
২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি বাংলাদেশের জন্য এক বিশেষ দিন। এই দিন পালিত হল ভাষা দিবস। বাংলাভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের জানানো হয় শ্রদ্ধা। প্রতি বছরই বাংলাদেশে বিশেষভাবে পালিত হয় ভাষা দিবস।
তবে, এবার বাংলাদেশে ভাষা দিবস ছিল একেবারে অন্যরকম। এবার বাঙালি জাতিসত্তা ভুলে দিকে দিকে বসছে কাওয়ালি গানের আসর। এমনই ছিল মহম্মদ ইউনুসের নতুন বাংলাদেশের নজির। বাংলা ভাষার জন্য যে দেশে রক্ত ঝরিয়েছে বাঙালি, ধ্বনি উঠেছিল ‘মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধের সমান’ সেই দেশেই এখন পাক প্রেমের হাওয়া। আর এর নেপথ্য়ে ইউনুস ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা- অধিকাংশ দাবি করেছেন এমনটাই।
গত বছরের ৫ অগস্ট ‘হাসিনা হটাও অভিযান’-এ নেমেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। সেই সময়ই অনেকে আঁচ করতে পেরেছিল ভবিষ্যত বাংলাদেশ কেমন হবে। এই মুহূর্তে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্বিচারে অত্যাচার, লাগাতার মন্দিরে ভাঙচুর, জয় বাংলা স্লোগান বললেই শাস্তি তারই প্রমাণ। বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন থেকে জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা’-র বদলের দাবি উঠছে প্রতিনিয়ত। সকলে মিলে মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে রবীন্দ্রনাথ, নজরুলকে। এখন পাঠ্যবইতে জায়গা পাচ্ছে উর্দু, আরবি ভাষাও। যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ, সব কিছুরই প্রাণকেন্দ্র সেখানে সন্ধ্যা নামলে এখন উর্দু কাওয়ালি আসর বলে।
রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দিতে ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান। এরপর বহু জল রয়ে গিয়েছে পদ্মা দিয়ে। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের পর পৃথিবীর মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে আজকের বাংলাদেশ। কিন্তু, সেই বাংলাদেশের আর সেই চিত্র নেই। গত অগস্ট থেকে উত্তাল দেশ। শেষ হাসিনার পতন, ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ- হয়েছে অনেক কিছুই। বাংলাদেশে জারি রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার প্রক্রিয়া।
সে যাই হোক, এবছর ভাষা দিবসে ভাইয়ের রক্ত ভুলে উর্দু কাওয়ালি গান। নতুন বাংলাদেশে নয়া পন্থায় ভাষা দিবস পালন হল এবছর।