আইফোন কিনতে কিডনিও বিক্রি করছে চিনারা, ডায়ালিসিসের সাহায্যে টিকে আছেন ২৬-এর যুবক

ভারতের ফোনের বাজার দখল করে নিয়েছে চিনা সংস্থারা

অথচ আইফোনটি কিনতে কিডনি বেচে দিচ্ছেন চিনার

যার জেরে গত ৯ বছর ধরে শয্যাশায়ী এক চিনা যুবক

টিকে থাকতে রোজ করাতে হয় ডায়ালিসিস

amartya lahiri | Published : Nov 17, 2020 10:03 AM IST / Updated: Nov 19 2020, 12:00 PM IST

চিনা ফোন ভারতের বাজার দখল করে নিয়েছে, অথচ অ্যাপল সংস্থার আইফোনটি কিনতে কিডনি বেচে দিতেও কসুর করেন না চিনারা। আর এর জেরেই এখন এক ২৬ বছরের চিনা যুবক পুরোপুরি শয্যাশায়ী। ২০১১ সালে একটি আইফোন ৪ এবং একটি আইপ্যাড ২ কেনার কাড়নায় নিজের একটি কিডনি বিক্রি করে দিয়েছিলেন তিনি।

ওই যুবকের নাম ওয়াং শ্যাংকুন। ২০১১ সালে তাঁর বয়স ছিল ১৭। অ্যাপল সংস্থার ওই দুটি যন্ত্র হাতে পেতে একেবারে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন তিনি। এদিকে তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। অ্যাপলের ওই মহামূল্যবান যন্ত্র কেনা তাঁর পক্ষে দুঃসাধ্য ছিল। এই সময়ই অনলাইনে একটি অঙ্গদানের বিজ্ঞাপন চোখে পড়েছিল তাঁর। দেখা মাত্রই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁর একটি কিডনি বিক্রি করে দিয়ে, তার বিনিময়ে পাওয়া অর্থেই তিনি মনের সাধ পূরণ করবেন।

এরপর অনলাইন চ্যাটেই ওই অঙ্গ সংগ্রহকারীর সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন শ্যাংকুন। চিনের হুনান প্রদেশের একটি ক্লিনিকে হয়েছিল অবৈধ অস্ত্রোপচার। সেইসময় শ্যাংকুন ছিলেন অপ্রাপ্তবয়স্ক। ক্লিনিক থেকে তাঁর বাবা-মা'এর সম্মতিও নেওয়া হয়নি। তবে শ্যাংকুন-এর তাই নিয়ে কোনও মাথাব্যথা ছিল না। কারণ, তাঁর ধারণা ছিল, একটি কিডনিই যথেষ্ট। হাতে এসেছিল কড়কড়ে ২০,০০০ ইউয়ান, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। যা দিয়ে হাতে এসেছিল কাঙ্খিত অ্যাপলের যন্ত্রদুটি।  

মাসখানেক যেতে না যেতেই অবশ্য সব আনন্দ উড়ে গিয়েছিল এই চিনা যুবকের। জানা গিয়েছে, অস্ত্রোপচারের কয়েক মাস পরই, তাঁর অবশিষ্ট কিডনিতে সংক্রমণ হয়েছিল। যা থেকে ধীরে ধীরে সেই কিডনিটি কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। দ্রুত তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। এক সময়ে বিছানা থেকে নামার ক্ষমতাও হারান তিনি। এখনও সেই অবস্থাতেই পড়ে আছেন তিনি। প্রতিদিনই ডায়ালাইসিস করার প্রয়োজন হয়।

এই ঘটনা ২০১১ সালেই জানাজানি হয়ে গিয়েছিল। এই ঘটনায় চিনা পুলিশ এখনও পর্যন্ত নয় জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে দুই শল্যচিকিৎসকও আছেন। আর শ্যাংকুনের পরিবার প্রায় ৩ লক্ষ ডলার ক্ষতিপূরণও পেয়েছে। কিন্তু, শ্যাঙ্কুনের ঘটনা যে ব্যতিক্রম, তা নয়। চিনে এখনও অনেক যুবকের মধ্যেই আইফোনের মতো মহামূল্য যন্ত্র কেনার জন্য এইরকম ছটফটানি দেখা যায়। আর তার সুযোগ নেয় অঙ্গ সংগ্রহকারী বিভিন্ন চক্র। যার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জানা যায় না।

Share this article
click me!