রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দামামা একপ্রকার বেজেই গেছে বলা চলে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় অনুসারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পূর্ব ইউক্রেনে একটি বিশেষ সামরিক অভিযানের কথা ঘোষণা করেছেন। কিন্তু কেন এই যুদ্ধের আবহ তৈরি হল সেই নিয়ে রইল কয়েকটি বিশেষ পয়েন্ট।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের (Russia-Ukraine Conflict) দামামা একপ্রকার বেজেই গেছে বলা চলে। বৃহস্পতিবার (Thursday)স্থানীয় সময় অনুসারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির (Vladimir Putin) পুতিন পূর্ব ইউক্রেনে (Ukraine) একটি বিশেষ সামরিক অভিযানের কথা ঘোষণা করেছেন। কিন্তু কেন এই যুদ্ধের আবহ তৈরি হল সেই নিয়ে রইল কয়েকটি বিশেষ পয়েন্ট।
১. রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনা অব্যাহত ছিল। ২০২১ সালের গোড়ার দিক থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে শুরু করে। গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে জানুয়ারিতেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভা্লদিমির জেলেন্স্কির ইউক্রেনকে NATO-তে যোগ দেওয়ার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে অনুরোধ করেছিলেন। .
২. গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে ক্ষুব্ধ রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তে সেনা পাঠাতে শুরু করে। অনুশীলন প্রশিক্ষণের জন্যই সেনা পাঠিয়েছিল রাশিয়া। পরে শরত কালে সেই সেনা নিয়োগের পরিমান আরও বাড়াতে শুরু করেছিল রাশিয়া। ডিসেম্বরের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ান সেনা মোতায়েনের কথা বলতে শুরু করে এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেন রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে কঠোর নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দেন।
৩. রাশিয়া দাবি করছে, পশ্চিম একটি আইনত বাধ্যতামূলক গ্যারান্টি দেয় যে ন্যাটো পূর্ব ইউরোপ এবং ইউক্রেনে কোনও সামরিক তৎপরতা জারি করবে না। অন্যদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মতে, ইউক্রেন পশ্চিমের একটা পুতুল মাত্র, এটি কখনই একটি সঠিক রাষ্ট্র ছিল না।
৪. রাশিয়া-ইউক্রেনের এই অস্থিরতার নিদর্শন এটাই প্রথম নয়। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালেও ইউক্রেনকে আক্রমন করেছিল রাশিয়া। প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপতি পুতিনের সমর্থনপুষ্ট বিদ্রোহীরা যখন পূর্ব ইউক্রেনের বিশাল অংশ দখল করেছিল তখন থেকেই ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সাথে লড়াই শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, সেই সময় রাশিয়া ক্রিমিয়াকে অধিভুক্ত করেছিল।
৫. প্রাক্তন সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র হিসাবে ইউক্রেনের রাশিয়ার সাথে গভীর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। সেই সঙ্গে সেখানে রাশিয়ান ভাষা ব্যাপকভাবে বলা হয়ে থাকে। কিন্তু ২০১৪ সালে রাশিয়া যখন ইউক্রেনকে আক্রমণ করল তারপর থেকে সেই সম্পর্কগুলিতে ভাঙন ধরেছে।
৬. ২০১৪ সালের গোড়ার দিকে যখন রাশিয়াপন্থী রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল তখন রাশিয়া ইউক্রেনকে আক্রমণ করেছিল। পূর্ব যুদ্ধের সময় চোদ্দ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণনাশ হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
৭. ডনবাস অঞ্চল সহ পূর্ব ইউক্রেনে সশস্ত্র সংঘাত থামাতে মিনস্ক শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল রাশিয়া ও ইউক্রেন। তবে সংঘাত অব্যাহত থাকার দরুণ রাশিয়া বলেছে যে তারা সেই অঞ্চলে শান্তিরক্ষী পাঠাচ্ছে। যে সব অঞ্চলে সংঘর্ষ চলছে সেখানে শান্তি ফিরিয়ে আনতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে রাশিয়া। পশ্চিমারা একে মস্কোর সার্বভৌম ভূখণ্ড দখলের জন্য একটি স্মোকস্ক্রিন বলে অভিহিত করেছে।
৮. রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে নতুন উত্তেজনা যেটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমানাতেও এই উত্তেজনা অব্যাহত। এই বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং তার ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যারা NATO স্বাক্ষরকারী অধিকাংশই রাশিয়ার সত্ত্বার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যোগ দিয়েছে
৯. মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগের কথা, ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন উড়ে গিয়েছিলেন মস্কোতে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে র সঙ্গে আলোচনা করে তাঁকে কিছুটা চাপমুক্ত করার উদ্দেশ্যেই পুতিনের কাছে গিয়েছিলেন ম্যাক্রন।
১০. রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে বর্তমানে যে সঙ্কটজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে সেটি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কূটনৈতিক উপায় বের করার আহ্বান জানিয়েছে ভারত।