ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চেয়ে দুবার ব্যর্থ হয়েছিলেন তামিলনাড়ুর এক যুবক। এখন ইউক্রেনের (Ukraine) হয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে করছেন তিনি।
যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইউক্রেন (Ukraine) থেকে ভারত সরকার হাজার হাজার ছাত্রদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসছে। সকলেই যখন সেই দেশ ছাড়ার জন্য ব্যাকুল, তখন উল্টো পথে হেঁটেছেন তামিলনাড়ুর বাসিন্দা সাইনিখেশ রবিচন্দ্রন। ছোট থেকে সামরিক বাহিনী এবং সশস্ত্র প্রশিক্ষণের প্রতি অনুরাগী এই ২১ বছরের যুবক, বর্তমানে ইউক্রেনের সেনাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রুশ সৈন্যদের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন বলে খবর। আর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কাছ থেকে এই খবর পেয়ে, তাঁর পরিবার দারুণ উদ্বিগ্ন এবং অত্যন্ত ক্ষুব্ধ।
কোয়েম্বাটুরের (Coimbatore) থুদালিউর (Thudaliyur) এলাকায় বাড়ি সাইনিখেশের। তিনি ইউক্রেনের খারকিভ ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (Kharkiv National University) অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (Aerospace Engineering) ছাত্র। সংবাদ সংস্থা আইএএনএস-এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দিন কয়েক আগে, সিবিআই-এর (CBI) একদল কর্মকর্তা তাঁর বাসভবনে গিয়েছিলেন। তাঁর সম্পর্কে সমস্ত বিবরণ সংগ্রহ করেছেন তাঁরা। জানার চেষ্টা করেছেন, কেন সাইনিখেশ ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে যোগ দিলেন?
আরও পড়ুন - একটি জাগুয়ার আর একটি প্যান্থারের সঙ্গে বাঙ্কারে, ইউক্রেন ছাড়তে নারাজ ভারতীয় ডাক্তার
আরও পড়ুন - 'আসতে দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়', ইউক্রেন-ফেরত ছাত্রের মুখে যুদ্ধের ভয়াবহতা
আরও পড়ুন - রাশিয়ার যুদ্ধের প্রতীক কি 'Z', সোশ্যাল মিডিয়ায় পুতিনের তুলনা হিটলারের সঙ্গে
তামিলনাড়ু পুলিশের (Tamil Nadu Police) এক সূত্রের দাবি, এই বিষয়ে তাঁর বাবা-মা একেবারে অন্ধকারে ছিলেন। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছ থেকেই তাঁরা প্রথম জানতে পারেন, তাঁদের ছেলে জর্জিয়ান ন্যাশনাল লিজিয়ন (Georgian National Legion) নামে এক ইউক্রেনপন্থী আধাসামরিক বাহিনীর হয়ে লড়াই করছে। সাইনিখেশের বাবা-মা'এর দাবি, যুদ্ধ শুরু হওয়ার দিন কয়েক আগে সাইনিখেশ তাঁদের জানিয়েছিলেন যে, তিনি একটি ভিডিও গেম সংস্থায় চাকরি পেয়েছেন।
অবশ্য বরাবরই সামরিক বাহিনী ও সশস্ত্র প্রশিক্ষণে ঝোঁক ছিল তাঁর, এমনটাই জানিয়েছে তাঁর পরিবার। জানা গিয়েছে, গোয়েন্দা আধিকারিকদের তাঁরা সাইনিখেশের কক্ষটিও দেখান, যার দেওয়াল ভারতীয় সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন ছবিতে ভর্তি। এর আগে দুবার তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে (Indian Army) যোগ দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন। পরিবারের সদস্যরা জানতেন, তারপর থেকে গত পাঁচ বছর ধরে সে মন দিয়ে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং-ই পড়ছে। সামরিক বাহিনীর ভূত নেমেছে মাথা থেকে।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর গোয়েন্দাদের কাছ থেকে অন্য রকম খবর পেয়ে এখন তাঁদের মাথায় হাত! সোশ্যাল মিডিয়াতেও তাঁর সামরিক পোশাক পরা ছবি দেখা যাচ্ছে। তাঁর মা ঝাঁসি লক্ষ্মী বলেছেন, তাঁরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ও খুবই বিরক্ত। ছেলের সঙ্গে দিন পাঁচেক আগে তাদের শেষ কথা হয়েছে। সাইনিখেশ জানিয়েছেন, তিনি নিরাপদে আছেন। তাঁকে বাড়ি ফিরে আসার কথা বললে তিনি, তাঁদের কথা শুনছেন না। এই অবস্থায়, বাবা রবিচন্দ্রন তাঁদের ছেলেকে ভারতে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছেন।