" ওরা যখন লালন, বাঘা যতীনের মূর্তি ভেঙেছিল হাসিনা চুপছিলেন, মন্দির ভেঙে দিলেও কিছু বলতেন না হাসিনা" বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কী বললেন তসলিমা?
উত্তাল বাংলাদেশ। বেশ কিছু সংবাদ সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এই দেশে অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় রয়েছেন হিন্দুরা। নিজের সমাজ মাধ্যমে এই নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন তসলিমা নাসরিন। ফেসবুক জুড়ে লিখেছেন হাসিনা প্রসঙ্গে। এবার মা-বাবার মৃত্যু প্রসঙ্গেও দু কলম লিখলেন তসলিমা। ফেসবুকের দেওয়ালে ধরা পড়ল তাঁর ক্ষোভ। ফেসবুকে তসলিমা লিখেছেন" ১৯৯৪ -- খালেদা জিয়ার সরকার আমার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগার মামলা করে। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। দু মাস আমি হাইডিং এ থাকি, তারপর আমাকে জামিন দিয়ে দেশ থেকে বের করে। খালেদা জিয়া তাঁর রাজত্বকালে আমার চারটা বই নিষিদ্ধ করে। বইগুলো লজ্জা, উতল হাওয়া, ক, সেই সব অন্ধকার। এবং আমাকে আর দেশে ঢুকতে দেয় না।
১৯৯৬ ---শেখ হাসিনা নির্বাচনে জেতার পর আমি বেশ খুশি, এইবার দেশে ফিরতে পারবো, কিন্তু তিনি আমাকে দেশে ফিরতে দিলেন না। ১৯৯৯ ---আমার ক্যান্সার আক্রান্ত মাকে ডাক্তার জবাব দিয়ে দিয়েছেন, মাত্র ৩ মাস বাঁচবেন। তখন আমি কাউকে না জানিয়ে দেশে ঢুকে পড়ি। চার মাস পর খালেদা যে কায়দায় আমাকে দেশ থেকে বের করেছিলেন, একই কায়দায় হাসিনাও বের করেন। হাসিনা তাঁর রাজত্বকালে আমার ''আমার মেয়েবেলা'' বইটি নিষিদ্ধ করেন। এবং আমাকে আর দেশে ফিরতে দেননি। আমার বাংলাদেশের পাসপোর্ট রিনিউ করেননি। ২০০১---আমার বাবা গুরুতর অসুস্থ। আমি দেশে ফিরতে চাই বাবার সঙ্গে অন্তত কিছুদিন থাকার জন্য। কিন্তু হাসিনা আমাকে দেশে ফিরতে দেননি। আমার বাবা মারা যান। "
এছাড়া হাসিনা প্রসঙ্গেও একগুচ্ছ কথা বলেন তিনি। তিনি তাঁর পোস্টে জানিয়েছেন, আসলে দেশে বসে তিনি কী করেছেন টানা ১৬ বছর? কট্টর মুসলিম মৌলবাদি গোষ্ঠী হেফাজতি ইসলামির সামনে হাঁটু গেড়ে বসে তিনি দান করে ছিলেন বিপুল পরিমাণ জমি, এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ, যেন আরও আরও মাদরাসা বানানো হয়, শিশু কিশোরদের যেন আরও আরও কোরান পড়ানো হয়, আরও আরও মগজধোলাই করা হয় এবং ইসলামি আদর্শে তাদের বড় করা হয়। এই হেফাজতিদের খুশি করার জন্য দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সর্বনাশ করতে দ্বিধা করেননি তিনি। সেক্যুলার আদর্শ ছুঁড়ে ফেলে দিতে দ্বিতীয়বার ভাবেননি। বাংলাদেশে মসজিদ মাদ্রাসা প্রয়োজনের অতিরিক্ত ছিল। তারপরও তিনি নতুন মসজিদ মাদ্রাসা গড়ে দিয়েছেন। ...
এছাড়াও তিনি বলেন. "ইসলামি মৌলবাদিরা যখন লালনের মূর্তি ভেঙ্গেছিল, হাসিনা চুপ ছিলেন। ওরা যখন হিন্দু মন্দিরের দুর্গা, কালী সরস্বতী মূর্তিগুলো ভেঙ্গে ফেলত, হাসিনা কিছু বলতেন না। ওরা যখন কুষ্টিয়ায় বাঘা যতীনের মূর্তি ভেঙ্গেছিল, হাসিনা কিছু বলেননি। ওরা যখন লেডি জাস্টিসের মূর্তি সুপ্রীম কোর্টের সামনে থেকে সরাতে বলেছিল, হাসিনা মাথা নত করে ওদের আদেশ মেনেছিলেন। দেশ জুড়ে হাসিনা তাঁর বাবার মূর্তি স্থাপন করেছিলেন। গত দুদিন ধরে সেগুলো ভেঙ্গে ফেলেছে হাসিনা বিরোধী আন্দোলনকারীরা। চুপ করে থাকা ছাড়া তাঁর আর করার কিছু ছিল না। "
লেকিকা আরও বলেছন, "কিছুদিন পর আরও একপাল ধুরন্দর ধর্মান্ধ লোক ক্ষমতায় বসবে, দেশকে আফগানিস্তান না বানিয়ে ছাড়বে না, না ছাড়ুক, বাংলাদেশের অশিক্ষিত অসভ্য সাম্প্রদায়িক হিংস্র খুনীদের জন্য আফগানিস্তান স্বর্গ ছাড়া কিছু নয়।"