সংক্ষিপ্ত

  • এবারে বৈশাখে করোনার থাবায় গৃহবন্দি আম জনতা
  • লকডাউনের কারণে বাজারে তেমন দেখা নেই আমের
  • গতবারের তুলনায় সরবরাহ কমে গিয়েছে ৫০ শতাংশ
  • আম শিল্পে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা
গাছে আমের মুকুল ধরতে না ধরতেই আম নিয়ে স্বপ্ন শুরু হয়ে যায় খাদ্যরসিকদের। আর একটু গরম পড়তেই বাজারে বাজারে বাহারি আমের দরদামে লেগে পড়েন তাঁরা। গ্রীষ্মে প্যাচপেচে গরম-আর্দ্রতার অস্বস্তি সত্ত্বেও যে কারণগুলো এই ঋতুকে কিছুটা হলেও সহনীয় করে তুলেছে, তার অন্যতম এই আম।  কাঁচা হোক বা পাকা, সব রকমের আমই রসনাতৃপ্তিতে অনবদ্য। কাঁচা আম দিয়ে আম-তেল, আম ডাল, আমের আচার কত কী  হয়! আর কাঁচামিঠে আমের তো কদরই আলদা। পাকা আমের তো জুড়ি মেলা ভার। তবে এবার করোনার গ্রাসে আমপ্রেমিকদের সরস্বাদনে ভাটা পড়ার আশঙ্কাই দেখা দিয়েছে।

দেশে ২১ দিনের লকডাউন শেষ হয়েছে গত ১৪ এপ্রিল। এরপর ১৫ এপ্রিল থেকে ফের দ্বিতীয় দফায় শুরু হয়েছে লকডাউন। চলবে ৩ মে পর্যন্ত। এদিকে বৈশাখ ও জৈষ্ঠ এই দুই মাসই এদেশে আমের সিজিন হিসাবে পরিচিত। অন্যবার এই সময় বাজারে বিভিন্ন ধরণের আম উঠতে শুরু করে দেয়। কিন্তু এবার কোভিড ১৯ রোগের কারণে চলতে থাকা লকডাউনের জেরে গত বছরের তুলনায় বাজারে আমের সরবারও ৫০ শতাংশ কম বলেই জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তার উপর সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিধিননিষেধে অনেকাই বাজারে আসছেন না। ফলে এবার আমের বিক্রি কতটা হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান হায়দরাবাদের আম ব্যবসারীরা।

 

হায়দরাবাদের আম ব্যবসায়ীদের মত আশঙ্কার মেঘ জমছে দেশের অন্যান্য প্রান্তেও। উত্তরপ্রদেশে আম উৎপাদনের জন্য বিখ্যাক লখনউ, আমরোহা, সম্ভল, মুজাফ্ফরপুর এবং সাহারানপুর। এখানকার ২.৫ লক্ষ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরণের আমের চাষ হয়ে থাকে। একে এবছরে আবহাওয়ার খামখেয়ালি পনা তার সঙ্গে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে আম উৎপাদন হত বারের তুলনায় অনেকটাই কমবে বলে আশঙ্কা আম চাষিদের। লকডাউনের সময় তাঁদের যেন ছাড় দেওয়া হয় সেই আবেদনও ইতিমধ্যে সরকারের কাছে জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের আম চাষিরা। 


ভারতের করোনা যুদ্ধে চিন্তা বাড়াচ্ছে চিন, আমদানি করা পিপিই কিটের মান নিয়ে উঠছে প্রশ্ন
ভ্যাকসিন না পাওয়া পর্যন্ত চলবে লকডাউন, করোনা মোকাবিলায় সিদ্ধান্তের পথে রানির দেশ
এবার সংক্রমণের শিকার তবলিগি প্রধানের ২ আত্মীয়, দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ১২ হাজার

আলফানসো আমের জন্য বিখ্যাত মহারাষ্ট্র। প্রতিবছর এই রাজ্যে উৎপাদন হয় প্রায় ২,৭৫,০০০ টন আলফানসো। কিন্তু এবার লকডাউনের কারণে বিক্রি অনেকটাই কমবে বলে আশঙ্কা করছেন আম চাষী ও ফল ব্যবসায়ীরা। পরিস্থিতি সামলদিতে মুম্বই শহরে হোম ডেলিভারির কথাও ভাবছেন তাঁরা। এদিকে প্রতিবছর মহারাষ্ট্রের বিখ্যাত আলফানসো আম বিশ্বের নানা দেশে রফতানি করা হয়। কিন্তু এবার করোনা সংক্রমণে অধিকাংশ দেশেই চলছে লকডাউন। ফলে রফতানি ক্ষেত্রেও এবার প্রচুর লোকসান হতে চলেছে। 

আম উৎপাদনে বিখ্যাত বাংলার মালদহ জেলাও। প্রতিবছর প্রায় ৫.৫ লক্ষ মেট্রক টন আম উৎপাদন করে এই জেলা। কিন্তু এবছর লকডাউনের কারণে আমবাগানগুলিতে কাজে আসতে পারছেন না শ্রমিকরা। মালদহে আম উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। কিন্তু এবার করোনার থাবায় চলতে থাকা লকডাউনে  উৎপাদন ও বিক্রি দুটোই কমবে বলে আশঙ্কা করছেন মালদহের আম চাষীরাও। কীভাবে এখন তাঁদের রুজিস চলবে সেই চিন্তাই এখন ভাবাচ্ছে মালদহের আম ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের।