
Taslima Nasrin: বাংলাদেশের (Bangladesh) ময়মনসিংহে (Mymensingh) ধর্ম অবমাননার (Blasphemy) অভিযোগে দীপু চন্দ্র দাশের (Dipu Chandra Das) নির্মম হত্যার ঘটনার নিন্দায় সরব হলেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। দীর্ঘদিন ধরে ভারতের আশ্রয়ে থাকা এই সাহিত্যিক তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলে লিখেছেন, 'ভালুকার একটি কারখানায় কাজ করতো দীপু চন্দ্র দাস। নিতান্তই দরিদ্র শ্রমিক। শুনেছি কারখানায় দীপুর পদোন্নতি হয়েছিল, যে মুসলমান সহকর্মীর পদোন্নতি হয়নি, সে ঈর্ষায় অন্ধ হয়ে এক ভিড় লোকের মধ্যে দীপুকে ঠেলে দিয়ে ঘোষণা করে দিল দীপু ইসলামের নবী সম্পর্কে কটূক্তি করেছে। ব্যস। নবীর উন্মাদ উম্মতেরা ঝাঁপিয়ে পড়লো দীপুর ওপর। অতঃপর পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিল নাকি তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিল জানিনা, তবে এটা ঠিক, দীপু ছিল পুলিশের হেফাজতে। এই ভিডিওটিই তার প্রমাণ।'
বাংলাদেশের পুলিশের ভূমিকার নিন্দা করে তসলিমা লিখেছেন, 'দীপু পুলিশকে জানিয়েছে কী ঘটেছে, কোনও দোষ তার নেই জানিয়েছে, সে নবী সম্পর্কে কোনও মন্তব্যই করেনি, সবই ওই সহকর্মীর ষড়যন্ত্র, জানিয়েছে। পুলিশ দীপুর সহকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। সে না হয় না নিক, কিন্তু দীপুকে তো নিরাপত্তা দেবে, না সেটিও দেয়নি। পুলিশের মধ্যে জিহাদ-প্রেম কিন্তু বেশ আছে। এই জিহাদ-প্রেমের আতিশয্যে পুলিশ কি দীপুকে ছুঁড়ে দিয়েছে এক পাল উন্মাদের দিকে? নাকি পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে জিহাদি জঙ্গিরাই ধরে নিয়ে গিয়েছে দীপুকে, পুলিশ বাধা দিতে পারতো কিন্তু দেয়নি! দীপুকে নিয়ে এরপর রীতিমত উৎসব করেছে। পুলিশের চোখের সামনেই! দীপুকে পিটিয়ে, ঝুলিয়ে, পুড়িয়ে নিকৃষ্ট জিহাদি উৎসব!'
তসলিমা আরও লিখেছেন, 'দীপু চন্দ্র দাস সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষ। তার রোজগারের টাকায় তার পঙ্গু বাবা, মা, স্ত্রী সন্তান চলতো। এখন কী হবে আত্মীয়দের? কে সাহায্য করবে তাদের? কে উন্মাদ খুনীদের বিচার করবে? দীপুর স্বজনদের তো টাকাকড়িও এমন নেই যে জিহাদিদের হাত থেকে বাঁচার জন্য ভারতে পালাবে! গরিবের কেউ নেই। বিশেষ করে সংখ্যালঘু গরিবের! তাদের দেশ থেকেও দেশ নেই। ধর্ম থেকেও ধর্ম নেই।'
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।