নাসা-র কাজের অফার ইতিমধ্যেই ৩বার প্রত্যাখান করেছেন ইনি, চিনে নিন এই বিজ্ঞানীকে

  • বিহারের ভাগলপুরের ধ্রুবগঞ্জ গ্রামে বসবাসকারী ১৯ বছর বয়সী গোপাল
  • পেশায় তিনি একজন বৈজ্ঞানিক
  • ইতিমধ্যেই নাসার প্রস্তাব তিন-তিন বার প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি
  • ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাজের আমন্ত্রনেও সাড়া দেননি তিনি

deblina dey | Published : Feb 1, 2020 8:24 AM IST

যেই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনো করেন, তাঁদের স্বপ্ন থাকে নাসার মত জায়গায় তারা বড় হয়ে কাজ করবেন। তবে এদের মধ্যে বছর উনিশের এই বিজ্ঞানীর স্বপ্ন একটু অন্য রকমের। বিহারের ভাগলপুরের ধ্রুবগঞ্জ গ্রামে বসবাসকারী ১৯ বছর বয়সী গোপাল। পেশায় তিনি একজন বৈজ্ঞানিক। ইতিমধ্যেই নাসার প্রস্তাব তিন-তিন বার প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি। এমনকী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, কিন্তু তাতেও সাড়া দেননি তিনি। গোপালের স্পষ্ট জবাব, 'দেশের সেবা করা আমার লক্ষ্য'। তিনি প্রতি বছর দেশের ১০০টি শিশুকে সহায়তা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গত বছর অর্থাৎ ২০১৯ সাল থেকে তিনি এই কাজ শুরু করেছেন। বর্তমানে গোপাল দেরাদুন সরকারী গ্রাফিক ইরা ইনস্টিটিউটের ল্যাবে পরীক্ষা করছেন।

আরও পড়ুন- ২০২২-এর মধ্যেই কৃষকদের আয় হবে দ্বিগুণ, বাজেটে কত টাকা বরাদ্দ হল এই ক্ষেত্রে

গোপাল মডেল হাই স্কুল তুলসীপুর থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করেছেন। তিনি২০১৩-১৪ সালে কলার বায়ো সেল আবিষ্কার করার জন্য অনুপ্রাণিত পুরষ্কার পেয়েছিলেন। তখন তিনি ক্লাস টেন-এ পড়তেন। ২০০৮ সালে তার গ্রাম বন্যায় ভেসে সমস্ত কিছু নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সেই সময় গোপালের বাবা প্রেমরঞ্জন কুনওয়ার, ছেলেকে জানিয়ে দেন তাঁর পক্ষে আর পড়ানো সম্ভব নয়। দারিদ্রতায় চাপেও  হাল ছাড়েনি। গোপালের বাবা-মা ভেবেছিল, ছেলে এমন কিছু করুন যাতে ও বৃত্তি পায়। ৩১ আগস্ট ২০১৭ সালে, গোপাল প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে দেখা করেন। প্রধানমন্ত্রী তাকে এনআইএফ, আহমেদাবাদ পাঠিয়েছেন পড়ার জন্য। সেখানে তিনি বিশ্বের ৩০টি স্টার্টআপ বিজ্ঞানীদের মধ্যে একজন হয়েছেন। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বের বৃহত্তম বিজ্ঞান মেলা। যেখানে উপস্থিত থাকবেন বিশ্বের হাজার বিজ্ঞানী সেখান প্রধান বক্তা হিসেবে থাকবেন গোপাল।

আরও পড়ুন- কলকাতায় যাদুঘরের জন্য় বাড়তি বরাদ্দ, তামিলনাড়ুতেও প্রত্নতাত্ত্বিক সংগ্রহশালা

ইতিমধ্যেই গোপালের আবিস্কারগুলির সমন্ধে সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক-

১) গোপাল পেপার বায়ো সেল- বর্জ্য কাগজ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছেন। গোপোনিয়াম অ্যালোয় - এটি কোনও উত্তাপে এর চেহারা পরিবর্তন করে না। এতে অনেক উপাদান ব্যবহৃত হত। এটি রোদেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
২) জি স্টার পাউডার- এটি প্রয়োগ করে ৫ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপ উৎপন্ন হবে।
৩) হাইড্রো বৈদ্যুতিক বায়ো সেল - এই ডিভাইসটি ৫০ হাজার ভোল্ট বিদ্যুৎ সঞ্চয় করতে পারে।
৪) সৌর মাইল - এটি সৌর শক্তি এবং বায়ু শক্তি একত্রিত করে তৈরি করা হয়। মাত্র ২ কিমি গতিতে বায়ু প্রবাহের মধ্যেও শক্তি সঞ্চয় করা যায়।
৫) গোপালসাকা - পারমাণবিক আক্রমণে জন্মানো বিকিরণ হ্রাস করবে। পারমাণবিক আক্রমণের বিকিরণটি একশো বছর ধরে স্থায়ী হয়। তবে গোপালের আবিস্কারের ফলে এখন ৫ বছরের মধ্যে এর প্রভাবটি নির্মূল করা যেতে পারে।
৬) বনানা ন্যানো ফাইবার এবং ক্রাইস্টাল- কলা থেকে ন্যানো ফাইবার উৎপন্ন করে গোপাল একপ্রকার জেল তৈরি করেছেন। এটি ডায়াপার পণ্য তৈরি করতে সাহায্য করবে।
৭) বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ফাইবার থেকে তৈরি করা যেতে পারে। কলা পাতার টিস্যু পেপার, ফাইল কভার এবং কার্টন তৈরিতে ব্যবহার করা যেতে পারে এই টিস্যুগুলি। 
৮) চুল রং করার তরল পদার্থ। একবার এটি প্রয়োগ করলে চিরকালের জন্য চুল কালো হয়ে যাবে। 
৯) কলার থাম্ব থেকে ইট তৈরি করা হবে। এটি থেকে নির্মিত বাড়িগুলি জলে ভাসবে। গ্রীষ্মে এসি লাগবে না। বৈদ্যুতিক ব্যাটারি তরল থেকে তৈরি করা হয়েছে যা দশগুণ বেশি শক্তিশালী।
১০) বায়োডিগ্রেডেবল প্লাস্টিক - বায়োডেগ্রেডেবল প্লাস্টিক কলা থাম্ব থেকে তৈরি। এটি ব্যবহারের পরে, এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কম্পোস্টেবল হয়ে উঠবে। এটি বিভিন্ন ক্ষেত্রগুলিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

Share this article
click me!