যে রাম সিং বলে একজন তিহার জেলেই আত্মহত্যা করে। বাকি চারজনের ফাঁসির আদেশ হয়। যদিও তারপর থেকে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে টালবাহানা। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা প্রাণ ভিক্ষে করে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানায়। তা খারিজ হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টেও তারা আবেদন জানায়। বলতে গেলে, মৃত্যুদণ্ডের বিরোধীরা যে যুক্তি দেন সেই যুক্তি দিয়েই এরা আবেদন করে শীর্ষ আদালতে। আদালতে তারা বলে, প্রাণদণ্ড দিয়ে কখনও অপরাধ কমানো যায় না। প্রসঙ্গত,  নির্ভয়ার মা আশাদেবীর আবেদনের প্রেক্ষিতেই আদালত এদিন অক্ষয় ঠাকুর, মুকেশ সিংহ, বিনয় কুমার ও পবন গুপ্তের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে।

PREV
click me!

Recommended Stories

News Round Up: কলকাতায় পা রাখছেন মেসি থেকে শুরু করে শুভেন্দুর নিশানায় মমতা, সারাদিনের খবর এক ক্লিকে
জনগণনা ২০২৭: ৩০ লক্ষ কর্মী, ১১,৭১৮ কোটি টাকা বাজেট, বিশ্বের বৃহত্তম সমীক্ষা