যোগীর বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন ১০৪জন প্রাক্তন আইএএস, লাভ জিহাদ আইন চালুর একমাসের মাথাতেই ধাক্কা

একমাস হল উত্তরপ্রদেশে চালু হয়েছে ধর্মান্তর বিরোধী আইন

আর এই একমাসের মাথাতেই বড় ধাক্কা খেলেন যোগী আদিত্যনাথ

তাঁর রাজ্যকে বিদ্বেষ রাজনীতির কেন্দ্র বললেন ১০৪ জন প্রাক্তন আইএএস

বললেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি থেকেও এখন সাম্প্রদায়িক বিষ ঝরে পড়ছে

amartya lahiri | Published : Dec 29, 2020 5:29 PM IST / Updated: Dec 30 2020, 03:32 PM IST

উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিতর্কিত ধর্মান্তর বিরোধী অধ্যাদেশ-এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন ১০৪ জন প্রাক্তন আইএএস অফিসার। এই আইন উত্তরপ্রদেশ রাজ্যকে 'ঘৃণা, বিভাজন ও ধর্মান্ধতার রাজনীতির কেন্দ্রস্থল'-এ পরিণত করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে এই আইএএস অফিসারদের সাক্ষরিত এক চিঠিতে। মঙ্গলবার প্রকাশিত এই চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন, প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন, প্রাক্তন বিদেশ সচিব নিরুপমা রাও, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা টি কে এ নায়ার প্রমুখ। শুধু এই আইনের বিরোধিতা করাই নয়, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ-সহ উত্তরপ্রদেশের সকল রাজনীতিবিদের সংবিধান সম্পর্কে আরও একবার শিক্ষিত হওয়া দরকার, বলেও মন্তব্য করেছেন তাঁরা।

এই চিঠিতে বলা হয়েছে, একসময় উত্তরপ্রদেশের পরিচয় ছিল, গঙ্গা-যমুনা সভ্যতার আধার হিসাবে। আর এখন সেই রাজ্যই ঘৃণা, বিভাজন এবং ধর্মান্ধতার রাজনীতির কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে। প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানগুলি থেকেও এখন সাম্প্রদায়িক বিষ ঝরে পড়ছে। উত্তরপ্রদেশ জুড়ে, শুধুমাত্র ভারতে মুক্ত দেশের নাগরিক হিসাবে জীবনযাপন করতে চাওয়ায়, অল্পবয়সী ভারতীয়দের বিরুদ্ধে যোগী প্রশাসন একের পর এক জঘন্য নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। শুধু ফাঁকা দাবি নয়, সংখ্যালঘুদের কীভাবে প্রশাসন নিশানা করছে, তার একাধিক উদাহরণও দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।

চলতি মাসের শুরুতেই মোরাদাবাদে বজরঙ্গ দলের হাতে হেনস্থার ফলে এক ভিন ধর্মের দম্পতির সন্তান হারানোর ঘটনা এবং সেই ঘটনায় পুলিশের নক্কারজনক ভূমিকার কথা তুলে ধরেছেন তাঁরা। পুলিশের সামনেই ওই দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও মারধোর করে বজরঙ্গ দল, পুলিশ কিছু বলেনি। সম্ভবত ওই হয়রানির ফলেই গর্ভপাত হয় ওই মহিলার। এছাড়া, গত সপ্তাহে উত্তরপ্রদেশের বিজনৌরে এক কিশোরের উপরও হামলা হয়েছিল। এক হিন্দু কিশোরীকে জোর করে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করার অভিযোগে এক মুসলিম কিশোর এক সপ্তাহেরও বেশি কারাগারে আটকে রাখা হয়। যদিও মেয়েটি এবং তাঁর মা দুজনেই সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছিল। এই সব উদাহরণ দিয়ে ওই ১০৪ জন বিশিষ্ট আইএএস অফিসার দাবি করেছেন, ধর্মান্তর বিরোধী অধ্যাদেশ, ভারতীয় মুসলমান পুরুষদের এবং স্বাধীনচেতা মহিলাদের, যাঁরা নিজেদের ইচ্ছামতো জীবন কাটাতে চান, তাঁদের নিশানা করার চাবিকাঠি হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

বস্তুত, মঙ্গলবারই উত্তরপ্রদেশে 'লাভ জিহাদ' আইন কার্যকর হওয়ার একমাস পূর্তি হয়েছে। রাজ্যের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী গত ৩০ দিনে, উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এই আইনের অধীনে ১৪টি মামলা দায়ের করেছে। এই ১৪ টি মামলার মধ্যে ১৩টি মামলাই হিন্দু মেয়েদের সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই তাঁদের জোর করে ইসলামে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। মোট ৫১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এর মধ্যে ৪৯ জন অভিযুক্ত আছেন জেল হেফাজতে। অথচ এই ১৪টি মামলার মধ্যে নির্যাতিতা মহিলার পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে মাত্র ২টি ক্ষেত্রে। বাকি সব ক্ষেত্রেই অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁদের আত্মীয়-স্বজনরা।

Share this article
click me!