ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। পুলিশ ও মন্দিরের আধিকারিকদের যৌথ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিরাট দুর্ঘটনা পুরীর জগদ্বিখ্যাত জগন্নাথ মন্দিরে। ভেঙে টুকরো করা হল জগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদ তৈরি করার ৪০টি মাটির উনুন। কে বা কারা এই কাজ করেছে, তা এখনও জানা যায়নি। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রান্নাঘর ‘রসা ঘরে’ প্রভুকে নিবেদন করা ‘মহাপ্রসাদ’ রান্নার জন্য উনুন ব্যবহার করা হয়। রান্নাঘরে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ কুইন্টাল চাল রান্না করা হয়।
পুরী মন্দিরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে এই রসা ঘরে প্রায় ৪০টি উনুন ভাঙচুর করা হয়েছে। এই বিষয়ে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনার পরে জেলা কালেক্টর সমর্থ ভার্মা ও পুলিশ সুপার ভি কে সিং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। পুলিশ ও মন্দিরের আধিকারিকদের যৌথ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি 'মহাপ্রসাদ' পাওয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে দুই দিনের মধ্যে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে জানানো হয়েছে।
এই ঘটনার ফলে মন্দিরের আচার-অনুষ্ঠানে কোনও প্রভাব পড়েনি বলে জানা গিয়েছে। তবে, সকালের নৈবেদ্য পরিবেশন করতে ৩০ মিনিট দেরি হয়েছিল বলে জানানো হয়েছে। দ্বাদশ শতকের এই প্রাচীন মন্দিরের রেকর্ড অফ রাইটস (RoR) অনুসারে, রান্নাঘরে ২৪০টি রেজিস্টার্ড উনুন রয়েছে, যার মধ্যে ৪০টিতে ভাঙচুর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মন্দিরের রান্নাঘরটি বিশ্বের বৃহত্তম রান্নাঘর। ওই রান্নাঘরে ৫০০ জন রান্না করেন। এছাড়াও তাঁদের ৩০০জন সহকারীও সেখানে থাকেন। সবাই একসঙ্গে মহাপ্রসাদ রান্না করেন। আর সব রান্না করা হয় মাটির পাত্রে। মন্দিরের পুরোহিত থেকে শুরু করে রাঁধুনি কাউকে উপোস করতে হয় না। খেয়ে তারপর পুজো করেন পুরোহিত। বহু যুগ ধরে এই প্রথা মেনে আসছেন মন্দিরের সেবাইতরা।
মন্দিরের রান্নাঘরে একটি পাত্রের উপর আর একটি পাত্র এমন করে মোট ৭টি পাত্র আগুনে বসানো হয় রান্নার জন্য। এই পদ্ধতিতে যে পাত্রটি সবচেয়ে উপরে বসানো থাকে তার রান্না সবার আগে হয়। তার নিচের তারপরে। এভাবে সবচেয়ে দেরিতে সবচেয়ে নিচের পাত্রের রান্না হয়। কথিত আছে জগন্নাথদেবের আশীর্বাদেই এমনটা হয়। তবে ভাঙচুরের ঘটনায় মন্দিরের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।