ন্যাটো প্রধান জেন্স স্টোলটেনবার্গ টুইটারে জানান, "রুশ বাহিনীর মোকাবিলা করার জন্য ইউক্রেনে পাঠানো হচ্ছে এয়ার ডিফেন্স মিসাইল। এছাড়া ইউক্রেনকে ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী অস্ত্রও দিচ্ছে ন্যাটো। এনিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে।"
পঞ্চম দিনে পা দিয়েছে ইউক্রেন (Ukraine) ও রাশিয়ার (Russia) যুদ্ধ। এই পরিস্থিতিতে একা লড়াই করতে হচ্ছে বলে অভিমানের সুর ঝড়ে পড়েছিল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির (Volodymyr Zelenskyy) গলায়। সাহায্য না করার জন্য বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলিকে একহাত নিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি ন্যাটোর উপরও তাঁর কোনও ভরসা নেই বলে জানিয়েছিলেন। আর সেই যুদ্ধের ঠিক পাঁচ দিনের মাথাতেই ইউক্রেনের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল ন্যাটো। রাশিয়া-ইউক্রেন (Russia and Ukraine Conflict) বৈঠকের মাঝেই টুইট করেন ন্যাটো (NATO) প্রধান জেন্স স্টোলটেনবার্গ (Jens Stoltenberg)।
টুইটারে তিনি জানান, "রুশ বাহিনীর মোকাবিলা করার জন্য ইউক্রেনে পাঠানো হচ্ছে এয়ার ডিফেন্স মিসাইল (Air Defence Missiles)। এছাড়া ইউক্রেনকে ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী অস্ত্রও দিচ্ছে ন্যাটো। এনিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে।"
আরও পড়ুন- রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট কি মিটবে প্রিপিয়াত নদীর তীরে, বেলারুশে শান্তি বৈঠকে রাজি কিয়েভ
যুদ্ধের মধ্যেই বেলারুশ সীমান্তে আলোচনা শুরু করেছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের দুই দেশের প্রতিনিধিরা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেইকসি রেজনিকোভ। এর আগেও আলোচনায় বসার জন্য ইউক্রেনকে প্রস্তাব দিয়েছিল রাশিয়া। কিন্তু, সেই সময় বেলারুশে আলোচনায় বসতে রাজি হননি জেলেনস্কি। ইউক্রেন সরকারের সূত্র অনুযায়ী, মস্কোর সঙ্গে এই আলোচনার প্রধান উদ্দেশ্য অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা এবং ইউক্রেন থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার করা।
আরও পড়ুন- অপারেশন গঙ্গায় যোগ দিল ইন্ডিগো-স্পাইস জেট-এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সেনা অভিযানের ঘোষণা করেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তারপর থেকেই ইউক্রেনে হামলা চালাতে শুরু করে রাশিয়া। গোলা-গুলি-ক্ষেপণাস্ত্র কোনও কিছুই বাদ যায়নি। হামলার জেরে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ইউক্রেনের একাধিক এলাকা। প্রাণ হারিয়েছেন অনেকেই। ইউক্রেনের একাধিক শহরের দখল নিচ্ছে রুশ সেনা। আর এই পরিস্থিতির মধ্যেই এবার আলোচনার টেবিলে বসেছে দুই দেশ। যদিও এখনও পর্যন্ত ইউক্রেনে অব্যাহত রয়েছে যুদ্ধ। এই আলোচনা শুরুর আগে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, 'আমরা আলোচনা শুরুর অপেক্ষায় রয়েছি। আমি আলোচনার ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান কী হবে, তা এখনও জানাতে চাই না।'
তবে শুধুমাত্র ন্যাটোই নয় ইউক্রেনকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নও (European Union)। বিদেশ নীতি প্রধান জোসেপ বোরেল বলেন, 'স্থলে এবং আকাশপথে রাশিয়ার হানার মোকাবিলা করতে সাহায্য করবে ইইউ। আমরাকী ফাইটার জেট দেব। স্রেফ গোলাবারুদের কথা বলছি না, যুদ্ধে যাওয়ার জন্য আমরা আরও গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র দিচ্ছি।'
প্রসঙ্গত, এর আগে ফ্রান্স এবং জার্মানি ইউক্রেনকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে। জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ সোলজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ এক সন্ধিক্ষণ সূচিত করছে। যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ের শান্তি-শৃঙ্খলাকে ঝুঁকিতে ফেলছে এই ঘটনা। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সেনার হাত থেকে বাঁচাতে যতদূর সম্ভব ইউক্রেনকে সাহায্য করা আমাদের কর্তব্য।' এছাড়া ইউক্রেনে ৪০০টি জার্মানিতে প্রস্তুত অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক অস্ত্র পাঠাতে নেদারল্যান্ডসকে অনুমতি দিয়েছে জার্মানি। পাশাপাশি ৯টি ডি-৩০ হাওটিজার পাঠানোরও অনুমতি দেওয়া হয়েছে।