সুরক্ষাকবচ হারালো টুইটার সংস্থা
শীর্ষ অধিকারিকদেরও পড়তে হবে পুলিশি জেরার মুখে
তৃতীয় পক্ষের কনটেন্টেরও দায় নিতে হবে তাদের
ইতিমধ্য়েই উত্তরপ্রদেশ পুলিশের খাতায় উঠেছে টুইটারের নাম
সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও ব্যবহারকারী 'বেআইনী' এবং 'উসকানিমূলক' কোনও বিষয়বস্তু পোস্ট করলেও, ভারতে এতদিন সেই পোস্ট নিয়ে কোনও পুলিশি প্রশ্ন ও ফৌজদারী মামলা করা হত না ওই সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থার বিরুদ্ধে। কিন্তু, সময়মতো বিধি অনুসারে অফিসার নিয়োগ করতে না পারায় প্রথম মার্কিন সংস্থা হিসাবে সেই লোভনীয় নিরাপত্তা হারালো টুইটার সংস্থা। ফলে এখন সংস্থার ভারতীয় এমডি থেকে শুরু করে সংস্থার শীর্ষ অধিকারিকরা এখন যে কোনও ফৌজদারী মামলার বিষয়ে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হতে পারে। ইতিমধ্যেই এদিন উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে মুসলিম বৃদ্ধের উপর হামলার ঘটনায় সাম্প্রদায়িক রঙ চড়ানোর অভিযোগে এফআইআর-এ নাম রাখা হয়েছে টুইটার সংস্থার।
টুইটার এই নিরাপত্তা হারালেও, ভারতের নতুন আইটি বিধি মেনে নেওয়ায়, এখনও আইটি আইনের ৭৯ নম্বর ধারার অধীনে আগের মতোই তৃতীয় পক্ষের পোস্ট-এর বিষয়ে ফৌজদারি মামলার হাত থেকে নিষ্কৃতি পাবে ইউটিউব, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুক। ভারতের নতুন আইটি বিধি অনুযায়ী ভারত সরকার সোশ্যাল মিডিয়ায় ইন্টারমমিডিয়েটরি সংস্থাগুলিকে ২৫ মে তারিখের মধ্যে বিধিবদ্ধ কিছু অফিসার নিয়োগ করার নির্দেশ দিয়েছিল। তবে, করোনাভাইরাস ঠেকাতে লকডাউন এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে এই নিয়মগুলি লাগু করতে অনেক বেশি সময় নিয়েছিল সংস্থাগুলি। মঙ্গলবারই, টুইটার জানিয়েছিল, তারা একজন অন্তর্বর্তীকালীন চিফ কমপ্লায়েন্স অফিসার নিয়োগ করেছে এবং শিগগিরই তার বিবরণ আইটি মন্ত্রককে জানানো হবে। তবে, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে এদিন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, এর আগে নয়া আইটি বিধিগুলি মেনে চলার একাধিক সুযোগ দেওয়া হয়েছে টুইটার সংস্থাকে। বস্তুত, গত সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় সরকার টুইটারকে একটি নোটিশ জারি করে 'অবিলম্বে' নতুন আইটি বিধি মেনে চলার শেষ সুযোগ দিয়েছিল। স্পষ্ট জানানো হয়েছিল, নিয়ম মানতে ব্যর্থ হলে সংস্থাটি, আইটি আইনের আওতায় ফৌজদারী দায় থেকে অব্যাহতি পাওয়ার রক্ষাকবচ হারাবে। টুইটারও ভারত সরকারকে আশ্বাস দিয়েছিল, তারা নতুন আইটি বিধি অনুসারে চিফ কমপ্লায়েন্স অফিসার নিয়োগ করার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
বড় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলিকে তাদের প্ল্যাটফর্মে কী কী বিষয়বস্তু পোস্ট করা হচ্ছে সেই বিষয়ে দায়বদ্ধ করে তোলার জন্য়ই ভারত সরকার এই নয়া আইটি বিধি চালু করেছে। এই নিয়ম অনুসারে, ৫০ লক্ষের বেশি ব্যবহারকারী থাকা সোশ্য়াল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিকে ভারতে একজন অভিযোগ গ্রহণ করার কর্মকর্তা, একজন নোডাল অফিসার এবং একটি চিফ কমপ্লায়েন্স অফিসার নিয়োগ করতে হবে। উপরন্ত এই অধিকারিকদের প্রত্য়েককেই ভারতের বাসিন্দা হতে হবে।