রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রকের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা দিমিক্রি বিরিচেভস্কি জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া হবে দ্রুত, চিন্তাশীল ও সংবেদনশীল। কিন্তু যারা সহযোগিতা করবে রাশিয়া শুধুমাত্র তাদেরই পাশে থাকবে, বাকিদের নয়।
ইউক্রেনে (Ukraine) আগ্রাসনের কারণে রাশিয়ার (Russia) ওপর একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা (sanctions) জারি করা হয়েছে। রাশিয়ার আর্থনীতিতে ধাক্কা দিতেই এজাতীয় পদক্ষেপ নিয়েছে ইউরোপের একাধিক দেশ ও আমেরিকা। মঙ্গলবারই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ার থেকে তেল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বুধবার তারই বিরুদ্ধে হুংকার ছাড়লেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব সবথেকে বেশি ও দ্রুত পড়বে পশ্চিমের দেশগুলিতে। তিনি বলেছেন আমাদের ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞা আপনাদেরও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এই প্রথম রাশিয়ার অর্থনীতি গুরুতর সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। যুদ্ধের কারণে পশ্চিমের দেশগুলি রাশিয়ার ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। রুশ কর্পোরেট ব্যবস্থা পঙ্গু করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। রাশিয়ার একাধিক ব্যবসায়ী যাঁরা ইংল্যান্ড বা অন্যত্র বসবাস করেন বা ব্যবসা করেন তাদের অর্থও ফ্রিজ করা শুরু হয়েছে। যা ক্রেমলিনকে পরোক্ষে চাপে ফেলবে বলেও মনে করেছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
এই অবস্থাতে দাঁড়িয় রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রকের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা দিমিক্রি বিরিচেভস্কি জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া হবে দ্রুত, চিন্তাশীল ও সংবেদনশীল। কিন্তু যারা সহযোগিতা করবে রাশিয়া শুধুমাত্র তাদেরই পাশে থাকবে, বাকিদের নয়। রুশ তেলের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়েও রাশিয়া কড়া মন্তব্য করেছে। বলেছেন, ইউরোপ বছরে প্রায় ৫০ কোটি টন তেল ব্যবহার করে। যার মধ্যে রাশিয়ার প্রায় ৩০ শতাংশ তেল ব্যবহার হত। রুশ হিসেব অনুযায়ী রাশিয়ার প্রায় ৫০ মিলিয়ন টন তেল ও ৮০ মিলিয়ন টন পেট্রোকেমিক্যাল ব্যবহার করে ইউরোপের দেশগুলি। সূত্রের খবর আমেরিকার থেকে অনেকটা কম দামেই রাশিয়া ইউরোপের দেশগুলিতে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করে। তাই রুশ তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রভাব বাকি দেশগুলিতেও পড়তে বাধ্য।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটো সামরিক জোটকে রাশিয়ার সীমান্তে পাঠানোর পরই রাশিয়ার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে শুরু করে। দেশের নিরাপত্তার কারণেই রাশিয়ার এই বিশেষ সামরিক অভিযান।
অন্যদিকে ইউক্রেন স্পষ্ট করে দিয়েছে দেশটি অস্তিত্ত্ব রক্ষার লড়াই করছে। দেশের সার্বভৌম্যত্ব আর স্বাধীনতার জন্য তারা লড়াই করবে। পাশাপাশি পশ্চিমের দেশগুলির থেকে একাধিকবার সহযোগিতা চেয়েও তারা পায়নি বলেও অভিযোগ করেছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে চিন রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়েও ইউক্রেনে ত্রাণ পাঠাচ্ছে। পাশাপাশি সমস্যা সমাধানে আলোচনার ওপর জোর দিয়েছে। এই অবস্থান গ্রহণ করেছে ভারত। বিবাদমান দুটি দেশের সঙ্গেই ভালো সম্পর্কে রেখে যুদ্ধ বন্ধ করার আর্জি জানিয়েছে। সমস্যা সমাধানে আলোচনাকেই অগ্রাধিকার দিয়েছে।