অ্যাডলফ হিটলার ও তার নাৎসি বাহিনীর অত্যাচারের কথা ভাবলে আজও গায়ে কাটা দিয়ে ওঠে। কেবল যুদ্ধ নয় যুদ্ধের বাইরের ছিল তাদের বিচিত্র সব কাজ কারবার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের উপর চালানো গণহত্যা ইতিহাসের এক কলঙ্কময় অধ্যায়। আনুমানিক যাট লক্ষ ইহুদি প্রাণ হারিয়েছিলেন ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট জার্মান ওয়ার্কাস পার্টি বা নাৎসি পার্টির অত্যাচারে। আর ইতিহাসবিদদেদর মতে নাৎসি অত্যাচারের সব ঘটনা একত্রিত করলে সংখ্যাটা দাঁড়াতে পারে নব্বই লক্ষ থেকে এক কোটি দশ লক্ষের মত।
ইত্যাচার ও গণহত্যার এই সব ঘটনা বিভিন্ন পর্যায়ে সংঘটিত হয়েছিল জার্মানিতে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পোল্যান্ডে অসইউৎসে হিটলার বাহিনী গড়ে তোলে ইতিহাসের অন্যতম কুখ্যাত কনসেনট্রেশন ক্যাম্প। বলা হয়ে থাকে ১৯৪০ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যএ ১১ লক্ষ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল এই ক্যাম্পে। সম্প্রতি নাৎসি বাহিনীর পাশবিক অত্যাচারের আরও এক রূপ সামনে এল। পোল্যান্ডেই পাওয়া গেল মানুষের চামড়ায় তৈরি ফটোঅ্যালবাম।
আরও পড়ুন: রাম মন্দির ট্রাস্টে রাখতে হবে দলের সদস্যকে, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিল শিবসেনা
জানা যাচ্ছে পোল্যান্ডের এক অ্যান্টিক দ্রব্যেবের বাজারে এই ফটো অ্যালমাবটিকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। অ্যালবামটির কভারে ট্যাটু, মানুষের চুল এবং দুর্গন্ধ দেখে সন্দেহ হয়েছিল সংগ্রাহকের। এরপরেই সেটিকে সংগ্রহ করে ওই ব্যক্তি অসইউৎস মেমোরিয়াল মিউজিয়ামের কর্মীদের হাতে তুলে দেন তিনি।
জাদুঘর কর্তৃপক্ষ এরপর পরীক্ষা করে জানায় ওই ফটো অ্যালবামটি তৈরি হয়েছে মানুষের চামড়া দিয়ে। ওই ফটো অ্যালবামটির ভিতরে ১০০টিরও বেশি ছবি ও পোস্টকার্ড পাওয়া গিয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্মশানে হোলি খেলেন মহাদেব, রীতি মেনে বারাণসীতে আবিরের সঙ্গে মিশল চিতাভস্ম, দেখুন ভিডিও
গবেষকরা মনে করছেন, এই অ্যালবামটি জার্মানির কুখ্যাত বুচেনওয়াল্ড কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে খুন হওয়া বন্দির চামড়া ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছিল। বুচেনওয়াল্ড কনসেনট্রেশন
বিশ্লেষকরা দাবি করছেন যে জার্মানির বুচেনওয়াল্ড কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে খুন হওয়া বন্দীর চামড়া ব্যবহার করে এই অ্যালবামটি তৈরি করা হয়েছিল। শিবিরটি তার ভয়াবহ মৃত্যুদন্ড এবং ভয়াবহ মানব পরীক্ষার জন্য কুখ্যাতি অর্জন করেছিল।এই ক্যাম্পেই পৃথিবীক ইতিহাসের নৃশংসতম হত্য়াগুলি হয়েছে। মানুষকে মারার নানা নিষ্ঠুর কৌশল নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চলত এই ক্যাম্পে। শিবিরের কম্যান্ডান্ট কার্ল অটো কোচের স্ত্রী ইলসে কোচ নির্দেশ দিয়েছিলেন, মারার আগে যেন পুরুষ বন্দিদের নানারকম ট্যাটু করে দেওয়া হয়, যাতে তা দিয়ে পরবর্তীতে নানা আকর্ষণীয় ল্যাম্পশেড, অ্যালবাম ও টেবিল কভার তৈরি করা যায়। ইলসে এতটাই নিষ্ঠুর ছিলেন যে শোনা যায় তিনি নাকি মানুষের বুড়ো আঙুলকে ব্যবহার করেছিলেন আলোর সুইচ হিসেবে। সেজন্য তার ডাকনামই হয়ে গিয়েছিল, লেডি অফ দ্য ল্যাম্পশেড। পরবর্তী কালে নাৎসি জমানা শেষ হলে কার্ল অটোর ফাঁসি হয় ১৯৪৪ সালে। নুরেমবার্গ বিচারের পর ১৯৪৭ সালে ইলসের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল।