৩০ বছর পর জলের তলা থেকে উঠে এল 'ভুতুরে গ্রাম', ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন স্থানীয় বাসিন্দারা

১৯৯২ সালে একটি বাঁধ নির্মাণের কারণে জলে ডুবে গিয়েছিল স্পেনের (Spain) গ্রাম আচেরেদো (Aceredo)। জলবায়ু পরিবর্তনের (Climate Change) কুপ্রভাবে এখন সেই অঞ্চলে এমনই খরা (Drought) দেখা দিয়েছে, যে ৩০ বছর পর ফের জলের তলা থেকে উঠে এসেছে গ্রামটি। 

Web Desk - ANB | Published : Feb 14, 2022 12:27 PM IST / Updated: Feb 14 2022, 05:58 PM IST

জলবায়ু পরিবর্তনের এমন হাতে নাতে প্রমাণ মিলবে, কেউ কখনও ভাবতেও পারেননি। বর্তমানে স্পেন-পর্তুগাল সীমান্ত অঞ্চলগুলিতে দেখা দিয়েছে ভয়ানক খরা। আর তার জেরেই, একটি জলাধারের জল শুকিয়ে গিয়ে, তার নিচ থেকে উঠে এসেছে ৩০ বছর আগে ডুবে যাওয়া একটি আস্ত গ্রাম। এখনও বেশ কিছু ঘরবাড়ি অক্ষত রয়েছে, এমনকী কাফেতে পড়ে রয়েছে বিয়ারের বোতলও - সব মিলিয়ে যেন এক ভুতুরে গ্রাম। এই পরিত্যক্ত এবং ৩০ বছর ধরে জলে ডুবে থাকা গ্রামটি এখন যেমন একদিকে পর্যটকদের বিরাট আকর্ষণে পরিণত হয়েছে, তেমনই জরাজীর্ণ পুরাতন স্থাপনাগুলি দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 

তাঁরা জানিয়েছেন, স্পেনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওই গ্রামটির নাম ছিল আচেরেদো। ১৯৯২ সালে আল্টো লিন্ডোসো জলাধার তৈরি করার জন্য, উদ্দেশ্যমূলকভাবেই আকেরদো গ্রামটিকে প্লাবিত করা হয়েছিল। বাসিন্দাদের আশপাশের এলাকাতেই পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছিল। সেই থেকে গত ৩০ বছর ধরে লিন্ডাসো জলাধারের নিচেই ছিল এই পরিত্যক্ত গ্রামটি। কিন্তু, বর্তমানে স্প্যানিশ-পর্তুগিজ সীমান্ত এলাকায় আবহাওয়া এতটাই শুষ্ক হয়ে গিয়েছে, যে জলাধারে এখন আর জল প্রায় নেই বললেই চলে। প্রশাসন জানিয়েছে বর্তমানে, জলাধারটিতে তার ধারণক্ষমতা মাত্র ১৫ শতাংশ জল পড়ে রয়েছে। আর জল শুকিয়ে যেতেই তার নিচ থেকে পুনরাবির্ভাব ঘটেছে এক সময়ের প্রাণচঞ্চল গ্রাম আচেরেদোর ধ্বংসাবশেষের। 

স্থানীয় প্রবীন বাসিন্দাদের মনে এখনও তাদের পুরোনো বসেই গ্রামের স্মৃতি রয়ে গিয়েছে। এরকমই এক প্রবীন বাসিন্দা জানিয়েছেন, গ্রামটি যেভাবে আবার চোখের সামনে চলে এসেছে, তাতে তাঁর মনে হয়েছে যেন তিনি একটি সিনেমা দেখছেন। এতে তাঁর মনে দুঃখ বোধই হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে যেভাবে খরা চলছে এবং জলবায়ু পরিবর্তন ঘটছে, তার জন্যই এটা ঘটেছে। এরকমটা চলতে থাকলে, ভবিষ্যতে কী হবে, সেই কথা ভেবে শিউরে উঠছেন, প্রবীন বাসিন্দারা। 

তবে, পুরোনো গ্রামের ধ্বংসাবশেষ দেখতে দেখতে অনেকে নস্টালজিয়ায় আক্রান্তও হচ্ছেন। কোথাও ধসে পড়া ছাদ, দেওয়ালেক ইট বেরিয়ে গিয়েছে, পচে গিয়েছে কাঠের তৈরি মেঝে। এছাড়াও ভূতুরে গ্রামের এক ক্যাফেতে স্তূপাকারে পড়ে রয়েছে খালি বিয়ারের বোতল ভর্তি বেশ কয়েকটি ক্রেটও। পড়ে রয়েছে একটি আধা-ধ্বংশ পুরানো গাড়িও, ৩০ বছর ধরে জলের তলায় থেকে সেটিতে মরচে পড়েছে। ওই ক্যাফেটির কাছে একটা বিরাট আঙ্গুরের ও কমলার বাগান ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। পুরো জায়গাটাই ছিল সবুজে সবুজ। এখন, কাদার ধুসরতা ছাড়া আর কোনও রঙ নেই এই পরিত্যক্ত গ্রামে। 

Share this article
click me!