
পাকিস্তান নিশ্চিত করেছে যে অপারেশন সিঁদুরের সময় পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সমস্যা সমাধানে ভারত তৃতীয় পক্ষের যেকোনও মধ্যস্থতা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। পাকিস্তানের এই মন্তব্য ট্রাম্পের মধ্য়স্থতার দাবি নস্য়াৎ হয়ে যায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন, তাঁর জন্যই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে।
আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসাক দার সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারবার বলেছিলেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা করেছিল। ট্রাম্প মে মাস থেকে দাবি করে আসছিলেন যে তার প্রশাসনের মধ্যস্থতায় একটি সম্ভাব্য "পারমাণবিক যুদ্ধ" এড়ানো গেছে।
দার জানান, ভারতের হামলার পর পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি চেয়েছিল, এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তাকে জানিয়েছিলেন যে ভারত বাইরের হস্তক্ষেপ সমর্থন করে না। দার বলেন, "ঘটনাচক্রে, যখন ১০ মে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওর মাধ্যমে আমার কাছে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আসে... আমাকে বলা হয়েছিল যে একটি নিরপেক্ষ স্থানে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে আলোচনা হবে... যখন আমরা ২৫ জুলাই ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করি, আমি তাকে জিজ্ঞাসা করি 'সেই আলোচনার কী হলো?', তিনি বলেন, 'ভারত বলছে এটি একটি দ্বিপাক্ষিক বিষয়'"।
ভারত অপারেশন সিঁদুরের মাধ্য়মে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামোকে লক্ষ্য করে চালিয়েছিল। তাতে রীতিমত সফল হয়েছিল। ২২ এপ্রিলের পহেলগাঁওতে পাক জঙ্গিদের হামলার বদলা নিতেই ভারত এই অভিযান করেছিল।
কাশ্মীর নিয়ে আলোচনার দাবি
দার সন্ত্রাসবাদ, বাণিজ্য, অর্থনীতি এবং জম্মু ও কাশ্মীরসহ ব্যাপক আলোচনার জন্য পাকিস্তানের আগ্রহের ওপর জোর দেন এবং বলেন যে "এক হাতে তালি বাজে না"। তিনি বলেন, "আমাদের কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু ভারত স্পষ্টভাবে বলে আসছে যে এটি দ্বিপাক্ষিক বিষয়। দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় আমাদের আপত্তি নেই। তবে, আলোচনা অবশ্যই ব্যাপক হতে হবে, যেখানে সন্ত্রাসবাদ, বাণিজ্য, অর্থনীতি এবং জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা থাকবে। এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আমরা দুজনেই আলোচনা করে আসছি।"
দার আরও বলেন, "আমরা কোনও কিছুর জন্য ভিক্ষা করছি না। যদি কোনো দেশ আলোচনা চায়, আমরা খুশি; আমরা স্বাগত জানাই... আমরা বিশ্বাস করি যে আলোচনাই এগিয়ে যাওয়ার পথ, কিন্তু স্পষ্টতই এক হাতে তালি বাজে না। তাই, ভারত আলোচনা না চাইলে আমরা জোর করে আলোচনা করতে পারি না। আমরা আলোচনা চাপিয়ে দিতে চাই না।"