বিশ্ব জুড়ে নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে ২০ লক্ষের গণ্ডি। পরিস্থিতি সামলাতে একাধিক দেশে চলছে লকডাউন। বন্ধ অফিস-কাছারি, কল-কারখানা, স্কুল-কলেজ-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আর এর মধ্যেই জাতীয় নির্বাচিন অনুষ্ঠিত হল দক্ষিণ কোরিয়ায়। যেখানে আরও একবার কামাল দেখালি দেশের ক্ষমতাসীন প্রিসেডন্ট মুন জা-ইনের ডেমোক্র্যাটিক পার্টি।
করোনা মহামারীর আবহে দক্ষিণ কোরিয়াই প্রথম দেশ যেখানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। তবে দেশে নির্বাচন হলেও সংক্রমণ রোধে সব ধরণের কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই ভোট দেন দেশের নাগরিকরা। এই বিশ্বব্যাপী মহামারীর সময়েও দেশটিতে ভোট পড়েছে ৬৬ শতাং। আর অবাক করা কাণ্ড হল, যা গত ২৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
করোনার থাবায় এবার ভেস্তে যাচ্ছে অমৃত যোগ, গৃহবন্দি বৈশাখে আম হারা জনতাভ্যাকসিন না পাওয়া পর্যন্ত চলবে লকডাউন, করোনা মোকাবিলায় সিদ্ধান্তের পথে রানির দেশকরোনা যুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ দেশকে বিপথে চালানোর চেষ্টা বন্ধ করুন, আমেরিকাকে হুঁশিয়ারি ভারতেরদক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় সংসদে ৩০০টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে প্রেসিডেন্ট মুনের মিনজু (গণতান্ত্রিক) পার্টি পেয়েছে ১৬৩টি আসন। প্ল্যাটফর্ম পার্টি পেয়েছে ১৭টি আসন। এই দু’টি দল মিলেই গঠিত হবে জোট। যাদের মোট আসন সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১৮০টি।
দক্ষিণ কোরিয়ার সাধারণ নির্বাচেন ৩৫টি দল অংশ নিলেও মূল লড়াই হয়েছে ক্ষমতাসীন মিনজু (গণতান্ত্রিক) পার্টির সঙ্গে প্রধান বিরোধী দল ইউনাইটেড ফিউচার পার্টির। রক্ষণশীল ফিউচার পার্টি ও তার সহযোগী দলগুলির জোট ১০৩টি আসন পেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
১৬ বছরে এই প্রথম দক্ষিণ কোরিয়ায় ডেমোক্র্যাটিক পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে সক্ষম হলো। করোনার আবহে যা তাদের কাছে এক এক বিশাল সাফল্য বলাই বাহুল্য। এবারের জাতীয় নির্বাচনে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের ভূমিকার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বিচার করেছেন দেশের ভোটাররা।
যদিও কয়েক মাস আগেই মুন জা-ইনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠে এবং দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি কমে যাওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। তবে নির্বাচনের আগে মহামারি করোনা মোকাবিলায় তার সরকারের সাফল্য ছাড়াও অন্তত ২০টি দেশে করোনা পরীক্ষার কিট রফতানি মুন জা- ইনের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দেখা দেয়। মনে করা হচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে মুন সরকারের সাফল্যের স্বীকৃতিই সাধারণ নির্বাচনে এই বিপুল জয়। ফলে ফের একবার প্রেসিডেন্ট পদ ধরে রাখতে যাচ্ছেন মুন জা ইন।
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাফল্য পাওয়া দেশগুলির মধ্যে প্রথম সারিতেই রয়েছে এশিয়ার এই দেশটি। গত ডিসেম্বরে চিনের উহানে সংক্রমণ ছড়ানোর পর করোনার প্রাদুর্ভাব ঘটে দক্ষিণ কোরিয়াতেও। তবে সেদেশের প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় এখনও পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজারের সামান্য বেশি। মৃতের সংখ্যা ২২৯। আক্রান্তদের মধ্যে ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৭,৭৫৭ জন।