অভিন্ন দেওয়ানি বিধি - কেন্দ্রকে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ আদালতের, ফের কি দেশজোড়া বিতর্ক


তিন তালাক আইন বা সিএএ-এনআরসি-র মতোই উঠতে পারে দেশ জোড়া বিতর্কের ঝড়। ইউনিফর্ম সিভিল কোড লাগু করা নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রককে নির্দেশ দিল দিল্লি হাইকোর্ট।

Asianet News Bangla | Published : Jul 9, 2021 2:14 PM IST

তিন তালাক আইন বা সিএএ-এনআরসি-র মতোই উঠতে পারে বিতর্কের ঝড়। তবে, বিজেপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অন্যতম, ইউনিফর্ম সিভিল কোড বা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি তৈরি হয়তো এবার সময়ের অপেক্ষা। দিল্লি হাইকোর্ট সম্প্রতি এক বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি লাগু করা প্রয়োজন, কে এবং এর জন্য কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রককে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

সম্প্রতি, দিল্লি হাইকোর্টে বিচারপতি প্রতিভা সিং-এ একক-বিচারপতির বেঞ্চে রাজস্থানের তফসিলি উপজাতিভুক্ত মিনা সম্প্রদায়ের এক দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদের মামলার শুনানি চলছিল। ২০১৫ সালে হিন্দু বিবাহ আইনে স্বামী বিচ্ছেদের মামলা করেছিলেন। কিন্তু, তাঁর স্ত্রী তাঁরা দু'জনই তফসিলী উপজাতির বলে হিন্দু বিবাহ আইন এইক্ষেত্রে কার্যকর নয় বলে যুক্তি দিয়েছিলেন। ২০২০ সালের ২৮ নভেম্বর পারিবারিক আদালত স্ত্রীর পক্ষেই রায় দিয়েছিল। সেই রায়কেই দিল্লি হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন স্বামী।

যেহেতু ওই দম্পতির বিবাহ, হিন্দু রীতিনীতি ও আচার অনুসারে হয়েছিল, তাই তাঁদের ক্ষেত্রে হিন্দু বিবাহ আইনই প্রযোজ্য বলে রায় দেন বিচারপতি প্রতিভা সিং। তবে এই মামলাটি ইউনিফর্ম সিভিল কোড বা অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রয়োজনীয়তা আরও একবার দেখিয়ে দিয়েছে বলে পর্যবেক্ষণ দেন তিনি। বিচারপতি বলেন, আধুনিক ভারতীয় সমাজে ধীরে ধীরে একজাতীয় হয়ে উঠছে। ধর্ম, সম্প্রদায় ও বর্ণের পার্থক্য ধীরে ধীরে অবলুপ্ত হচ্ছে। ভারতীয় যুবদের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের, উপজাতির, বর্ণের বা ধর্মের ব্যক্তিগত আইন, বিশেষ করে বিবাহ এবং বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত আইনের দ্বন্দ্বের কারণে উদ্ভূত সমস্যার মুখে ফেলা উচিত নয়।

সংবিধানের ৪৪ নম্বর ধারাতেই, সারা ভারতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি লাগু করার নির্দেশ রয়েছে। বর্তমানে ভারতে ব্রিটিশদের তৈরি করা হিন্দু ও মুসলিমদের আলাদা আলাদা দেওয়ানি বিধি চালু রয়েছে। এরজন্য পার্সোনাল ল বোর্ডও রয়েছে। তবে, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি লাগু হলে, বিভিন্ন ধর্ম ও জাতি-উপজাতি একই দেওয়ানি বিধির আওতায় আসবে। অর্থাৎ, বিবাহ, বিচ্ছেদ ইত্যাদি বিষয়ে একটিই আইন বলবৎ হবে।

১৯৮৫ সালে সুপ্রীম কোর্টও এই আইন তৈরির পক্ষেই রায় দিয়েছিল। কিনতু, তারপরও কেন্দ্র ভারতে ইউনিফর্ম সিভিল কোড গঠনের জন্য কোনও পদক্ষেপই নেয়নি। ভারতের প্রথম দল হিসাবে বিজেপি এই আইন লাগু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ২০১৯ সালের নভেম্বর এবং ২০২০ সালের মার্চ মাসে দুবার সংসদে মোদী সরকার এই বিধির খসড়া প্রস্তাব দিয়েও দু'বারই তাড়াতাড়ি তা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। এইবার দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশের পর সরকার কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই দেখার।

Share this article
click me!