গত সোমবারই ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়ে দেয় এবার থেকে চিনের ৫৯টি অ্যাপকে এদেশে আর ব্যাবহার করা যাবে না। যার মধ্যে রয়েছে টিক টক, শেয়ার চ্যাট, হ্যালোর মত একাধিক জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশন। মঙ্গলবার থেকেই গুগল প্লে স্টোর আর অ্যাপেল স্টোর থেকে উধাও হয়ে যায় টিক টক সহ একাধিক চিনা অ্যাপ। ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই গরম গরম প্রতিক্রিয়া দিতে শুরু করে বেজিং। এবার ভারতীয় সংবাদপত্র ও ওয়েবসাইটগুলির অ্যাক্সেস বন্ধ করা হল চিনে।
মঙ্গলবার থেকেই ভারতীয় ওয়েবসাইটগুলির অ্যাক্সেস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর। আগে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএনের মাধ্যমে ভারতীয় চ্যানেল, সংবাদপত্র ও ওয়েবসাইটগুলো দেখা সম্ভব হতো চিনে। কিন্তু গত দুই দিন ধরে সেই ভিপিএনও ব্লক করে রেখেছে চিন।
ফলে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক সার্ভার ছাড়া ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের কোনও ওয়েবসাইট চিনে বসে আর দেখা যাবে না। তবে, ওয়েবসাইটগুলি বন্ধ করা হলেও ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলি এখনও পর্যন্ত আইপি টিভি মাধ্যমে অ্যাক্সেস করা যাচ্ছে চিনে।
ভারত চিনা অ্যাপ বন্ধ করলেও চিনা নিউজ চ্যানেল ও সাইটগুলির ক্ষেত্রে এখনও লকোনওরকম বিধিনিষেধ আরোপ করেন নয়াদিল্লি। ফলে, ভারতে বসে চিনা সাইটগুলি অ্যাক্সেস করা যাচ্ছে।
বেইজিংয়ের ভারতিয় দূতাবাসের একটি সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে শুধু আইপি টিভির মাধ্যমে ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলো দেখা যাচ্ছে। ওয়েবসাইটগুলি সাধারণত ভিপিএনের মাধ্যমে দেখা যায়। কিন্তু ভিপিএন যাতে কাজ না করে তার জন্য অ্যাডভান্সড ফায়ারওয়াল তৈরি করেছে চিন। এর ফলে শুধু ভারতীয় ওয়েবসাইটই নয়, বিবিসি ও সিএনএনের মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরও যাচাই বাছাই করে সম্প্রচারিত করে চিন। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, হংকংয়ে চিন বিরোধী বিক্ষোভ সংক্রান্ত কোনও খবর এই গণমাধ্যমগুলোতে দেখানো হলেই ততক্ষণাৎ তা ব্লাক আউট হয়ে যায়। চিন বিরোধী খবর দেখানো বন্ধ হওয়ার পরই ফের গণমাধ্যমগুলো দেখা যায়।
লাদাখ সীমান্তে ভারতীয় এবং চিনের সেনাদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছিল। এরই মধ্যে গত সোমবার কেন্দ্রীয় সরকার ভারতীয়দের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা এবং দেশের নিরাপত্তার যুক্তি দিয়ে ৫৯টি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ভারত সরকারের কথায়, এই চিনা অ্যাপগুলোর সার্ভার ভারতের বাইরে রয়েছে। যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের তথ্য চুরি করা হচ্ছে।
ভারতের এই সিদ্ধান্তে স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বিগ্ন চিন। চিন সেই উদ্বেগ গোপনও করেনি। ভারতের এই কড়া পদক্ষেপ জানার পরেই নড়েচড়ে বসে বেজিং। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে ঝাও লিজিয়ান বলেন, 'ঘটনা জানার পর চিন গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।'