মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও লাতিন আমেরিকায় করোনার সংক্রমণ লাগাম ছাড়া ভাবে ছড়াচ্ছে। গোটা বিশ্বে মৃত্যু সংখ্যা ৫ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় আরও আশঙ্কার কথা শোনাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। 'হু' সতর্ক করে বলছে অতিমারী থামার এখনি কোনও লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না।
গোটা বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি পার করে গিয়েছে। সংক্রমণ আয়ত্বে না আসাক বিশ্বের কয়েকটি দেশ আবার নতুন করে লকডাউনের পথে হাঁটছে। বিশ্ব অর্থমীতি বিপর্যস্ত অবস্থায় পৌঁছেছে। এই অবস্থায় 'হু' প্রধান টেড্রস আধানম ঘেব্রেইসাসসতর্ক করে বলছেন, ‘আমরা সবাই এর সমাপ্তি চাই। আমরা সবাই আমাদের জীবন নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। কিন্তু কঠিন বাস্তবতা হচ্ছে, এটা শেষ হওয়ার ধারেকাছেও নেই। কিছু দেশ যদিও কিছুটা উন্নতি করেছে, তবু বিশ্বজুড়ে মহামারিটি দ্রুতগতিতেই ছড়াচ্ছে।’
টেড্রস বলেছেন, ছ’মাস আগে চিনে প্রথম এই করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কথা শোনা যায়। এর পরে গোটা বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। চিনে নতুন করে সংক্রমণের ধাক্কায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বেজিংয়ে ‘নো গো জোন’ বানানোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। স্কুল-কলেজ-অফিসে তালা পড়েছে। রাজধানী শহর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়ার অন্তত বারোশো বিমান বাতিল করা হয়েছে, বাতিল করা হয়েছে কয়েকশো ট্রেন। সংক্রমণ ঠেকাতে লাখের কাছাকাছি মানুষের গণ রক্তপরীক্ষা শুরু হয়েছে।
তিনি আরও যোগ করেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সঠিক পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও মারাত্মক রূপ নেবে। আরও বেশি মানুষ করোনা ভাইরাসের শিকার হবে। তিনি পরীক্ষা, শনাক্ত, আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিনের ওপর পুনরায় গুরুত্বারোপ করেন।
করোনা পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠার কারণ হিসেবে গবেষকরা মনে করছেন মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি অনেক কমে গেছে। 'হু' প্রধানের বক্তব্য, ভাইরাসের সংক্রমণ তখনই কমবে যখন মানুষের শরীরে ‘হার্ড ইমিউনিটি’তৈরি হবে। অর্থাৎ শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। বিশেষজ্ঞরা আগেই বলেছিলেন, সমাজের এক অংশের মধ্যে যদি ‘হার্ড ইমিউনিটি’ তৈরি হয়, তাহলেই ভাইরাল স্ট্রেন ব্যাপক হারে সংক্রমিত হতে পারবে না। একটা পর্যায়ের পরে স্ট্রেন দুর্বল হতে শুরু করবে। সেই পর্যায় থেকেই সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমতে শুরু কমবে। তবে এখনই সেই পর্যায়ে এসে পৌঁছনো যায়নি।
এদিকে বিশ্বে এক কোটিরও বেশি লোক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটোই যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি। দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন ১ লাখ ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ এবং আক্রান্ত ২৫ লাখ। বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংক্রমণ ছড়িয়েছে ব্রাজিলে।