
Uttar Pradesh Engineer Suicide: 'আমি যদি মৃত্যুর পরেও সুবিচার না পাই, তাহলে আমার চিতাভস্ম নর্দমায় ফেলে দিও। মা-বাবা, দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি তোমাদের আশা পূরণ করতে পারিনি।' এক ভিডিও বার্তায় স্ত্রী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে হেনস্থা, মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ করে আত্মহত্যা করলেন উত্তরপ্রদেশের ইঞ্জিনিয়ার। মোহিত কুমার যাদব নামে এই যুবক আত্মহত্যার আগে একটি ভিডিও রেকর্ড করেন। উত্তরপ্রদেশের ইটাওয়া জেলার এই ইঞ্জিনিয়ার শেষ ভিডিওতে স্ত্রী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। ৩৩ বছর বয়সি এই ইঞ্জিনিয়ারের মৃত্যুতে আত্মীয়-পরিজন-বন্ধুবান্ধবদের পাশাপাশি অনেকেই শোকাহত। এই ইঞ্জিনিয়ার তাঁর স্ত্রী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে যে নির্যাতন, মিথ্যা মামলা দায়ের করার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন, তাতে অনেকেই উদ্বিগ্ন। সম্প্রতি দেশের অন্যত্রও একই ধরনের ঘটনা দেখা গিয়েছে।
শেষ ভিডিওতে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ
মোহিত একটি সিমেন্ট কোম্পানিতে ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করতেন। আত্মহত্যার আগে রেকর্ড করা শেষ ভিডিওতে তিনি বলেছেন, ‘তোমরা যখন এই ভিডিও পাবে, আমি এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাব। যদি পুরুষদের জন্য আইন থাকত, তাহলে হয়তো আমাকে এই পদক্ষেপ নিতে হত না। আমার স্ত্রী ও তার পরিবার যে মানসিক অত্যাচার করছে, তা আমি সহ্য করতে পারছি না। মা, বাবা, দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিও।’
হোটেলের ঘরে আত্মহত্যা
পুলিশ জানিয়েছে, মোহিত বৃহস্পতিবার ইটাওয়া রেল স্টেশনের কাছে অবস্থিত জলি হোটেলে চেক ইন করেন। এরপর শুক্রবার সকালে তিনি ঘর থেকে না বেরনোয় হোটেলের কর্মীদের সন্দেহ হয়। সন্ধেবেলা দরজা ভেঙে তাঁকে ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ সুপার (শহর) অভয় নাথ ত্রিপাঠি জানিয়েছেন, মোহিত আত্মহত্যা করেছেন।
বিয়ের পরেই সম্পর্কের অবনতি
মোহিত ও তাঁর স্ত্রী প্রিয়া যাদবের সম্পর্ক প্রায় সাত বছরের। তাঁরা ২০২৩ সালে বিয়ে করেন। বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যেই তাঁদের সম্পর্কে তিক্ততা দেখা দেয়। ভিডিওতে মোহিত দাবি করেছেন, ‘আমার স্ত্রী প্রিয়া যাদব হুমকি দিয়েছিল, যদি আমি বাড়ি এবং সম্পত্তি তার নামে না লিখে দিই, তাহলে ও আমার বিরুদ্ধে পণ চাওয়ার মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করবে। আমার স্ত্রীর মা জোর করে আমাদের সন্তানের গর্ভপাত করিয়েছিলেন। তিনি আমার স্ত্রীর শাড়ি, গয়না নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন।’
তদন্ত শুরু পুলিশের
মোহিতের ভাই তরুণ প্রতাপ জানিয়েছেন, তাঁর দাদা কোটার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। কিন্তু ইটাওয়াতে থেমে যান। শুক্রবার সকালে ভিডিও পাওয়ার পর পরিবার শোকস্তব্ধ হয়ে যায়। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তবে এখনও প্রিয়া ও তাঁর পরিবারের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
পুরুষদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন
এই ঘটনা শুধু একটি আত্মহত্যা নয়, বরং সমাজব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত পুরুষদের হেনস্থার ঘটনা দেখা যাচ্ছে। এর আগে বেঙ্গালুরুতে অতুল সুভাষের আত্মহত্যাতেও স্ত্রী, শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।