কুমিল্লায় হিন্দু নারীকে ধর্ষণ! পরের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ

Published : Jun 30, 2025, 06:13 PM IST
21-year-old Hindu woman raped in Bangladesh's Cumilla

সংক্ষিপ্ত

কুমিল্লায় হিন্দু নারীকে ধর্ষণ! পরের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ

বাংলাদেশে একটি ভয়াবহ যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ২০২৫ সালের ২৬ জুন কুমিল্লা জেলায় ২১ বছর বয়সী এক হিন্দু নারীকে তার বাবার বাড়িতে ফজর আলী নামে এক স্থানীয় রাজনীতিক ধর্ষণ করে। রাতে যখন মহিলা তার দুই সন্তানের সাথে একা ছিলেন তখন তাকে আক্রমণ করা হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর এই অপরাধের কথা প্রকাশ পায়, যা দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি করে।

 

 

নির্যাতনের বীভৎস বিবরণ

ভুক্তভোগী এবং তার ভাইয়ের মতে, অভিযুক্ত তার দরজায় কড়া নাড়ার পর সে দরজা না খোলায় সে দরজা ভেঙে ঢুকে পড়ে। এরপর মুরাদনগর উপজেলার তার বাড়ির ভিতরে তাকে নগ্ন করে মারধর করে ধর্ষণ করে।

জানা গিয়েছে, ফজর আলী পরিবারটিকে ৩৫,০০০ টাকা ঋণ দিয়েছিলেন, এই টাকা নিয়েই এই ঘটনা ঘটে। আক্রমণের সময় তার বাবা-মা এবং ভাইয়েরা বাড়িতে ছিলেন না। একজন পুলিশ কর্মকর্তা দৈনিক প্রথম আলোকে বলেছেন, “সত্যিই ওই নারী বর্বর নির্যাতনের শিকার।”

স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে, কেউ কেউ প্রথমে মহিলাকে আক্রমণ করে, তিনি ধর্ষিত হয়েছেন তা না জেনে। এক প্রতিবেশী এই দৃশ্যের ভিডিও  করেন এবং পরে এই ভিডিওটি অনলাইনে শেয়ার করা হয়। সত্য প্রকাশ পেলে স্থানীয়রা ফজর আলীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তাকে মারধর করে। তবে সে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

পরে তাকে কুমিল্লার একটি হাসপাতালে পাওয়া যায়, সেখান থেকে সে পালিয়ে যায়, কিন্তু অবশেষে রবিবার ভোর ৫টার দিকে ঢাকার সায়েদাবাদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানা গিয়েছে।

পুলিশ এখন অপরাধের সাথে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ৩৮ বছর বয়সী প্রধান অভিযুক্ত ফজর আলী এবং আরও চারজন, যাদের মধ্যে তিনজন ভিডিও রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছে, তারা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ফজর আলী নিজেকে বিরোধী দল বিএনপির সদস্য বলে দাবি করেছেন, যদিও তার কোনও সরকারি পদ ছিল না। স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করেছেন যে তিনি ওই এলাকায় মাদক ও জুয়ার ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন।

মহিলা ও শিশু আইনে মামলা দায়ের

২৭ জুন ভুক্তভোগী মুরাদনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মহিলা ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে এবং আরও গ্রেফতারহতে পারে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা বিক্ষোভে নেমে আসেন। বিক্ষোভকারীরা "প্রত্যক্ষ কার্যক্রম" এবং ধর্ষক ও তার সহযোগীদের জন্য কঠোরতম শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। একজন ছাত্র বিক্ষোভকারী বলেছেন, “নীরবতা কোনও বিকল্প নয়। আমরা আমাদের বোনের জন্য ন্যায়বিচার চাই।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদচ্যুতির পর থেকেই বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর  আক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কর্মী এবং নাগরিকরা। এই ঘটনা দেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।

অনেকে আশঙ্কা করছেন যে দ্রুত শক্তিশালী আইনি কার্যক্রম না নেওয়া হলে এই ধরনের ঘটনা আরও সাধারণ হয়ে উঠতে পারে। এই মামলাটি বাংলাদেশে মহিলাদের বিরুদ্ধে, বিশেষ করে সংখ্যালঘু মহিলাদের বিরুদ্ধে হিংসার বিষয়টি আবার আলোচনায় এনেছে।

PREV
Read more Articles on
click me!

Recommended Stories

কেমন আছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া? শুরু বিদেশ নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড়
গুরুতর অসুস্থ বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, ভর্তি রয়েছেন ঢাকার হাসপাতালে