এক সপ্তাহ ধরে দেশে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজারের উপরেই রয়েছে। আর তার জেরেই করোনার চতুর্থ ঢেউ নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের সার্বিক করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেন।
দেশে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিকই ছিল। কিন্তু, গত দু'সপ্তাহ ধরে আবারও সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। এক সপ্তাহ ধরে দেশে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজারের উপরেই রয়েছে। আর তার জেরেই করোনার চতুর্থ ঢেউ নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের সার্বিক করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেছিলেন। অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের পাশাপাশি এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। করোনা নিয়ে সব মুখ্যমন্ত্রীই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
এই বৈঠকের পর মোদী বলেন, "ওমিক্রন এবং এর নয়া রূপগুলি ইউরোপে কি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি করেছে তা গোটা বিশ্ব দেখেছে। ভারতে তুলনামূলক ভাবে পরিস্থিতি সামলে নিলেও কিছু কিছু রাজ্যে করোনার সংক্রমণ আবার বাড়ছে। তাই নতুন করে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। দেশের ৯৬ শতাংশ বয়স্ক মানুষকে করোনার প্রথম টিকা দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে টিকাই করোনা প্রতিরোধের একমাত্র উপায়।"
আরও পড়ুন- অবিজেপি রাজ্যগুলিকে তেলের দাম থেকে ভ্যাট কমানোর আবেদন, মোদীর নিশানায় বাংলা
এরপর পড়ুাদের টিকাকরণের উপর বেশি করে জোর দিতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, "আমাদের দেশে দীর্ঘ দিন পরে স্কুল খুলেছে। কিন্তু, তার মধ্যেই করোনার সংক্রমণ বাড়াতে অভিভাবকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন স্কুলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার খবরও সামনে এসেছে। কিন্তু পড়ুয়াদেরও টিকাকরণের কাজ অনেক এগিয়েছে। তবে পড়ুয়াদের টিকাকরণের কাজ আরও দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। তবেই পরিস্থিতি সামলানো আরও সহজ হবে। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের সময় দৈনিক সংক্রমণ তিন লাখ ছাড়িয়েছিল। কিন্তু সেই সময়েও প্রতিটি রাজ্য খুব ভালো ভাবে পরিস্থিতি সামলেছে। ভবিষ্যতেও একই কৌশল মেনে কাজ করতে হবে। তবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।" প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য।
আরও পড়ুন- ছাঁটাই করায় রাগ, দোকান মালিককে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা, মৃত্যু ২ জনেরই
সূত্রের খবর, এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে দেশের করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। আর সেই কারণে ফের একবার উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। এই পরিস্থিতিতে চতুর্থ ঢেউয়ের সম্ভবনাও একেবারে এড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তাই রাজ্যগুলিকে আগাম সতর্ক করতেই এবং রাজ্যগুলির করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেই এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
করোনা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য পরীক্ষার পরিমাণ বাড়ানোর পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর। তিনি বলেন, "করোনা পরীক্ষার পর আক্রান্ত ব্যক্তিদের জিনের গঠনসজ্জা জানা গুরুত্বপূর্ণ। করোনার নয়া রূপগুলিকে চিহ্নিত করতে এই পদক্ষেপ করা খুবই প্রয়োজনীয়। আগের পরিস্থিতির তুলনায় হাসপাতালগুলিতে শয্যাসংখ্যা এবং অক্সিজেন মজুতের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু যাতে রোগীদের কোনও অসুবিধা না হয়, তা নিয়ে বিশেষ সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে।" পাশাপাশি যে হারে গরম বাড়ছে তার জন্য হাসপাতালগুলিতে সঠিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন- মন্দির মসজিদ থেকে সরছে বেআইনী লাউডস্পিকার, কড়া নির্দেশ যোগী প্রশাসনের
এছাড়া কেন্দ্র ও রাজ্যগুলিকে একযোগে কাজ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন মোদী। তিনি বলেন, "বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতি মজবুত করতে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। কেন্দ্র-রাজ্যের তাল মেল আগের থেকেও আর ভাল হওয়া প্রয়োজন। করোনা যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এর ফলে সাপ্লাই চেন প্রভাবিত হয়েছে। তাই পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়েছে।"