সাইবার যুদ্ধে 'বিশ্বগুরু'র ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে চায় চিন, চিনের প্রথম লক্ষ্য কী ভারত

ভারতে ক্রমাগত সাইবার হানার চেষ্টা 
তিন থেকে চার দিন ধরে লাগাতার প্রচেষ্টা 
দাবি মহারাষ্ট্রের সাইবার ক্রাইম দফতরের 
সাইবার হানায় প্রথম ছক কষা শুরু হয়েছিল ১৯৯৭ সালে 

Asianet News Bangla | Published : Jun 23, 2020 4:03 PM IST / Updated: Jun 24 2020, 09:25 AM IST


গত তিন থেকে চার দিন চিনের পক্ষ থেকে ক্রমাগত সাইবার হানার চেষ্টা করা হচ্ছে। ভারতের সাইবার স্পেসে বিশেষত তথ্য, অবগাঠামো ও ব্যাঙ্কিং সম্পর্কিত তথ্য জানার বা হ্যাক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রায় ৪০ হাজার ৩০০ টিরও বেশি হামলা চালান হয়েছে। বেশিরভাগ হামলাই চালান হয়েছে চেঙ্গদু অঞ্চল থেকে। ভয়ঙ্কর এই তথ্য সামনে এনেছেন মহারাষ্ট্রের স্টেট সাইবার  দফতরের আইজি ওয়াই যাদব। 

গত ১৮ জুনেই একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছিল, যেখানে বলা হয়েছিল চিন তথ্য ভিত্তিক ওয়েব সাইট ও অন লাইন পেমেন্ট সিস্টেমে সমস্যা তৈরি করতে পারে। প্রভাবিত হতে পারে এটিমও। 

তবে ভারতীয় সাইবার পরিষেবাকে সমস্যায় ফেলার পরিকল্পনা দীর্ঘ দিনের। আর ১৯৯৭ সালে সেন্ট্রাল মিলেটারি কমিশন এই পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। হ্যাকিং-এর জন্য তৈরি হয়েছিল এক বিশেষ দলও। যারা মূলত নজর রাখত আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলির ওপর। ২০১৫ সালে পিপিলস লিবারেশন আর্মি এই পরিকল্পনা অংশ গ্রহণ করে। ২০১৩ সাল থেকেই সাইবার যুদ্ধে অংশ নিতে শুরু করে চিনা সেনা। আর বর্তমান সময়ে যেখানে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে চিনের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। 

চিনের প্রধান লক্ষ্যই হল আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে সাইবার সিকিউরিটি সিস্টেমে সুপার পাওয়ারে পরিণত হওয়া। আর সেইজন্য গোটা দেশের কাছেই এই যুদ্ধে অংশ গ্রহণের আর্জি জানান হয়েছে। বিশ্ব বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের পাশাপাশি দেশভক্তদেরও ওই যুদ্ধে সামিল করা হয়েছে। চিনের মূল টার্গেটই হল প্রতিপক্ষের ব্যাঙ্কিং সিস্টেম, আর্থিক সংস্থা রেলওয়ে পরিষেবায় ব্যাঘাত ঘটান। নিকাশী ও বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত করারও প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে। 


পিপিলস লিবারেশন আর্মি তাই সাইবার দফতরকে বেশ কয়েকটি ভাগে ভাগ করেছে। যার মধ্যে তৃতীয় দফতরের কাজ হল প্রতিপক্ষের গোপন তথ্য নজরে রাখা, কম্পিউটারের মাধ্যমে রণকৌশল তৈরি করা। চতুর্থ দফতরের কাজ বৈদ্যুতিন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া, কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে আক্রমণ করার পাশাপাশি পুরো সিস্টেম বিপর্যস্ত করে দেওয়া। চিনা হ্যাকারদের লক্ষ্য রয়েছে প্রতিপক্ষের টেলিকমিউনিকেশন পরিষেবার দিকেও। এর জন্য বেশ কয়েকটি সংস্থাকেও কাজে লাগাতে পারে চিন। যাদের মধ্যে রয়েছে জিটিই আর হাওয়াই। 

টেলিকমিউনিকেশন আর সফটওয়ারের বাজার ধরেতেও মরিয়া চিন। আমেরিকা, ভারতসহ একাধিক দেশ নিশানা বেজিং-এর। তাই এই ক্ষেত্র সবথেকে কম বিড করে চিনা সংস্থা। নিয়ম অনুযায়ী তারাই বরাত পায়। আর জিংপিং সরকার সংশ্লিষ্ট চিনা সংস্থার আর্থিক ক্ষতি পুরণ করে দেয়। এর ফলে যেকোনও দেশের  কম্পিউটার অ্যাক্সেস সহজে পেয়ে যায় চিনের পিপিলস লিবারেশন আর্মি। ইলেকট্রিক্যাল আর ইলেকট্রনিক্স দুটি ক্ষেত্রে বিশ্বের বাজার ধরতে মরিয়া চিন। আর একটি সূত্র বলছে বর্তমানে চিনা সাইবার পরিষেবা এতটাই শক্তিশালী যে বেজিং-এ বসে পেন্টাগনের কম্পিউটারও হ্যাক করতে পারে। ২০১২ সালে পাওয়ার গ্রিড ফেলইওরের জন্য চিন আর পাকিস্তানকে দায়ি করেছিল ভারত। কিন্তু ভারতের সাইবার পরিষেবায় যথেষ্ট ফাঁক রয়েছে। ভাইরাসে ভর্তি। তাই পিএলএ-র পক্ষে যেকোনও সময় তা হ্যাক করা খুবই সহজ কাজ বলেও মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। 
 

আগামী দিনে চিনের পরিকল্পনা রয়েছে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাইবার যুদ্ধে আরও শক্তিশালী দেশ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। ২০৩০ সালের মধ্যে সাইবার যুদ্ধে নিজেকে বিশ্বগুরু হিসেবে দেখতে চায় চিন। তার জন্য একের পর এক কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করে চেলেছে মাও সেতুং-এর দেশ। 
 

Share this article
click me!