চিনের জিয়াংসু প্রদেশের লিয়ানুয়ানগং শহরে এক ফাস্টফুডের দোকানের চাউমিন ছিল বিখ্যাত। এক পুলিশ কর্তা খাওয়ার পরই গ্রেফতার হল ওই দোকানি।
ফাস্টফুড সেন্টারের খাবার কে না ভালবাসে? সে ভারতই হোক, বা আমেরিকা, কী আফগানিস্তান - মানুষের জীবন যত দ্রুততর হচ্ছে, ততই বাড়ছে ফাস্টফুডের জনপ্রিয়তা। রাস্তার ধারে অস্থায়ী দোকানের রোল-চাউমিনের দোকানে ভিড়ই সেই কথা বলে দেয়। কোনও কোনও ফাস্ট ফুডের স্টল তো এতটাই বিখ্যাত হয়ে যায়, যে সারা শহরের লোক সেখানে ঝাপিয়ে পড়ে। এমনটাই ঘটেছিল চিনের জিয়াংসু প্রদেশের লিয়ানুয়ানগং শহরে। এক ফাস্টফুডের দোকানের তৈরি চাউমিনের 'স্বাদ' এতই ভাল ছিল, যে তার নেশায় পড়ে গিয়েছিলেন আশপাশের একটা বিরাট এলাকার মানুষ। তবে শেষ পর্যন্ত, সেই চাউমিন তৈরির অপরাধেই তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
লিয়ানুয়ানগং শহরে রাস্তার পাশেই খাবারের দোকান দিয়েছিল লি নামে এক ব্যক্তি। মূলত তার দোকানের চাউমিন বিখ্যাত ছিল। একবার যে খেত, সে আর মুখ ফেরাতে পারত না। রোজ রোজ এসে চাউমিন খাওয়া শুরু করত। ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই দারুণ লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছিল লি। দোকান খোলার আগে থেকেই, তার দোকানের সামনে লাইন লেগে যেত ক্রেতাদের। কিন্তু, তার চাউমিন মানুষ যখন এতই পছন্দ করত, তাহলে তাকে গ্রেফতার করল কেন পুলিশ?
ঘটনার সূত্রপাত, তার দোকানের চাউমিনের খ্য়াতি এক পুলিশ অফিসারের কানে পৌছে যাওয়া থেকে। তার চাউমিনের নাম শুনে সেই অফিসারও একদিন, সে দোকান খোলার পরই এসেছিল চাউমিন কিনতে। চাউমিনটি মুখে দিয়ে সন্দেহ হয়েছিল ওই পুলিশ কর্তার। স্বাদে-গন্ধে যেন অদ্ভুত কিছু একটা ছিল। সন্দেহ দূর করতে তিনি ওই চাউমিনের নমুনা চিনা খাদ্য ও ওষুধ তদন্তকারী বিভাগে পাঠিয়েছিলেন। আর তাতেই ধরা পড়েছিল, ওই ব্যক্তি চাউমিনে পোস্তর ভুষির গুড়ো মেশাতো। জিনিসটি একপ্রকার মাদক, আর তার কারণেই একবার তার চাউমিন খেলে আসক্ত হয়ে পড়ত মানুষ। সাধারণ মানুষ বুঝতে পারত না, কেন লি -এর তৈরি চাউমিন খেতে তাদের এত ভাল লাগে। তারা ভাবত স্বাদের জন্য, কিন্তু ক্রেতারা ফিরে ফিরে আসত ওই নেশার টানে।
খাদ্য ও ওষুধ তদন্তকারী বিভাগ ই বিষয়টি নিশ্চিত করার পরই, চিনা পুলিশ ওই ফাস্টফুড সেন্টারে অভিযান চালিয়েছিল। চিলি অয়েলের একটি পাত্রের মধ্য থেকে, পোস্তর তৈরি একটি পদার্থ পাওয়া গিয়েছিল। পুলিশ বুঝতে পারে, ওই পোস্তর ভুসির গুড়োই সে চাউমিনে মেশাতো। এরপরই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে, জেরায় লি জানিয়েছে, করোনার সময়ে ব্যবসার যে ক্ষতি হয়েছে, সেই ক্ষতি মেটাতেই সে মাদক মেশাতো চাউমিনে। লি জানিয়েছে সে চেয়েছিল তার দোকানে আরও বেশি করে করে ক্রেতারা আসুক। দোকানে লোক বাড়তেই, তারও মাদক মিশিয়ে চাউমিন খাওয়ানো শুরু করেছিল সে।