ডাইনি সন্দেহে এক মহিলাকে পুড়িয়ে মারার ঘটনা ঘটল বিহারে। উদ্ধার করতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশ। গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয় এক সম্প্রদায়ের পুরুষ সদস্যরা।
মধ্যযুগীয় বর্বরতা বিহারে। ডাইনি অপহাদ দিয়ে এক মহিলাকে বাড়ির জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হল। ঘটনাটি ঘটেছে বিহার-ঝাড়খণ্ড সীমান্তের মাইগরা থানা এলাকার প্রত্যন্ত একটি পাহাড়ি গ্রামে।
অর্জুন দাসের স্ত্রী রীতা দেবী নামের ওই মহিলাকে উদ্ধার করে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশও। স্থানীয়রা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। তারপর পুলিশও গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয়। কিছু পরে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থালে যায় ইমামগঞ্জের এসডিপিও মনোজ রামে। তিনি মহিলার মৃতদেহ খুঁজে বার করেন। তারপর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠান হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৪৩৬ ধারা ও জাদু বিদ্যা আইনের অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ সুপার হরপ্রীত কৌর বলেছেন, হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের খোঁজে ইতিমধ্যেই তল্লাশি শুরু হয়েছে। পাটনা থেকেও একটি ফরেনসিক দল ঘটনাস্থলে গেছে নমুনা সংগ্রহ করতে।
ঘটনার সূত্রপাত মাত্র এক মাস আগে। গ্রামের এক ব্যক্তি পরমেশ্বর ভুঁইয়া দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। তিনি মারা যান। পরিবারের বিশ্বাস রীতিদেবী এই অসুস্থ ব্যক্তিকে কালো জাদু করে হত্য়া করেছে। তারপর থেকেই রীতাদেবীর ওপর সন্দেহ বাড়তে শুরু করে। পুলিশ সূত্রের খবর রীতাদেবী দাস সম্প্রদায়ের। আর পরবেশ্বর ভুঁইয়া সম্প্রদায়ের। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরেই চলছিল বিবাদ। যা পরমেশ্বের মৃত্যুতে আরও ভয়ঙ্কর আকার নেয়।
শনিবার পরমেশ্বরের পরিবারের ঝাড়খণ্ড থেকে একজন ওঝাতে নিয়ে আসে। দীর্ঘ সময় ধরে ঝাড়ফুঁক করে ওঝা। তারপরই পঞ্চায়েত ডেকে মহিলাকে সকলের সামনে কালো জাদু করে পরমেশ্বরকে হত্যার কথা স্বীকার করানোর চেষ্টা করে। পরিস্থিতি জটিল হয়। সেই সময় ওঝা সেখান থেকে চম্পট দেয়। মহিলা ও তার পরিবারও সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই ভুঁইয়া সম্প্রদায়ের মানুষরা অস্ত্র নিয়ে দাস পরিবারের ওপর চড়াও হয়। দাস পরিবারের পুরুষ সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে পাশের জঙ্গলে চলে যায়। কিন্তু মহিলা যেতে পারেননি। মহিলাকে সেই বাড়ির ভিরত আটকে রেখেই পুরুষ সদস্যরা বাড়ি ছেড়েছিল। কিন্তু উত্তেজিত জনতা বাড়ির তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে অজ্ঞান অবস্থায় থাকা মহিলাকে মারধর করে। তারপর পেট্রোল ঢেলে গোটা বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। বাড়ির মধ্যেই জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মহিলার মৃত্যু হয়।
যদিও মহিলার স্বামী দুই সন্তানকে নিয়ে থানায় গিয়েছিল পুলিশ ডাকতে। কিন্তু পুলিশ কর্মীদেরও মারধর করা হয়। তারা ঘটনাস্থল পর্যন্ত পৌঁছাতেই পারেনি। তাই মহিলাকে উদ্ধার করতে পারেনি।
আরও পড়ুনঃ
অনুব্রত মণ্ডল বন্দনায় ফিরহাদ হাকিম, বীরভূমে গিয়ে বাঘের সঙ্গে তুলনা তৃণমূল নেতার
শীতের আমেজের মাঝেই ফের ঘূর্ণাবর্তের পূর্বাভাস, আবারও কি ঊর্ধ্বমুখী হবে তাপমাত্রার পারদ?
২৪ নভেম্বর থেকে অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাবনা প্রবল এই রাশিগুলির, স্থান পরিবর্তন করছেন দেবগুরু বৃহস্পতি