সংক্ষিপ্ত

অনুব্রত মণ্ডলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ফিরহাদ হাকিম। তিনি বীরভূমে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে বাঘের সঙ্গে তুলনা করেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন।

 

আবারও অনুব্রত মণ্ডলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ফিরহাদ হাকিম। তিনি তৃণমূল নেতাকে বাঘের সঙ্গে তুলনা করেন। গরু পাচারকাণ্ড,আর্থিক তছরুপ-সহ একাধিক অভিযোগে বর্তমানে জেল বন্দি অনুব্রত মণ্ডল । রয়েছেন আসানসোল সংশোধনাগারে। সম্প্রতি লটারির টিকিট কেলেঙ্কারিতেও নাম জড়িয়েছে। এই দিনই তাঁকে আসানসোল জেলে জিজ্ঞাবাদ করেছে সিবিআই। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েও বীরভূমে দিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের প্রশংসা করলেন ফিরহাদ হাকিম।

শনিবার ফিরহাদ হাকিম রামপুরহাটের একটি দলীয় সভায় বলেন, 'বীরভূমের বাঘকে তোমরা কিছুদিনের জন্য খাঁচায় রেখেছো। সারাজীবন রাখতে পারবে না। তাই শিয়ালগুলি এখন হুক্কা হুয়া করছে। কিছুদিনের পরে যখন বাঘ বেরিয়ে আসবে তখন শিয়ালগুলি চুপ করে যাবে।'

শনিবার বীরভূমের রামপুরহাট পৌঁছান ফিরহাদ হাকিম। সেখানেই ছিল তাঁর জনসভা। কিছুদিন আগে সেখানেই জনসভা করেছিলেন বিজেপির রাজ্য় সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি অনুব্রত মণ্ডলের তীব্র সমালোচনা করেন। সুকান্ত মজুমদারের নাম না করে তারই উত্তর দেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, বনের বাঘ এক দিক থেকে অন্যদিকে চলে গেলে শিয়ালগুলি লাফালাফি করে। এক্ষেত্রেও ঠিক তেমনটাই হয়েছে। তারপরই তিনি বলেন, যেই বাঘ ফিরে আসে সেই শিয়ালগুলি চুপ করে যায়। তিনি আরও বলেন বাঘ বেরিয়ে এলেই শিয়ালগুলি খাঁচায় ঢুকে যাবে।

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের প্রথম দিকেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেই জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বীরভূমে দলের বড় ভসরা ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু বর্তমানে তিনি জেলে। কবে ছাড়া পাবেন তার কোনও ঠিক নেই। এই অবস্থায় বীরভূমে দলের হাল ধরতে তৃণমূল দায়িত্ব ফিরহাদ হাকিমের ওপর দায়িত্ব দিয়েছে বলেও সূত্রের খবর। সেই কারণেই ফিরহাদ বারবার বীরভূম যাচ্ছেন।

এর আগে চাকরির নিয়োগপত্র দিতে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের শূন্যতা বোধ করলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরাহাদ হাকিম। তিনি বললেন “আমি বেশি আনন্দ পেতাম যদি এই মঞ্চে অনুব্রত মণ্ডল উপস্থিত থাকত। তবে বেশি দিন কাউকে অন্যায়ভাবে আটকে রাখতে পারে না”। গরুপাচারকাণ্ডে বর্তমানে তিনি জেলবন্দি। ইডি ও সিবিআই-এর মত কেন্দ্রীয় সংস্থা তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করছে। গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর বেশ কয়েকজন ঘনিষ্ট সহযোগিকে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিঙ্গুর প্রসঙ্গ তুলে ধরেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “সিঙ্গুরের আন্দোলন টাটার বিরুদ্ধে ছিল না। ছিল গরিব মানুষের জমি জোর করে কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে। সিঙ্গুরের মতো ডেউচা – পাঁচামিতে জোর করে কিংবা ধর্ষণের পর কাউকে খুন করে জমি নেওয়া হয়নি। আমরা মানুষকে লাঠি মেরে, গুলি চালিয়ে জমি অধিগ্রহণ করিনি। বরং যারা আনন্দে জমি দিয়েছেন সেই জায়গায় আমরা প্রকল্প গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের দশ বছর লেগেছে মানুষের আস্থা পেতে। এখন আমরা এগিয়ে চলেছি। এখনও বিরোধীরা স্তব্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে। তাই আমরা এগিয়ে চলেছি”।