যুদ্ধ (Ukrain Russia War) বন্ধে ইউক্রেনকে চারটি শর্ত দিল মস্কো (Moscow)। ২৪ ফেব্রুয়ারি ভ্লাদিমির পুতিনের (Vladimir Putin) ঘোষণার পর, এই প্রথম রাশিয়ার (Russia) পক্ষ থেকে এল স্পষ্ট বিবৃতি।
গত রবিবার থেকে ইউক্রেনে বেড়েছে রুশ আগ্রাসনের (Ukrain Russia War) তীব্রতা। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের (Vladimir Putin) ঘোষণার পরই, ইউক্রেনে হামলা শুরু করেছিল রাশিয়া। মঙ্গলবার এই যুদ্ধ ১৩তম দিনে পড়েছে। এরই মধ্যে হামলা বন্ধ করতে ইউক্রেনকে চারটি শর্ত দিল রাশিয়া। মস্কো (Moscow) সাফ জানিয়েছে, কিয়েভ (Kiev) এসব শর্ত মেনে নিলে শিগগিরই সামরিক অভিযান বন্ধ করা হবে। কী সেই চার শর্ত, আসুন জেনে নেওয়া যাক -
ক্রেমলিনের (Kremlin) মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ (Dmitry Peskov) জানিয়েছেন, প্রথম শর্ত হল ইউক্রেনকে সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয় শর্ত, তাদের সংবিধান সংশোধন করতে হবে। তৃতীয় শর্ত, ক্রিমিয়া'কে (Crimea) রুশ ভূখণ্ডের স্বীকৃতি দিতে হবে। আর চতুর্থ শর্ত হল, দনেস্ক এবং লুগানস্ক'কে (Donetsk and Lugansk) স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। তাহলেই রাশিয়া এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ সমাপ্ত করতে প্রস্তুত। তবে, দুই দেশ এখনও কোনও দৃঢ় সমঝোতার জায়গায় পৌঁছতে পারেনি। সোমবার, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে তৃতীয় দফার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তাতেও কোনও ফল হয়নি। কাজেই রুশ শর্ত মানতে ইউক্রেন কতটা রাজি হবে, তাই নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
আরও পড়ুন - একটি জাগুয়ার আর একটি প্যান্থারের সঙ্গে বাঙ্কারে, ইউক্রেন ছাড়তে নারাজ ভারতীয় ডাক্তার
আরও পড়ুন - চারিদিকে শুধু ধ্বংস আর মৃত্যুর হাহাকার - ছবিতে ছবিতে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইউক্রেন
আরও পড়ুন - দেশের সেনায় যোগ দিতে ব্যর্থ, ইউক্রেনে যুদ্ধে নামলেন ভারতীয় যুবক - কী বলছেন বাবা-মা
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি, হামলা শুরুর দিনের পর এই প্রথম রাশিয়ার পক্ষ থেকে এই ধরনের কোনও স্পষ্ট বিবৃতি দেওয়া হল। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে পেসকভ আরও বলেছেন ইউক্রেনের পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁদের স্পষ্ট ধারণা রয়েছে। এক মুহূর্তেই এই অভিযান বন্ধ হতে পারে। মূল বিষয় হল ইউক্রেনকে সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। তারা সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করলেই আর কেউ গুলি চালাবে না। পেসকভ আরও বলেছেন, ইউক্রেনের উপর রাশিয়া আর কোনও আঞ্চলিক দাবি করছে না। রাশিয়া কিয়েভ দখল করতে চাইছে, বলে কোনও কোনও পক্ষ থেকে বলা হলেও, তা সত্যি নয় বলেই জানিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র। তাঁর দাবি, রাশিয়া ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণের কাজ করছে আর এই কাজ তাঁরা সম্পূর্ণ করবেনই।
উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণ - তিনদিক থেকে ইউক্রেনকে ঘিরে ধরে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। গত ১৩ দিনের হামলায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কিয়েভ, খারকিভ, মারিউপোল ইত্যাদি শহর। এই হামলার ফলে দেখা দিয়েছে চরম শরণার্থী সংকটও। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে যা ইউরোপে দেখা যায়নি। রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় (United Nations Human Rights Office) জানিয়েছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে গত রবিবার পর্যন্ত ইউক্রেনে ৪০৬ জন অসামরিক নাগরিকের নিশ্চিত মৃত্যু হয়েছে। আর, রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত ৮০১ জন আহত হয়েছেন। তবে, হতাহতের সংখ্যাটা যে আরও বেশি, সেই কথাও মানবাধিকার কার্যালয় স্বীকার করে নিয়েছে। বিশেষ করে সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলিতে হতাহতের সঠিক তথ্য সংগ্রহ বেশ কঠিন।