সভ্য -জগতে বাঁচল না 'বাস্তবের টারজান', জঙ্গল থেকে বের হতেই প্রাণ কাড়ল ক্যান্সার

চার দশক জঙ্গলে কাটিয়ে ফিরেছিলেন সভ্য জগতে গোটা বিশ্বে ভাইরাল হয়েছিল হো ভ্যান ল্যাং-এর কাহিনি। মাত্র ৫২ বছর বয়সেই লিভার ক্যান্সারে মৃত্যু হল তাঁর। 

মাত্র কয়েক মাস আগেই গোটা বিশ্বে ভাইরাল হয়েছিল হো ভ্যান ল্যাং-এর কাহিনি। তাঁকে  বলা হয়েছিল, 'বাস্তব জীবনের টারজান' (Real Life Tarzan)। আসলে কল্প কাহিনির নায়ক টারজানের মতোই, ভিয়েতনামের এই ব্যক্তিও জীবনের প্রথম ৪১ বছর ধরে তাঁর বাবা এবং দাদার সঙ্গে সভ্য জগৎ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গভীর অরণ্যে বসবাস করতেন। মাত্র কয়েক বছর হল তিনি সভ্য জগতে এসেছিলেন। কিন্তু, দুঃখের বিষয়, লিভার ক্যান্সারে ভুগে মাত্র ৫২ বছর বয়সেই তাঁর মৃত্যু হল। তাঁর বন্ধু এবং শুভাকাঙ্খীরা মনে করছেন আধুনিক জীবনধারাই তার জীবনে দ্রুত ইতি টানল। 

চিত্রগ্রাহক আলভারো সেরেজোর হাত ধরেই সভ্য জগতে ফিরেছিলেন হো ল্যাং এবং তার পরিবার। ল্যাং-এর মৃত্যুর পর সেরেজো বলেছেন, ল্যাং-এর মৃত্যু তার পক্ষে খুবই দুঃখের, তবে তিনি জানেন মৃত্যুতে ল্যাং মুক্তিও পেয়েছেন। কারণ, গত কয়েক মাসে ধরে তিনি খুবই কষ্ট পাচ্ছিলেন। সেরেজো আরও বলেছেন, ল্যাং একজন দারুণ সুন্দর মানুষ ছিলেন। তাঁকে ভুলে যাওয়া সেরেজোর পক্ষে অসম্ভব হবে। তিনি প্রতিদিনই তাঁকে মিস করবেন। 

Latest Videos

আরও পড়ুন - 'বাস্তবের টারজান' - নারী-পুরুষের শরীরের তফাতও জানেন না, ৪১ বছর জঙ্গলেই ছিলেন এই ব্যক্তি

"

ল্যাং-কে তিনিই সভ্য জগতে এনেছিলেন, তবে তাকে সভ্য জগতে থাকতে দেখতে তাঁর ভালো লাগেনি। কারণ ল্যাএর মন এবং শরীর এত বড় পরিবর্তন সামলাতে পারবে কি না, তাই নিয়ে সবসময় উদ্বিগ্ন ছিলেন সেরেজো। বরং, জঙ্গলে তাঁর সঙ্গে কাটানো সময়টাই সেরেজো মনে রাখবেন। সেখানে ল্যাং-এর স্বচ্ছন্দ জীবনযাত্রা দেখেছিলেন তিনি। তাকে শিকার করতে দেখেছিলেন, কীভাবে পুরোপুরি সভ্যতা বিচ্ছিন্ন হয়ে তিনি বসবাস করতেন, তাও দেখেছিলেন। জঙ্গলে সেরেজোর যা করতে কয়েক ঘন্টা লাগত, তা ল্যাং কয়েক সেকেন্ডে করতে পারত। 

চলতি বছরের শুরুতে সামনে এসেছিল হো ভ্যান ল্যাং এবং তাঁর পরিবারের অজ্ঞাতবাসের কাহিনি। ১৯৭২ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধের শেষ দিকে এক মার্কিন বোমার আঘাতে ল্যাং-এর মা এবং দুই ভাইবোনের মৃত্যু হয়েছিল। তারপরই, একেবারে কোলের ল্যাং এবং তার দাদাকে নিয়ে সভ্য জগত ছেড়ে তাঁদের বাবা কুয়াং এনগাই প্রদেশের তাই ট্রা জেলার জঙ্গলের গভীরে চলে গিয়েছিলেন। তারপর থেকে তাদের সঙ্গে ৪১ বছরে মাত্র পাঁচজন মানুষের সাক্ষাত হয়েছিল। প্রত্যেকবারই তারা পালিয়ে গিয়েছিল। মধু, ফল এবং বন্য প্রাণী খেয়ে বেঁচেছিলেন ল্যাং, তার দাদা তার এবং  তাদের বাবা। সেরেজো জানিয়েছিলেন, সভ্য জগতে আসার আগে নারী সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না ল্যাং-এর। পরে নারী-পুরুষের মধ্যে পার্থক্য আছে তা বুঝলেও, সেই পার্থক্য যে আসলে কী, তা বুঝত না ল্যাং।

আরও পড়ুন - এমন চাউমিন তৈরি করত দোকানদার, যে লেগে যেত নেশা - আপনিও ফাস্টফুড সেন্টারে এমন কিছু খাননি তো

আরও পড়ুন - থ্যাতলানো মুখ, অর্ধনগ্ন মহিলার দেহ নিয়ে ধাঁধায় পুলিশ - সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা গেল ভয়ঙ্কর দৃশ্য

আরও পড়ুন - আত্মঘাতী হামলার নেটওয়ার্ক চালাত, সেই জঙ্গিই হল তালিবানর গোয়ান্দা বিভাগের উপপ্রধান, দেখুন

তবে সভ্য জগতে আসার পর থেকেই শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছিল সে। বারবারই স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। পেটের অসুখে ভুগছিলেন। পরে লিভারে ক্যানসার ধরা পড়ে। ল্যাং-এর মৃত্যুর পর সেরেজো ও অন্যান্য শুভাকাঙ্খীরা বলছেন, সভ্য জগতে আসার পরে তাকে বেশ কিছু আধুনিক জীবনধারার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল প্রচুর প্রক্রিয়াজাত খাদ্য গ্রহণ। মাঝে মাঝে অ্যালকোহলও পান করতেন। জীবনের প্রথম চার দশক জঙ্গলের খাটি খাদ্যাভ্যাসে তৈরি শরীর, এই সভ্য জগতের খাবার-দাবার সহ্য করতে পারেনি। হয়তো তারই প্রভাব পড়েছিল তাঁর স্বাস্থ্যের উপর এবং শেষে তাঁর মৃত্যুরও কারণ হল।
 

Share this article
click me!

Latest Videos

‘Bangladesh-কে মারতে হবে না চোখ দেখালেই যথেষ্ঠ’ বাংলাদেশকে ধুয়ে দিলেন Dilip Ghosh | Bangladesh News
Narendra Modi : 'কুয়েত যেন মিনি হিন্দুস্তান', কুয়েত সফরে এসে কেন বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী?
Suvendu Adhikari Live: এগরায় জনসভা শুভেন্দুর, কী বার্তা, দেখুন সরাসরি
Dev Adhikari : এবার কী আসছে খাদান ২? খাদান সাফল্য পেতেই বড়সড় ঘোষণা দেব-যীশুদের
'একটা আস্ত অশিক্ষিত...গোটা রাজ্যটাই জঙ্গিদের হাতে' কড়া বার্তা শুভেন্দুর | Suvendu Adhikari