
Donald Trum:মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) পারমাণবিক অস্ত্রের (Nuclear Weapons) বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন জলবায়ু পরিবর্তনের (Climate change) চেয়েও পারমাণবিক অস্ত্র বিশ্বের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সানডে মর্নিং ফিউচার্সের অ্যাংকর মারিয়া বারটিরোমোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্রের ধ্বংসাত্মক পরিণতির বিষয়ে জোর দেন। তিনি বলেন, "এর ধ্বংসের মাত্রা কল্পনারও বাইরে। এটা খুবই খারাপ যে সবাইকে এমন একটা জিনিসের জন্য এত টাকা খরচ করতে হচ্ছে, যেটা ব্যবহার হলে সম্ভবত পৃথিবীর শেষ হয়ে যাবে।" তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর বেশি মনোযোগ দেওয়ায় সমালোচনা করেন এবং বলেন পারমাণবিক বিপদ আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাম্প বলেন "আমি যখন জলবায়ু নিয়ে উন্মাদদের কথা শুনি... এবং কেউ পারমাণবিক অস্ত্রের কথা বলে না। তারা বলে যে আগামী ৩০০ বছরে সমুদ্রের উচ্চতা এক ইঞ্চির আট ভাগের এক ভাগ বাড়বে। কিন্তু তারা পারমাণবিক অস্ত্রের বিপদ নিয়ে কথা বলে না, যা আগামিকালই ঘটতে পারে।"
ট্রাম্প ইউক্রেন সংকট নিয়েও কথা বলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কিকে মার্কিন সাহায্যের জন্য অকৃতজ্ঞ বলে সমালোচনা করেন। তিনি দাবি করেন যে আমেরিকা ইউক্রেনকে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার সাহায্য দিয়েছে, যেখানে ইউরোপীয় দেশগুলো দিয়েছে মাত্র ১০০ বিলিয়ন ডলার। "এটা ছিল যেন বাচ্চার কাছ থেকে ক্যান্ডি কেড়ে নেওয়া... বাইডেনের অধীনে তিনি দেশ থেকে ক্যান্ডির মতো টাকা নিয়েছেন। আমার কাছ থেকেও তিনি একইভাবে টাকা পাবেন এই মনোভাব নিয়েই তিনি এসেছিলেন। বাইডেনের উচিত ছিল ৩৫০ বিলিয়ন ডলার না দেওয়া। ইউরোপের সঙ্গে সমান অঙ্কের টাকা দেওয়া উচিত ছিল।" জেলেনস্কিকে নিয়ে এমনটাই দাবি করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউক্রেনের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ইউরোপের বেশি আর্থিক বোঝা নেওয়া উচিত ছিল বলে ট্রাম্প মনে করেন। "আমাদের মধ্যে একটা মহাসাগর আছে, তাই না? আমরা তাদের মতো বিপদে নেই। তারা অনেক বেশি বিপদে আছে," ইউক্রেন ইস্য়ুতে এমনটাই জানিয়েছেন ট্রাম্প।
জেলেনস্কি বিরল মৃত্তিকা খনিজ চুক্তির জন্য আলোচনার টেবিলে ফিরে আসবেন কিনা জানতে চাইলে ট্রাম্প ইতিবাচক সাড়া দেন। তিনি বলেন, "হ্যাঁ, আমি তাই মনে করি। আমার মনে হয় এটা ঘটবে।" ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, তিনি ক্ষমতায় থাকলে এই যুদ্ধ হত না। তিনি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পরিস্থিতি সামলানোর পদ্ধতি নিয়েও সমালোচনা করেন এবং বলেন তার নীতির কারণে রাশিয়া আরও শক্তিশালী হয়েছে এবং বর্তমান সংকট তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, "দেখুন, আমি যদি (তখন) প্রেসিডেন্ট থাকতাম, তাহলে এটা কখনোই ঘটত না। রাশিয়া ইউক্রেনে যেত না"
তিনি আরও বলেন যে ৭ই অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল আক্রমণ এবং আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারও বাইডেনের নীতির ফল।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ট্রাম্প বাইডেনের নীতির সমালোচনা করেন, বিশেষ করে মুদ্রাস্ফীতি এবং জ্বালানির দামের ওপর এর প্রভাব নিয়ে। তিনি বলেন তার নিজের প্রশাসনের নীতি রেকর্ড-নিম্ন মুদ্রাস্ফীতি এবং জ্বালানির দাম অর্জন করেছিল। তাঁর কথায় , "বাইডেনের অধীনে আমাদের রেকর্ড-ভাঙা মুদ্রাস্ফীতি ছিল। এটা ছিল একটি অঘটন। এটি ছিল আমার নির্বাচনে জেতার অন্যতম কারণ।" শুল্ক নিয়ে আলোচনার সময় তিনি এই উদ্বেগকে উড়িয়ে দেন যে এটি মুদ্রাস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে, পরিবর্তে সাম্প্রতিক সুদের হার হ্রাসের দিকে ইঙ্গিত করেন। সুদের হার গত তিন-চার দিনে ভালো পর্যায়ে নেমে এসেছে... আমি কী কমাতে চেষ্টা করছিলাম? জ্বালানি। জ্বালানির দাম কমছে। তারা আমার জ্বালানি নষ্ট করেছে। আমার কাছে সবচেয়ে বেশি জ্বালানি ছিল, এবং তারা তা নষ্ট করেছে।"
রাশিয়ার ওপর তার অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে ট্রাম্প ইউক্রেন সংঘাতে রাশিয়ার পক্ষ নেওয়ার সমালোচনা প্রতিরোধ করেন। তিনি বলেন রাশিয়ার ওপর তিনি অন্য যেকোনো প্রেসিডেন্টের চেয়ে কঠোর ছিলেন, তিনি রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং নর্ড স্ট্রিম ২ পাইপলাইন বন্ধ করার প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন। "কেউ কখনো... পুতিনই প্রথম বলবেন। ট্রাম্পের চেয়ে কঠোর কেউ ছিল না," তিনি রাশিয়ার ওপর তার নিষেধাজ্ঞা এবং নর্ড স্ট্রিম ২ পাইপলাইন বন্ধ করার প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে বলেন। "আমি এটা বন্ধ করেছিলাম। বাইডেন ক্ষমতায় এসে দ্বিতীয় দিনেই এটা অনুমোদন করেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে কঠোর কেউ রাশিয়ার ওপর ছিল না। কেউ না। এবং তারা এটা জানে," ট্রাম্প বলেন।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।