মর্মান্তিক এক বিমান দুর্ঘটনায় রাশিয়ায় প্রাণ গেল অন্তত ৪১ জন মানুষের। মস্কোর শেরেমেতিয়েভো বিমান বন্দরে জরুরি অবতরণের পরই রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ব বিমান সংস্থা 'এরোফ্লোট'-এর একটি বিমানে আগুন ধরে যায়। তড়িঘড়ি বিমানের এমার্জেন্সি এক্সিট দিয়ে বেশ কয়েকজন যাত্রী বাইরে বের হতে পারলেও বাকিরা বিমানের মধ্যেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। তাদের মধ্যে দুটি শিশু এ ও একজন বিমান-সেবিকাও ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
মোট ৭৩ জন যাত্রী ও ৫ জন ক্রু সদস্য নিয়ে স্থানীয় সময় ভোর ৬টা নাগাদ মস্কো থেকে মুরমান্স্ক-এর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল বিমানটি। কিন্তু, খানিকক্ষণ পরেই বিমানে জেট ইঞ্জিনে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেওয়ায় বিমান বন্দরে ফিরে আসতে বাধ্য হয় বিমানটি। দুই বারের চেষ্টায় অবতরণের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ইঞ্জিনের দিক আগুন ছড়িয়ে পড়ে বিমানটির বাকি অংশে। মাত্র ৫৫ সেকেন্ডের মধ্যে মোট ৩৭ জনকে উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্য়ে ৪ জন বিমান-কর্মী। ঠিক কী ধরণের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটে গেল তা অবশ্য এখনও জানাতে পারেনি এরোফ্লোট সংস্থা।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটিতে ছিলেন রাশিয়ার প্রাক্তন ফুটবলার ও কোচ মিখায়েল শেভচোঙ্কো-ও। তিনি অবশ্য রক্ষা পেয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করে তিনি জানিয়েছেন তিনি অক্ষতই আছেন। তাঁর পোস্ট করা ভিডিও-তে দেখা গিয়েছে বিমানের এমার্জেন্সি এক্সিট দিয়ে বেরিয়ে যাত্রীরা প্রাণভয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে দৌড়চ্ছেন। তিনি বিমানের কর্মীদের অসংখ্য ধন্যবাদ দিয়েছেন। জানিয়েছেন বিমান-কর্মীদের সহায়তাতেই বহু মানুষ রক্ষা পেয়েছেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘটনা সম্পর্কে খবরাখবর নিয়েছেন এবং দুর্ঘটনার শিকার হওয়া মানুষদের পরিবারদের প্রতি তিনি সমবেদনাও জানিয়েছেন। মুরমান্স্ক প্রদেশে আগামী তিনদিন ধরে শোক পালন করা হবে। সেখানকার ভারপ্রাপ্ত গভর্নর জানিয়েছেন মৃতদের প্রতিটি পরিবারকে ১ মিলিয়ন রুবেল (১০ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা) ও আহতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ রুবেল (সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা) করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।