ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বে জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে অবস্থিত মেলিটোপোল। ইউক্রেনের বন্দর শহর মারিওপোলের কাছে এই শহর অবস্থিত।
ইউক্রেনের (Ukraine) মেলিটোপোল শহর (Melitopol City) দখল করেছে রাশিয়া (Russia)। শনিবার রুশ সংবাদ সংস্থা ইন্টারফ্যাক্সের কাছে এমনটাই দাবি করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক (Ministry of Defence of the Russian Federation)। ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বে জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে অবস্থিত মেলিটোপোল। ইউক্রেনের বন্দর শহর মারিওপোলের কাছে এই শহর অবস্থিত।
২৫ ফেব্রুয়ারি এই শহরে প্রবেশ করেছিল রুশ সেনা (Russian Army)। প্রবেশ করার পর থেকেই একাধিক আবাসনে হামলা চালাতে শুরু করে তারা। সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে একাধিক গাড়িতে আগুন (Fire at Vehicle) লাগিয়ে দেয়। এমনকী, শহরের রাস্তা দিয়ে যুদ্ধের ট্যাঙ্কও (Tank) নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। হামলা চালানোর সময় এই শহরের একটি হাসপাতালেও হামলা চালায় রুশ সেনা। তার জেরে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জখম হয়েছেন ১০ জন। এরপর রুশ সেনার কাছে আত্মসমর্পণ করেন শহরের নেতারা। তারপরই গোটা শহরের দখল নেয় পুতিন বাহিনী।
আরও পড়ুন- কেমন করে ইউক্রেন দখলের ছক কষছে রাশিয়া, জেনে নিন বিস্তারিত
বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সেনা অভিযানের কথা ঘোষণা করেছিল রাশিয়া। তারপর থেকেই একের পর এক হামলা চালাতে শুরু করে তারা। দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হতেই ইউক্রেনকে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েতে হয়েছে। এদিকে রুশ সেনারও ক্ষতি করার দাবি করেছে ইউক্রেন সেনা। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর দাবি, যুদ্ধ শুরুর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই কমপক্ষে ৩৫০০ রুশ সেনার মৃত্যু হয়েছে। প্রায় ২০০ জনকে বন্দি করা হয়েছে। এছাড়াও ১৪টি রুশ বিমান, ৮টি হেলিকপ্টার, ১০২টি ট্যাঙ্কার ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। যদিও রাশিয়ার তরফে দাবি করা হয়েছে, ইউক্রেনের বায়ুসেনা ঘাঁটি এবং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম পুরোপুরি ধ্বংস করেছে তারা। তার সঙ্গে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ছে ইউক্রেনও। এমনকী, দেশকে বাঁচানোর স্বার্থে সেখানকার বহু নাগরিকও হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
'আমেরিকা স্পনসর্ড প্রস্তাব', চিনের পাশে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটদানে বিরত ভারত
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান শুরু করার পর আজ তা তৃতীয় দিনে পড়েছে। যত দিন যাচ্ছে ততই খারাপ হচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি। ধীরে ধীরে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের দিকে এগোচ্ছে রুশ সেনা। শুক্রবার রাতেও কিয়েভের একাধিক জায়গায় রুশ সেনার সঙ্গে ইউক্রেনের সেনার সংঘর্ষ হয়। একে একে ইউক্রেনের একাধিক শহর দখল করেছে রাশিয়া। পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে শুরু করে কিয়েভের বিমানবন্দরও রয়েছে রুশ সেনার দখলে। আর এবার রুশ সেনার মেলিটোপোল শহর দখল করার বিষয়টি সামনে এসেছে।
আরও পড়ুন- রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ব্রিটেনে বিমান মহড়ায় 'না' ভারতের
এদিকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের উপরও নির্বিচারে বোমা বর্ষণ করেছে রাশিয়ার সেনা। এই পরিস্থিতির মধ্যে দেশ থেকে পালিয়ে যাননি জেলেনস্কি। বরং দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করতে রাস্তায় নেমে পড়েছেন তিনি। শুক্রবার রাতে সামরিক জলপাই রঙের এক পোশাক পরে প্রেসিডেন্সি বিল্ডিংয়ের বাইরে প্রধানমন্ত্রী, চিফ অব স্টাফ সহ একাধিক শীর্ষ আধিকারিকদের নিয়ে একটি ভিডিও বার্তা রেকর্ড করেন। সেই ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, "আমরা সবাই এখানে রয়েছি। আমাদের মিলিটারি বাহিনী রয়েছে। সমাজের সাধারণ মানুষও রয়েছে। আমরা সবাই মিলেই আমাদের স্বাধীনতার জন্য, দেশের জন্য লড়াই করছি। আগামীদিনেও এইরকমভাবেই একসঙ্গে থাকব আমরা।" পাশাপাশি দেশকে বাঁচানোর জন্য সাধারণ মানুষকেও হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।