প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর পায়ে গুলি লাগার ঘটনায় ইতিমধ্যেই তোলপাড় পাকিস্তানের রাজনীতি। তার মাঝেই পিটিআই শীর্ষ নেতার দাবি যে তাকে খুন করার চেষ্টা করেছে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ সহ আরও একজন ।
বৃহস্প্রতিবার প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় এক দুষ্কৃতী । ঘটনার পরই পিটিআই এর মহাসচিব আসাদ উমর প্রকাশ্যে বলেন , যে এই ভয়াবহ ঘটনায় জড়িত -প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ এবং একজন সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা। এই তিনজনকে সন্দেহের তালিকায় রেখেছেন ইমরান খান স্বয়ং । দলের নেতা মিয়ান আসলাম ইকবালের সঙ্গে একটি ভিডিও বিবৃতিতে উমর বলেন যে ইমরান নাকি আগে থেকেই জানতেন যে তার উপর এমন হামলা চলতে পারে। এই তিনজন যে অনেকদিন আগে থেকেই তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে এই তথ্যও ছিল তার কাছে ।" এই প্রসঙ্গে উমর অবিলম্বে ওই তিনজনের দ্রুত পদত্যগের দাবি তোলেন।
ইমরানের বার্তাবাহক উমর আরও বলেন যে ," খান পায়ে গুলি নিয়েই কড়া বার্তা দিয়েছেন ওই তিনজনকে । তিনি বলেন অবিলম্বে ওই কর্মকর্তাদের পদত্যাগ করতে হবে। তা নাহলে দেশব্যাপী বিক্ষোভ করবে পিটিআই। কারণ পাকিস্তান আর এভাবে চলতে পারে না। " এই প্রসঙ্গেই উমর যোগ করেন যে ইমরানের এই দাবি মেনে না নিলে দেশের সকল কর্মীরা একযোগে প্রতিবাদে নামবে রাস্তায় । তারা শুধুমাত্র অপেক্ষা করছে ইমরানের নির্দেশের । একবার তিনি ডাক দিলেই সারা দেশ জ্বলবে বিক্ষোভে। "
খান এখন কেমন আছেন তা প্রশ্ন করলে জবাবে উমর বলেন , " ডক্টর ফয়সাল সুলতান সহ অন্যান্য চিকিৎসকদেড় একটি দোল এখন ইমরানের চিকিৎসা করছেন। প্রাথমিকভাবে তারা জানিয়েছেন যে ইমরান এখন বিপদমুক্ত এবং তার অবস্থা এখন স্থিতিশীল। চিকিৎসকরা এখন তাকে নজরে রাখছেন। সূত্রের খবর ইমরান খানের পায়ে তিনটি গুলি লেগেছে। গুলিবিদ্ধ জায়গাটিকে স্ক্যান করে জানা গেছে যে গুলিটি ইমরানের পায়ের হাড়ে বিদ্ধ হয়েছে । "
উমর বলেন ," খান নিজের জাতির জন্য যে প্রান ত্যাগও করতে পারেন তা আজকের ঘটনাতেই প্রমানিত।আল্লার দোয়ায় এখন উনি ভালো আছেন। আল্লার প্রতি সবসময় তাই বিশ্বাস রাখা উচিত। "
পিটিআই সিনিয়র সহ-সভাপতি ফাওয়াদ চৌধুরী রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বলেন : "এটি স্পষ্টতই একটা হত্যার প্রচেষ্টা ছিল। খানকে যেভাবে আঘাত করা হয়েছে তাতে ওনার প্রচুর রক্তপাত হয়েছে এখন উনি ভালো আছেন। সঠিক সময় বডিগার্ডরা যদি শুটারদের না সামলাতো তাহলে আজ পিটিআই এর শীর্ষ নেতৃত্ব পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত নিমেষে।
পিটিআই ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কুরেশি ইমরান খানের উপর হাওয়া এই হামলার তীব্র নিন্দা করে বলেন যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে এভাবে হেরে গেলে চলবে না তাকে এখন "আরো শক্তি নিয়ে" তার গন্তব্যের দিকে যেতে হবে।লং মার্চের সময় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর ডান পায়ে গুলি লাগার এই ঘটনার "অত্যন্ত নিন্দা" করেছে পাক - সেনাবাহিনীও ।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি, পিএমএল-এন সুপ্রিমো নওয়াজ শরীফ, পিপিপি কো-চেয়ারম্যান আসিফ জারদারি, পিএমএল-এন ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজ সহ রাজনীতিবিদ ও সরকারী নেতারা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। "
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ এই ঘটনার স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত নিশ্চিত করতে পাঞ্জাব সরকারের কাছে অবিলম্বে সিনিয়র অফিসারদের সমন্বয়ে গঠিত একটি তদন্ত কমিটি (জেআইটি) গঠনের দাবি জানিয়েছেন।ইসলামাবাদে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেবের সঙ্গে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রেখে তিনি বলেন, সরকার সব ধরনের সহিংসতার নিন্দা করে।তিনি বলেন যে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ইতিমধ্যেই পাঞ্জাব সরকার, পাঞ্জাবের মুখ্য সচিব এবং প্রদেশের মহাপরিদর্শকের কাছে গুলি চালানোর ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন চেয়েছেন ।
অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী বলেছেন যে ফেডারেল সরকার এবং তার প্রধান শেহবাজ শরীফ, পাঞ্জাবকে এই মামলার তদন্তে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।তিনি পিটিআই নেতৃত্বের ভিত্তিহীন অভিযোগের নিন্দা করে বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে পিটিআই ফেডারেল সরকার, প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বার্তা প্রচার করছে ।সানাউল্লাহ বলেন, পিটিআই-এর উচিত পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চৌধুরী পারভেজ এলাহির পদত্যাগ চাওয়া। কারণ আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং মিছিলকারীদের নিরাপত্তা দেওয়া প্রাদেশিক সরকারের একমাত্র দায়িত্ব ছিল যা তারা সঠিকভাবে পালন করেননি ।
প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ওপর হামলা, পরিস্থিতির ওপর সতর্ক নজর রাখছে ভারত
পদযাত্রায় চলল গুলি, পাকিস্তানে জাফরালী খান চকে গুলিবিদ্ধ ইমরান খান, আহত আরও ৪