যে কোনও দিন চূড়ান্ত হতে নির্ভয়া কাণ্ডে অভিযুক্তদের প্রাণদণ্ডের নির্দেশ। কিন্তু নির্ভয়া কাণ্ডের চার অভিযুক্তের ফাঁসি নিয়ে অন্য সমস্যায় পড়েছেন তিহার জেলের কর্তারা। কারণ এই মুহূর্তে তিহার জেলে কোনও ফাঁসুড়েই নেই। ফলে চার অভিযুক্তের ফাঁসির সাজা কার্যকর করতে হলে ফাঁসুড়ে পাওয়া যাবে, তা ভেবেই এখন জেল কর্তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকের প্রতিবেদনে এমনই দাবি করা হয়েছে।
২০১২ সালে নির্ভয়া গণধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি ২০১৮ সালে বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট। বর্তমানে তিহার জেলে বন্দি চার অভিযুক্তের মধ্যে বিনয় শর্মা মৃত্যুদণ্ড রদ করার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছে। বাকি তিন অভিযুক্ত মুকেশ, পবন এবং অক্ষয় ক্ষমা প্রার্থনা করেনি। তিহার জেল কর্তৃপক্ষ বিনয় শর্মা প্রাণভিক্ষার আবেদন দিল্লি সরকারের কাছে পাঠিয়েছে। জেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিরলতম অপরাধের জন্য ফাঁসির সাজা বহাল রাখারই সুপারিশ করেছে। দিল্লি সরকার সেই আবেদন পাঠাবে দিল্লি উপ রাজ্যপালকে। তিনি সেটি পাঠাবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। সেখান থেকে ফাঁসির সাজা মকুবের আবেদন পাঠানো হবে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে। রাষ্ট্রপতি সেই আবেদন খারিজ করে দিলে তা জেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হবে। এর পর ফাঁসির সাজা কার্যকর করতে আদালতে ব্ল্যাক ওয়ারেন্টের আবেদন করবে জেল কর্তৃপক্ষ। আদালত সেই ওয়ারেন্ট জারি করার পরে যে কোনওদিন ফাঁসি দেওয়া যাবে অভিযুক্তদের।
তিহার জেলের কর্তারা মনে করছেন, বিনয়ের আবেদন মঞ্জুর হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। আর বাকি তিনজনকে প্রাণভিক্ষার আবেদন করার জন্য বাড়তি সময় দেওয়া হবে কি না, তা আদালত ঠিক করবে। ফলে ফাঁসির সাজা হবে ধরে নিয়েই এগোচ্ছেন জেল কর্তারা।
জানা গিয়েছে, ফাঁসুড়ের খোঁজে ইতিমধ্যেই খোঁজখবর শুরু করেছেন তিহার জেলের কর্তারা। যে গ্রামে তিহারের শেষ ফাঁসুড়ে থাকতেন, সেখানেও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। অন্যান্য জেলেও খবর নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এখনও কোনও জায়গা থেকেই ইতিবাচক সাড়া মেলেনি।
শেষবার আফজল গুরুর ফাঁসি হয়েছিল তিহার জেলে। সেবারও একই ধরনের সমস্যায় পড়েছিল জেল কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত জেলেরই এক আধিকারিক ফাঁসুড়ের দায়িত্ব পালন করতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু এবার কী হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এটা ঠিক, কোনও পরিস্থিতিতেই পূর্ণ সময়ের জন্য ফাঁসুড়ে নিয়োগ করবে না জেল কর্তৃপক্ষ।