বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর হাতে কি খুন হল তালিবান উপ-প্রধানমন্ত্রী, বাড়ছে জল্পনা। অডিও বার্তা প্রকাশ করে কী বলল মোল্লা আব্দুল ঘানি বরাদর?
তালেবান সহ-প্রতিষ্ঠাতা তথা আফগানিস্তানের নতুন উপ-প্রধানমন্ত্রী মোল্লা আবদুল ঘানি বরাদার কি মৃত? গত বেশ কয়েকদিন ধরে প্রকাশ্যে আসেনি সে। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় তৈরি হয়েছে বিরাট জল্পনা, আদৌ মোল্লা বরাদর বেঁচে আছে তো? বেশ কয়েকটি সংবাদ প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রতিদ্বন্দ্বী তালিবান গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষে মোল্লা বরাদর হয় নিহত হয়েছেন, নয়তো গুরুতর আহত হয়েছেন। তবে েই নিয়ে জল্পনা বাড়ার আগেই তালিবানদের পক্ষ থেকে খোদ মোল্লা বরাদরেরই একটি অডিও বার্তা প্রকাশ করা হল। দাবি করা হল, ই সংক্রান্ত সব খবরই ভুয়ো। অফিসিয়াল তালেবান সাইটে পোস্ট করা অডিও বার্তাটি আদৌ সত্য কি না, তার কোনও প্রমাণ অবশ্য নেই।
কাবুল দখলের পর থেকেই তালিবানদের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীর মধ্য়ে ক্ষমতার দ্বন্দ্বের খবর পাওয়া গিয়েছিল। প্রধানত কান্দাহার গোষ্ঠী, হাক্কানি নেটওয়ার্ক ও দোহা ইউনিটের মধ্যে লড়াই চলছিল। যে কারণে, সরকার ঘোষণা করতে দেরীও হয়। সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই, আফগান রাষ্ট্রপতির প্রাসাদের মধ্যেই মোল্লা বরাদর আহত বা নিহত হয়েছে বলে খবর রটেছিল। বিশেষ করে ভারতীয় সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নিয়ে তীব্র উন্মাদনা তৈরি হয়েছে। এরমধ্যেই, সোমবার এই অডিও বার্তা পোস্ট করল তালিবান মুখপাত্র মহম্মদ নইম। তালিবানদের কাতার কার্যালয়ের মুখপাত্র সুহেল শাহীনও বিষয়টি সমর্থন করে ওই অডিও বার্তাটি টুইট করেছে।
সে লিখেছে, 'আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরশাহির উপ-প্রধানমন্ত্রী মোল্লা বরাদর আখুন্দ একটি কন্ঠবার্তায় তার সংঘর্ষে আহত বা নিহত হওয়ার সমস্ত দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন এটি মিথ্যা এবং সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আফগান সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজ-ও অডিও ক্লিপটি সম্পর্কে টুইট করেছে। তারা বলেছে, 'তালিবান সরকারের উপ -প্রধানমন্ত্রী মোল্লা আবদুল ঘানি বরাদর একটি অডিও বার্তায় নিশ্চিত করেছেন যে তিনি বেঁচে আছেন এবং তিনি আহত হননি। তালেবানদের মধ্যে সংঘর্ষে বরাদরের আহত বা নিহত হওয়ার খবর পাওয়ার পরই তালেবান মুপখপাত্র মহম্মদ নইমের এই বার্তা টুইট করেছে।'
গত সপ্তাহে মোল্লা মহম্মদ হাসান আখুন্দের প্রধান সহকারি হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিল বরাদর। এদিনের অডিও বার্তায় সে তার মৃত্যুর গুজবকে 'ভুয়া প্রচার' বলেছেন। ক্লিপে বরাদরকে বলতে শোনা গিয়েছে, 'আমার মৃত্যুর খবর মিডিয়ায় এসেছে। গত কয়েকদিন ধরে আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করছি। এই মুহুর্তে আমি যেখানেই আছি, আমার সব ভাই ও বন্ধুরা, আমরা সবাই ভালো আছি। মিডিয়া সবসময় ভুয়ো প্রোপাগান্ডা প্রকাশ করে। অতএব, সাহসের সঙ্গে সেইব মিথ্যা প্রত্যাখ্যান করুন। আ্রর আমি আপনাদের একশোভাগ নিশ্চিত করছি, যে কোনও সমস্যা নেই, আমাদের মধ্যে কোনও সমস্যা নেই।'
আরও পড়ুন - 'কাপড় ছুঁয়ো না' - তালিবান-বিরোধী প্রতিবাদে নেটদুনিয়ায় রঙ লাগালেন আফগান সুন্দরিরা, দেখুন
তবে, এই বার্তা আসার পরও সোশ্যাল মিডিয়ায় তার মৃত্যুর জল্পনা থামেনি। অনেকেই বলছেন, মৃত্যুর সমস্ত গুজব দূর করার জন্য বরাদরের প্রকাশ্যে শারীরিকভাবে উপস্থিত হওয়ার সময় এসেছে। তবে, তালিবান নেতাদের মৃত্যুর গুজব অনেক ক্ষেত্রেই সত্যি হয় না। গত কয়েক বছর ধরেই যেমন তালেবানদের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার মৃত্যুর গুজবও রটেছিল। তবে, তালিবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের দুই সপ্তাহ পরই তালিবান মুখপাত্ররা জানিয়েছিল, আখুন্দজাদা কান্দাহারে আছেন। আবার ই বছর ৯/১১-র দিন অডিও বার্তা দিয়ে নিজের মৃত্যুর গুজব দূর করেছে আল-কায়েদা প্রধান জাওয়াহিরিও।