বাংলাদেশের এক প্রেমিক প্রেমিকার ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছবিগুলি অনেকটা দিলওয়ালে দুলহনিয়া লেজায়েঙ্গের মতই। ছবিগুলির পিছনে রয়েছে এক অনবদ্য প্রেম কাহিনি।
বাংলাদেশের রিয়েল লাইফ লাভ স্টোরি রীতিমত টক্কর দিল ভারতীয় সিনেমার আইকনিট ক্যারেক্টার রাজ আর সিমরান জুটিকে। মনে করিয়ে দিয়ে দীর্ঘদিন পুরনো দিলওয়ালে দুলহনিয়া লেজায়েঙ্গে ছবিকে। কারণ সিনেমার রাজ আর সিমরানের মতই এই ছবির নায়ক আর নায়িকার আলাপ থেকে প্রেম সবই রেলওয়ে স্টেশনে। তবে লন্ডন নয় একদম বাংলাদেশে। রাজ আর সিমরানের মত তাদেরও প্রেমের পথ খুব একটা মসৃণ ছিল না। যাইহোক সব মিলিয়ে তাদের দুই বছর আগের বিয়ের ফোটো শ্যুটের ছবি এখনও মন কড়ে নিয়েছে নেটিজেনদের।
যাইহোক বাংলাদেশের রাজ আর সিমরানের আসল নাম আমির হামজা আর ফতেমা। সোশ্যাল মিডিয়াতেই প্রেমের শুরু। আলাপ সেই ২০১৮ সালে। ফতেমার কথায় সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপের পরই তিনি জানতে পেরেছিলেন আমির আত্যহত্যা করতে চায়। কিন্তু কেন তা জানতে চাইলে আমির প্রথমে এড়িয়ে যেত। কিন্তু কিছুদিন পরে সে জানায় প্রেমে ব্যর্থ তাই আত্মহত্যা করতে চায়। একটি মেয়েকে আমির ভালবাসত। কিন্তু মেয়েটি আমিরের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে অন্য একটি ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। তাই একাকীত্ব মেনে নিতে না পেরেই আমির আত্মহত্যার করতে চায়। কিন্তু ফতেমা বাধা হয়ে দাঁড়ায়। বারবার কথা বলে আমিরকে বোঝায় জীবন শেষ করে দেওয়া ঠিক নয়।
ধীরে ধীরে তারা একে অপরের কাছে চলে আসে। এই অবস্থায় আমির নিজেই ফতেমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। তারপর থেকে দুজনের প্রেমের পথ চলা শুরু। প্রথমে ঢাকার একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন ফতেমা। কর্মসূত্রে চলে যান সিলেটে। তারপর থেকেই সিলেট স্টেশনই হয়ে ওঠে দুজনের প্রেমের আখড়া। অফিস যাওয়া ও আসার পথে দুজনে নিয়মিত দেখা করতেন সিলেট স্টেশনে। সেখানে দীর্ঘ সময়ের গল্প-কাছে থাকা! ফতেমার কথায় সময় যে কীভাবে পার হয়ে যেত তা নাকি তাঁরা বুঝতেও পারতেন না।
দীর্ঘ সময়ের প্রেমের ঠিকানা সিলেট স্টেশনে। তাই রেলকর্মী রেল পুলিশ ধীরে ধীরে সকলেরই চেনা হয়ে গিয়েছিল এই প্রেমিক যুগল। ফতেমা জানিয়েছেন দীর্ঘ সময় গল্প করার পর তাঁরা প্রায়ই ছুটে ছুটে ট্রেন ধরতেন। আর আমির প্রথমে ট্রেনে উঠে ফতেমার হাত ধরে ট্রেনে তুল দিতেন। তারপর নেমে পড়তেন ট্রেন থেকে। আমিরও বর্তমানে ফতেমার অফিসেই কাজ করেন।
কিন্তু ফতেমা সিলেটি নন। তাই বিয়েতে বাধ সেধেছিল দুই পরিবার। কিন্তু তাঁরা পরিবারের অমতেই প্রথম রেজিস্ট্রি বিয়ে করেন। তারপরই বছর দুই আগে ২০২০ সালে নিজেদের প্রেমকে চিরতরে ক্যামেরা বন্দি করার জন্য ফোটো শ্যুট করেন। যা এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমত ভাইরাল। বাংলাদেশের গণ্ডী পেরিয়ে ভারতীয় প্রেমিক প্রেমিকাদেরও মন কড়ে দিয়েছেন আমির-ফতেমার প্রেম কাহিনি।