ভেঙে দু'টুকরো হয়ে গিয়েছে পৌরাণিক খুনে পাথর 'সেশো-সেকি' (Sessho-seki), বেরিয়ে পড়েছে অশুভ আত্মা। নাসু আগ্নেয়গিরির (Nasu Volcano) কাছে অবস্থিত এই ভাঙা পাথরকে ঘিরে তীব্র আতঙ্ক জাপানে (Japan)।
ভেঙে দু'টুকরো হয়ে গিয়েছে খুনে পাথর। বেরিয়ে পড়েছে দীর্ঘ বছর ধরে বন্দি থাকা এক অশুভ আত্মা। আর এই নিয়েই গত রবিবার থেকে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে জাপানে (Japan)। এই বিশেষ পাথরটি জাপানের নাসু আগ্নেয়গিরির (Nasu Volcano) কাছে অবস্থিত। গত রবিবার পর্যটকরা প্রথম পাথরটিকে ভেঙে অর্ধেক অবস্থায় দেখতে পান। আর তারপর থেকেই স্থানীয় বাসিন্দারা তো বটেই, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গোটা জাপানেই তীব্র ভীতির জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, পাথরটি ভেঙে যাওয়া অশুভ আত্মার পলায়নেরই ইঙ্গিত।
কিন্তু, কোথা থেকে এল এই অশুভ আত্মা আর ওই বিশেষ পাথরটি? এর উত্তর রয়েছে জাপানি পুরাণ-কথায়। পাথরটির নাম 'সেশো-সেকি' (Sessho-seki)। পুরান অনুযায়ী এটি এমন একটি পাথর, যার সংস্পর্শে আসলেই মৃত্যু হয়। আর এই পাথরেই বন্দি করা হয়েছিল এক নয়টি লেজ বিশিষ্ট শেয়ালের দুষ্ট আত্মাকে। সেই লেজ বিশিষ্ট শেয়াল এক সময় 'তামামো-নো-মাই' (Tamamo-no-Mae) নামে এক সুন্দরী মহিলার রূপ নিয়ে, জাপানি সম্রাট টোবা'কে (Emperor Toba) হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তা ব্যর্থ হয় এবং তামামো-নো-মাই পরাজিত হন। এরপরই তার আত্মা 'সেশো-সেকি'র ভিতর বন্দি হয়েছিল বলে মনে করা হয়।
পৌরানিক পাথর হলেও, ১৯৫৭ সালে এই পাথরটিকে একটি ঐতিহাসিক স্থান হিসাবে ঘোষণা করেছিল জাপান সরকার। প্রতি বছর গোটা জাপান থেকেই বহু পর্যটক আসেন ওই স্থানে। তবে, গত রবিবার, কয়েকজন পর্যটক সেখানে গিয়ে পাথরটি অর্ধেক ভাঙা অবস্থায় দেখেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। খুনে পাথরটির কাছাকাছি যাতে কেউ না যায়, তার জন্য সেটি একটি দড়ি দিয়ে ঘেরা ছিল। ওই পর্যটকরা জানিয়েছেন, সেই সময় ওই দড়িটি মাটিতে পড়েছিল। ভাঙা 'সেশো-সেকি'র ছবি তুলে তাঁরা টুইটারে পোস্ট করেন, সঙ্গে লেখেন, 'মনে হয় এমন কিছু দেখে ফেললাম, যা দেখা উচিত নয়'।
সেই ছবি এখন জাপানে ভাইরাল হয়েছে। আর সঙ্গে সঙ্গে এক শীতল আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে দেশ জুড়ে। অনেকেই বড় কোনও ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। তবে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রাকৃতিক কারণেই পাথরটি দুই খণ্ডে ভেঙে গিয়েছে। নাসু টাউন ট্যুরিস্ট ইনফরমেশন সেন্টারের (Nasu Town Tourist Information Centre) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পাথরটিতে আগেই একটি ফাটল ছিল। এর সঙ্গে গত কয়েকদিন ধরে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে এবং তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে গিয়েছে। এই তীব্র ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণেই সম্ভবত পৌরাণিক পাথরটি ভেঙে গিয়েছে। তাই অশুভ আত্মার ভয় নয়, স্থানীয় এই পর্যটন আকর্ষণটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তারা বেশি দুঃখিত।