
Bangladesh Durga Temple: বাংলাদেশে অব্যাহত মৌলবাদীদের দাপট। হিন্দু বিরোধীদের দাপটে বৃহস্পতিবারই ভেঙে ফেলা হয়েছে ঢাকার খিলক্ষেতে ৫০ বছরের পুরনো দুর্গা মন্দির। তারপর থেকেই ক্রমেই চড়ছে সেদেশের রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ। সূত্রের খবর, বাংলাদেশের ৫০ বছরের পুরনো এই দুর্গা মন্দির বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে রেলমন্ত্রক। মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে দুর্গা প্রতিমা। ঘটনার ছবি প্রকাশ্যে আসতেই বিষয়টি নিয়ে তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।
সূত্রের খবর, দুর্গা মন্দির ভেঙেই খান্ত হননি সে দেশের মৌলবাদীরা। ঘটনায় মুখ খুলেছেন বাংলাদেশ রেল মন্ত্রকের উপদেষ্টা ফাওজুল কবীর খান। হিন্দুদের মন্দির ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি। তবে সরকারি জমিতে গড়ে ওঠা হিন্দু মন্দির ভেঙে দেওয়া হলেও মসজিদ যে থাকবে সে কথাও জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, বদলের বাংলাদেশ এখন মুসলিম রাষ্ট্র। হিন্দুরা এখানে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। ফলে এখন এখানে মুসলিমরা যা খুশি তাই করতে পারে। দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিন্দুদের সেই অধিকার নেই।
জানা গিয়েছে, স্বাধীনতার পরই বাংলাদেশের হিন্দুরা মিলে ঢাকার খিলক্ষেতে টিন দিয়ে একটি দুর্গা মন্দির গড়ে তুলেছিল। মন্দিরে নিয়মিত পুজোঅর্চনা হত। ছিল কালীমাতার প্রতিমাও। প্রতিবছর জাঁকজমক করে হত দুর্গাপুজোও। কিন্তু বাংলাদেশে শেখ হাসিনার জমানার অবসান ঘটতেই বদলে গিয়েছে সবকিছু। মুসলিম মৌলবাদীদের নজরে পড়ে এই হিন্দু মন্দির। গত ২৩ জুন রাতে ওই মন্দির ভাঙে একদল উগ্র মুসলিম। ২৪ ঘন্টার মধ্যে মন্দির অপসারণের সময়সীমা বেঁধে দেয়। মন্দির ভাঙচুরের সময় ঘটনাস্থলে থাকা হিন্দুদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। হামলার পরের দিন ২৩ জুন হিন্দুরা হামলাকারীদের গ্রেফতারির দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভে বসলে আসল অপরাধীদের গ্রেফতার দূরে থাক! উল্টে হিন্দুদেরই গ্রেফতার করা হয়। বুলডোজার এনে সম্পূর্ণরূপে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় ওই দুর্গা মন্দির। অবরোধকারী হিন্দু মহিলা-পুরুষদের উপর লাঠিচার্জের অভিযোগও ওঠে।
উল্লেখ্য, ঢাকার খিলক্ষেতে দুর্গা মন্দির ভেঙে ফেলার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শাহবাগে শুরু হয়েছিল আন্দোলন। সামনের সারিতে রয়েছে হিন্দুরা। ANI-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ বলেছেন যে বাংলাদেশ সনাতনী গ্রুপ এবং সনাতনী আন্দোলন মন্দির ভাঙার প্রতিবাদে এখানে জড়ো হয়েছে। মনীন্দ্র কুমার নাথ ঘোষণা করেছেন যে তারা শনিবার ঢাকা প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবেন। তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে "এই ধরনের নিন্দনীয় কাজ" করার অভিযোগ করেছেন এবং এর বিরোধিতা করেছেন।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঢাকার খিলক্ষেতে তাদের জমিতে নির্মিত একটি অস্থায়ী দুর্গা মন্দির ভেঙে ফেলে। স্থানীরা বলার পরই মন্দিরটি ভেঙে ফেলা হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে তারা খিলক্ষেত সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির ভেঙে ফেলেছে কারণ এটি রেলওয়ের জমিতে অবৈধভাবে নির্মিত হয়েছিল। কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে বেশ কয়েকটি সংখ্যালঘু সংগঠন, অভিযোগ করেছে যে কর্তৃপক্ষ সম্প্রদায়ের লোকদের পূর্ব নোটিশ না দিয়েই মন্দিরটি ভেঙে ফেলেছে।
মন্দির কমিটির সদস্যরা অভিযোগ করেছেন যে সোমবার রাত প্রায় ৯টার দিকে উপাসকরা মন্দিরে অবস্থান করার সময় লাঠিসোঁটা নিয়ে ৫০০ জনেরও বেশি লোকের একটি দল মন্দিরের দখল নেয়, বাংলাদেশ ভিত্তিক সংবাদপত্র নিউ এজ জানিয়েছে। তারা অভিযোগ করেছে যে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র মন্দিরটি ভেঙে ফেলেছে, অন্য সব স্থাপনা অক্ষত রয়েছে।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।